চাষের জমিতে পুকুর, বিপাকে শতাধিক কৃষক

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ী ইউনিয়নের কিসামত খুটামারা গ্রামে সরকারের অনুমতি ছাড়াই প্রায় ২২ বিঘা জমিতে পুকুর খনন করছেন স্থানীয় এক বাসিন্দা। এতে বিপাকে পড়েছেন শতাধিক কৃষক।
ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ী ইউনিয়নের কিসামত খুটামারা গ্রামে সরকারের অনুমতি ছাড়াই প্রায় ২২ বিঘা জমিতে পুকুর খনন করছেন স্থানীয় এক বাসিন্দা। এতে বিপাকে পড়েছেন শতাধিক কৃষক।

তাদের আশঙ্কা, পুকুরটি খনন শেষ হলে সেখানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। এতে তাদের জমিতে ফসল ফলানো অনিশ্চিত হবে।

স্থানীয়রা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গত ফেব্রুয়ারি থেকে স্থানীয় বাসিন্দা মজিদুল ইসলাম তার ২২ বিঘা জমিতে পুকুর খনন শুরু করেন। এখনো খননকাজ চলছে। পুকুর খননের মাটি চলে যাচ্ছে ইটভাটায়।

প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েকটি ট্রাকে এসব মাটি পরিবহন করা হচ্ছে। এ কারণে ৪টি কালভার্টসহ গ্রামের রাস্তাটি ভেঙে গেছে।

ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

তাদের আশঙ্কা, পুকুর খননের কারণে পানি নিষ্কাশনে জটিলতা দেখা দিবে। জলাবদ্ধতা তৈরি হবে ৩ শতাধিক বিঘা জমিতে। সেসব জমিতে ফসল ফলানো অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

কৃষক সালামত আলী (৫৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পুকুর খননের কারণে জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। ফসল উৎপাদন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। যিনি পুকুর খনন করছেন তিনি প্রভাবশালী হওয়ায় আমরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারছি না।'

কৃষক মোজাম্মেল হক (৫৭) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পুকুর খনন শেষ হলে জমিতে আর ফসল ফলানো সম্ভব হবে না। পানি নিষ্কাশনের পথ থাকবে না। জলাবদ্ধতায় খেতের ফসল নষ্ট হবে।

'এক সময় আমরাও বাধ্য হবো আমাদের আবাদি জমিকে পুকুর রূপান্তরিত করতে,' যোগ করেন তিনি।

কৃষক জফুর আলীর (৫৬) অভিযোগ, 'এক ব্যক্তি প্রভাব খাটিয়ে তার জমিতে পুকুর খনন করছেন। পুকুরের মাটি বিক্রি করছেন ইটভাটায়। পুকুর খনন করার মধ্য দিয়ে আমাদের জমিগুলো সস্তায় কেনার পরিকল্পনা করছেন।'

ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

পুকুরের মালিক মজিদুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নিজের জমিতে পুকুর খনন করছি এতে অনুমতির কোনো প্রয়োজন নেই। মাছ চাষ করে লাভবান হতে চাই। তাই পুকুর খনন করছি।'

তিনি আরও বলেন, 'এখানে যাতে জলাবদ্ধতা না হয় সেজন্য পুকুরের চারপাশে ক্যানেল খুঁড়ে দিব।'

আবাদি জমিতে পুকুর খননের মাধ্যমে কৃষকদের জমি সস্তায় কেনার পরিকল্পনার অভিযোগ অস্বীকার করেন মজিদুল ইসলাম।

আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জি আর সারওয়ার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আবাদি জমিতে কোনভাবেই কেউ পুকুর খনন করতে পারবেন না। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English
Overview of Rooppur Nuclear Power Plant Bangladesh

Rooppur Nuclear Power Plant: First unit to start production in December

Project deadline extended by 2 years, but authorities hope to complete grid line work before scheduled commissioning

10h ago