ভুক্তভোগী গ্যাসের প্রিপেইড মিটারের গ্রাহক

গ্যাস থাকবে না ঢাকার যেসব এলাকায়

গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে আবাসিক খাতে সবচেয়ে কম মূল্যবৃদ্ধি হলেও ভুক্তভোগী হচ্ছেন প্রিপেইড মিটারের গ্রাহকরা।

আজ রোববার সব পর্যায়ের গ্রাহকদের জন্য গড়ে ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন এক সংবাদ সম্মেলনে গ্যাসের নতুন দাম ঘোষণা করে।

আবাসিক খাতে ১ চুলার গ্যাসের দাম প্রতি মাসে ৯২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৯০ টাকা এবং ২ চুলার ৯৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৮০ টাকা করা হয়েছে। চলতি মাসের বিল দেওয়ার সময় নতুন মূল্য তালিকায় বিল দিতে হবে, যা আগের চেয়ে যথাক্রমে ৭ দশমিক ০৩ শতাংশ ও ১০ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেশি।

অন্যদিকে, গৃহস্থালিতে যারা প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করেন, তাদের প্রতি ঘনমিটার গ্যাসে ১২ দশমিক ৬০ টাকা দিতে হলেও এখন দিতে হবে ১৮ টাকা, যা ৪২ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেশি।

গৃহস্থালী পর্যায়ে যারা প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করেন না, তারা মাসে কী পরিমাণ গ্যাস ব্যবহার করেন, তার কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য কোনো সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে নেই। ফলে গ্রাহকরা গড়ে ৭৭ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করেন, এমনটা ধরে নিয়ে ২০১৯ সালে ১ চুলার গ্যাসের জন্য ৯২৫ টাকা ও ২ চুলার জন্য ৯৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

কিন্তু পরে প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন জরিপে দেখা যায়, যারা প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করেন, তারা মাসিক মাত্র ৪০-৪৫ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করেন। এতে করে তাদের মাসিক খরচ পড়ে ৪০০-৫০০ টাকা।

বিলের এই তারতম্য দেখিয়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে গ্যাস চুরির অভিযোগ তোলে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন। তারা কোন হিসাবে ৭৭ ঘনমিটারের হিসাবে আবাসিক খাতে বিল তৈরি করে, তার জবাব চান কেউ কেউ। 

বিইআরসি গত মার্চ মাসে যে গণশুনানি করে, সেখানেও প্রসঙ্গটি নিয়ে আলোচনা করা হয়।

কিন্তু আজ বিইআরসির দাম ঘোষণায় জানা গেল, প্রিপেইড গ্রাহকদের গ্যাসের দাম প্রিপেইডবিহীন গ্রাহকদের চেয়ে বেশি বেড়েছে। 

এক প্রশ্নের জবাবে বিইআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবু ফারুক বলেন, 'প্রিপেইড মিটারের গ্রাহকরা সাধারণত ৪০-৪৫ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করেন। আর যাদের প্রিপেইড মিটার নেই, তারা কী পরিমাণ গ্যাস ব্যবহার করেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই।' 

তিনি বলেন, 'আমরা চাই গ্যাস চুরি কমাতে। আমাদের এ সংক্রান্ত কিছু সুপারিশ পূর্ণাঙ্গ আদেশে থাকবে। এবার আমরা প্রিপেইডবিহীন গ্রাহকদের গড় ব্যবহারের হার ৭৭ থেকে কমিয়ে ৬০ ঘনমিটার হিসেব করেছি।'

যারা প্রিপেইড মিটারে সচেতনভাবে গ্যাস ব্যবহার করেন, এ সিদ্ধান্ত তাদের প্রতি মানবিক হলো কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বিইআরসি সদস্য মকবুল ই ইলাহী চৌধুরী বলেন, 'যারা আবাসিক প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করেন না, আমরা যদি তাদের বিল প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারীদের সমান করতে পারতাম (৪০-৫০ ঘনমিটারে নামিয়ে আনতে পারতাম), তবে আমরা বুক ফুলিয়ে চলতে পারতাম। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। সেটা একবারে সম্ভব হয়নি, ধাপে ধাপে কমিয়ে আনা হবে।'

বিইআরসির পক্ষ থেকে প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারীদের যত দ্রুত সম্ভব তাদের কার্ড 'আপডেট' করতে বলা হয়েছে।

মকবুল ই ইলাহী বলেন, 'প্রিপেইড মিটারের ক্ষেত্রে নতুন দাম আজ থেকেই কার্যকর হবে। কিন্তু পরবর্তী রিচার্জ থেকে তাদের টাকা সমন্বয় করা হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Tk 2,956 crore earmarked for Election Commission

Of this amount, Tk 2,727 crore has been allocated as revenue budget, while Tk 229 crore was allocated as development budget

1h ago