২ দিন দুর্ভোগের পর রাজশাহী বিভাগের ৪ জেলায় গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক
দুই দিন ভোগান্তির পর আজ বৃহস্পতিবার থেকে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। এর আগে পাইপলাইনের সংস্কার কাজের জন্য রাজশাহী বিভাগের ৪ জেলায় ঈদুল ফিতরের রাত থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকে।
এতে দুর্ভোগের শিকার হন রাজশাহী বিভাগের ৪ জেলার প্রায় ১ লাখ ২৮ হাজার আবাসিক গ্রাহক।
পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন ডিভিশন) শৈলজা নন্দ বসাক দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, 'ঈদের সময় ছুটি থাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় উৎপাদনের উপর প্রভাব না ফেলে সাময়িক সময় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখে সংস্কার কাজ করা হয়েছে।'
এদিকে মাত্র দেড় দিন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকলেও এর সুযোগ নিয়ে গত কয়েকদিন কেরোসিন তেল ও সিলিন্ডার গ্যাস অতিরিক্ত দামে বিক্রি হয়েছে।
পাবনা শহরের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন আসায় রান্নার জন্য কেরোসিনের চুলা কিনে এনেছি। তবে চুলার জন্য তেল কিনতে গিয়ে বিপদেই পড়েছি।'
তিনি জানান, গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হওয়ার আগে ৭০ টাকা লিটার মূল্যে কেরোসিন তেল কিনলেও, ঈদের পরদিন বুধবার তেলের দাম আকস্মিকভাবে বাড়িয়ে ৯০ টাকা করে দেওয়া হয়।
স্থানীয় কলেজ শিক্ষক শহিদুর রহমান জানান, কেরোসিন তেল দিয়ে বাড়ির সব রান্নার কাজ সারতে গত ২ দিনে তাকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে।\
পাবনা শহরের দিলালপুর এলাকার বাসিন্দা জিয়াউল জালাল ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করলেও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকার কারণে ঈদের আগের রাতে ১ হাজার ৩৫০ টাকার সিলিন্ডার কিনেছেন ১ হাজার ৬০০ টাকা দিয়ে।
পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানির (পিজিসিএল) কর্মকর্তারা জানান, এলেঙ্গা-যমুনা (বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্ত) গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইনের হুক-আপ কাজ ঈদুল ফিতরের রাত থেকে শুরু হয়। এজন্য গত সোমবার রাত ১০টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার জন্য পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানির গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তবে ৪৮ ঘণ্টার আগেই প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ শেষ হওয়ায় বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়েছে।
পিজিসিএল সূত্রে জানা যায়, কোম্পানির অধীনে রাজশাহী সিটি করপোরেশন, সিরাজগঞ্জ জেলার সিরাজগঞ্জ সদর, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর উপজেলা, বগুড়া জেলার বগুড়া সদর উপজেলা, শাজাহানপুর উপজেলা এবং পাবনা জেলার পাবনা সদর, বেড়া, সাঁথিয়া এবং ঈশ্বরদী উপজেলার মোট ১ লাখ ২৯ হাজার ৩৯৫টি গ্রাহক আছে।
এর মধ্যে ১০টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ৩০টি সিএনজি স্টেশন, ১২৯টি শিল্প কারখানা, ৩৩২টি বাণিজ্যিক সংযোগ এবং সর্বাধিক ১ লাখ ২৮ হাজার ৮৪৬টি আবাসিক গ্রাহক আছে।
গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করার আগে পিজিসিএল এর পক্ষ থেকে ঐসব এলাকায় মাইকিং করে গ্রাহকদের সচেতন করা হয়েছে বলে জানান পশ্চিমাঞ্চল গ্যাসের কর্মকর্তারা।
Comments