ব্রহ্মপুত্রের বেশিরভাগ চর এখনো পানির নিচে

পানির নিচে ডুবে থাকা ‘পোড়ার চর’। ছবি: স্টার

কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার ব্রহ্মপুত্র নদসহ সব নদ-নদীর পানি এখন বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নামতে শুরু করেছে অধিকাংশ বন্যা উপদ্রুত এলাকা থেকে। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে অনেক মানুষ। তবে ব্রহ্মপুত্রের বুকে জেগে ওঠা ২০০ চরের বেশিরভাগ এখনো পানির নিচে থেকে গেছে।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের 'পোড়ার চর' এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এই চরে বসবাসরত ৮৫টি পরিবারের সাড়ে চার শ'র বেশি মানুষ এখনো পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। তাদের প্রত্যেকের বসতবাড়ি ডুবে আছে ৩ থেকে ৫ ফুট পানির নিচে। নৌকার ওপর চলছে তাদের সংসার। সরকারি ও বেসরকারি ত্রাণ সহায়তার ওপর কোনোভাবে চলছে জীবন।

কথা হয় এই চরের বাসিন্দা সাজেদা বেগমের (৬০) সঙ্গে। জানান, পুত্রবধূ বিলকিস (২৮) বেগমসহ ২ নাতনিকে নিয়ে গত ১০ দিন ধরে নৌকার ওপরেই আছেন তিনি। তাদের ঘর এখনো গলা পর্যন্ত পানিতে ডুবে আছে।

সাজেদা বলেন, 'ঘরের বেড়া, দরজা, আসবাবপত্র সব ভেসে গেছে বন্যার পানিতে। পানি নামার পর কীভাবে ঘর মেরামত করব জানিনা।'

সাজেদা বেগমের পুত্রবধূ বিলকিস বেগম জানান, তার শ্বশুর ও স্বামী  ব্রহ্মপুত্র নদে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। বন্যার কারণে মাছ ধরা বন্ধ আছে। কারণ, মাছ ধরার নৌকাই এখন তাদের অস্থায়ী নিবাস। নৌকার ওপরে পলিথিনের ছাউনি করে তার ভেতরেই বাস করছেন তারা।

বিলকিস বলেন, 'যে ত্রাণ সহায়তা পাচ্ছি, তা দিয়েই কোনোভাবে বেঁচে আছি।'

চর ভগবতিপুরের আরেক বানভাসি সাবের আলীর (৬৪) অবস্থাও একই রকম। তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরাও বাস করছেন নৌকার ওপর।

সাবের আলী জানান, এই চরে বসবাসরত ১২০টি পরিবারের সবার অবস্থা কমবেশি একইরকম।

যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুরের ধারণা, কয়েক দিনের মধ্যে চরগুলো থেকে বন্যার পানি নেমে যাবে। তার দাবি, চরাঞ্চলে আটকে পড়া মানুষ যথেষ্ট পরিমাণে ত্রাণ সহায়তা পাচ্ছেন। তিনি বলেন, 'চরের বাসিন্দারা আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চান না। এমন পরিস্থিতিতে তার নৌকার ওপরেই থাকতে অভ্যস্ত।'

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শুক্রবার বিকেল থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কুড়িগ্রামের চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আপাতত পানি বৃদ্ধির কোনো আশঙ্কা নেই।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Soybean oil prices hiked by Tk 14 per litre

Branded bottled soybean oil will be Tk 189 a litre and non-branded loose Tk 169

1h ago