প্রতি তিনটির মধ্যে একটি গাছের প্রজাতি বিলুপ্তির মুখে

প্রকৃতিতে কমপক্ষে এক তৃতীয়াংশ গাছের প্রজাতি বিলুপ্তির মুখে বলে নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে। সুপরিচিত ওক ও ম্যাগনোলিয়া থেকে শুরু করে গ্রীষ্মমন্ডলীয় বিভিন্ন গাছ এ তালিকায় আছে।
বিশেষজ্ঞদের বরাতে বিবিসি জানায়, সাড়ে ১৭ হাজারের মতো গাছের প্রজাতি বর্তমানে ঝুঁকির মুখে আছে, যা হুমকির মুখে থাকা স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি, উভচর ও সরীসৃপ প্রজাতির মোট সংখ্যার দ্বিগুণ।
জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবিলা, বন নিধন ও গাছ কাটার বিরুদ্ধে পরিবেশ সংরক্ষণ গোষ্ঠীগুলো দ্রুত জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
লন্ডনের কিউতে বোটানিক গার্ডেন কনজারভেশন ইন্টারন্যাশনালের কর্মকর্তা ডা. মালিন রিভার্স বলেন, 'বিশ্বে প্রায় ৬০ হাজার গাছের প্রজাতি আছে এবং প্রথমবারের মতো আমরা এখন জানি যে এই প্রজাতির মধ্যে কোনটি সংরক্ষণের প্রয়োজন, তাদের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি কী এবং তারা কোথায় আছে।'
স্টেট অফ দ্য ওয়ার্ল্ডস ট্রিস রিপোর্টে দেখা গেছে, ৬০ হাজার প্রজাতির গাছের অন্তত ৩০ ভাগ বিলুপ্তির মুখে। এর মধ্যে প্রায় ১৪২টি প্রজাতি ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। অন্যদিকে ৪৪২টি প্রজাতি বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। এসব প্রজাতির গাছের সংখ্যা ৫০টিরও কম।
জলবায়ু পরিবর্তন, চরম আবহাওয়া ও সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি গাছের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি উল্লেখ করে গবেষকরা জানান, সংরক্ষণের প্রচেষ্টাই এখন ভবিষ্যতের জন্য একমাত্র আশা।
তারা যেসব বন টিকে আছে সেগুলো সংরক্ষণের পাশাপাশি এর আয়তন বাড়ানোর দিকে জোর দিয়েছেন। সম্প্রতি একটি সংরক্ষিত এলাকায় মোট প্রজাতির ৬৪ শতাংশ গাছ পাওয়া গেছে।
গবেষকরা উদ্যান ও বীজ ভান্ডার তৈরিতেও গুরুত্ব দিয়েছেন। এতে করে আবারো হারিয়ে যাওয়া গাছ ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে আশা করেন তারা।
এ ছাড়া বনায়ন বিষয়ক বৈজ্ঞানিক তথ্য প্রচারের দিকেও জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত ৩০০ বছরে পৃথিবীর মোট বনের ৪০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ২৯টি দেশ তাদের বনের ৯০ শতাংশ হারিয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রধান সাতটি পণ্য তৈরিতে বিশ্বের অর্ধেকের বেশি বন উজাড় হয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর দ্য কনজারভেশন অব নেচারের গ্লোবাল ট্রি স্পেশালিস্ট গ্রুপের কো-চেয়ার সারা ওল্ডফিল্ড বলেন, 'একটি সুস্থ পৃথিবীর জন্য, গাছের বৈচিত্র্য প্রয়োজন। প্রতিটি গাছের প্রজাতির অনন্য পরিবেশগত ভূমিকা রয়েছে। বিশ্বের ৩০ ভাগ গাছের প্রজাতি বিলুপ্তির হুমকির মধ্যে রয়েছে, অবিলম্বে এগুলো সংরক্ষণ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।'
Comments