তিস্তার পানি কমে বিপৎসীমার ১০ সেমি নিচে, কমেনি দুর্ভোগ

পাহাড়ি ঢলের পানি আসা বন্ধ হওয়ায় লালমনিরহাটে কমেছে তিস্তা নদীর পানি। তবে এখনো কিছু এলাকায় পানি জমে থাকায় মানুষের দুর্ভোগ এখনো কমেনি।
তিস্তা
লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তাপাড় খুনিয়াগাছ এলাকায় বাড়ি-ঘর থেকে বন্যার পানি নেমে গেলে রাস্তাঘাট এখনো পানির নিচে তলিয়ে আছে। ২ আগস্ট ২০২২। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

পাহাড়ি ঢলের পানি আসা বন্ধ হওয়ায় লালমনিরহাটে কমেছে তিস্তা নদীর পানি। তবে এখনো কিছু এলাকায় পানি জমে থাকায় মানুষের দুর্ভোগ এখনো কমেনি।

আজ বুধবার সকাল ৬টা থেকে তিস্তার পানি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানী এলাকায় তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, 'দীর্ঘদিন যাবৎ তিস্তার বুকে পলি জমায় পানি সামান্য বাড়লেই তা নদী তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত করে।'

তিস্তা
ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অধিকাংশ বন্যাদুর্গত এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে। এখনো কিছু এলাকায় বন্যার পানি আছে। তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেলে তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।'

'তিস্তার চর-নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে পানিবন্দি মানুষের খোঁজখবর রাখা হয়েছিল এবং তাদের পাশে দাঁড়ানো হয়েছিল,' যোগ করেন তিনি।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের শেখপাড়া গ্রামের কৃষক নুর জামাল (৫০) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘর থেকে পানি নেমে গেছে। রাস্তাগুলো এখনো পানিতে তলিয়ে আছে। চলাফেরায় কষ্ট হচ্ছে। তিস্তায় পানি বাড়লে আমাদের দুর্ভোগও বেড়ে যায়।'

আদিতমারী উপজেলার গোবর্ধান এলাকার পানিবন্দি আফছার আলী (৫৮) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল মঙ্গলবার বিকালে ঘরে এক কোমর পানি ছিল। আজ সকালে ঘরের ভেতর থেকে পানি নেমে গেছে। উঠানে এখনো পানি আছে।'

'নদীপাড়ের জমিতে রোপা আমনের চারাগুলো এখনো পানিতে তলিয়ে আছে' উল্লেখ করে তিনি আশঙ্কা করে বলেন, 'আবারো তিস্তায় পানি বাড়তে পারে।'

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার গতিয়াশ্যাম এলাকার কৃষক সেহের আলী (৬৩) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আকস্মিক তিস্তায় পানি বেড়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছি। গতকাল সকালে ঘর ছেড়ে সরকারি রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছিলাম। আজ সকালে বাড়ি থেকে পানি নেমে যাওয়ায় বাড়িতে উঠেছি।'

তিনি আরও বলেন, 'তিস্তায় পানি বাড়লে আমাদেরকে ঘর ছাড়তে হয়। আসবাবপত্র, গবাদি পশু ও ফসলের ক্ষতি হয়,'

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের হাতে পর্যাপ্ত খাদ্য ও অর্থ সহায়তা মজুদ আছে। কোনো এলাকায় ত্রাণ সহায়তার প্রয়োজন হলে তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে তা পৌঁছে দেওয়া হবে।'

Comments