রৌমারী-চর রাজিবপুর উপজেলা

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে বালু উত্তোলন

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার যাদুর চর ইউনিয়নের ধনার চর এলাকায় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া ড্রেজার মেশিন দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে বালু তোলা হচ্ছে। ছবি: এস দিলীপ রায়/ স্টার

কুড়িগ্রামের রৌমারী ও চর রাজিবপুর উপজেলায় বেশ কয়েকটি স্থানে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ব্রহ্মপুত্র নদ, সোনাভরি, জিনজিরাম ও ধরণী নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এ কারণে ভাঙছে নদীর তীর আর বিলীন হয়ে যাচ্ছে আবাদি জমি ও বসতভিটাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। তাদের লিখিত অভিযোগেও সুফল মিলেনি।

তাদের আরও অভিযোগ, বালু উত্তোলনকারীরা সরকার দলীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হওয়ায় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, দুই উপজেলায় শতাধিক স্থানে পাঁচ শ'র বেশি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল ইমরান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রশাসনিক কাজের চাপ থাকায় সব সময় অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না। নদ-নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয় এবং ড্রেজার মেশিন নষ্ট করে দেওয়া হয়। কিন্তু, অভিযানের পর চক্রটি আবার বালু উত্তোলন শুরু করে।'

চর রাজিবপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নবীরুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অভিযান চালিয়েও বালু উত্তোলনকারীদের থামানো যাচ্ছে না। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এ জন্য স্থানীয় লোকজন ও রাজনৈতিক নেতাদের সদিচ্ছা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।'

চর রাজিবপুর উপজেলার সবুজবাগ এলাকার হবিবর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদ-নদী থেকে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। দিন-রাত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও সুফল পাইনি।'

'অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে এলাকায় ভাঙন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে' বলে যোগ করেন তিনি।

চর রাজিবপুর উপজেলায় ড্রেজার মেশিনের মালিক মিজানুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মাঝে মধ্যে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করি। তবে, নদীর মাঝখান থেকে বালু উত্তোলন করি।'

রৌমারী উপজেলার ড্রেজার মেশিনের মালিক, উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সুরুজ্জামাল মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বালু ছাড়া উন্নয়ন কাজ সম্ভব নয়। নদ-নদী থেকে বালু তুলে উন্নয়ন কাজের জন্য বিক্রি করি। যাতে কোনো প্রকার ভাঙন না হয় সেজন্য নদীর মাঝখান থেকে বালু নিই।'

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নদ-নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করায় তা ভাঙনের সৃষ্টি করে থাকে। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়ে থাকে। স্থানীয় প্রশাসনই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।'

Comments

The Daily Star  | English

Trump gives Mexico 90-day tariff reprieve as deadline for higher duties looms

Approximately 85% of Mexican exports comply with the rules of origin outlined in the USMCA

35m ago