রাস পূর্ণিমায় সুন্দরবন যেতে ৫টি রুট নির্ধারণ

সুন্দরবনের দুবলারচরে ঐতিহ্যবাহী রাস পূর্ণিমায় তীর্থযাত্রীদের নিরাপদ যাতায়াতে ৫টি নৌরুট নির্ধারণ করেছে বন বিভাগ। এবারের রাস পূজা উপলক্ষে ১৭ থেকে ১৯ নভেম্বর এই ৩ দিন দেশি-বিদেশি পর্যটকদের সুন্দরবনে প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে।
স্টার ফাইল ফটো

সুন্দরবনের দুবলারচরে ঐতিহ্যবাহী রাস পূর্ণিমায় তীর্থযাত্রীদের নিরাপদ যাতায়াতে ৫টি নৌরুট নির্ধারণ করেছে বন বিভাগ। এবারের রাস পূজা উপলক্ষে ১৭ থেকে ১৯ নভেম্বর এই ৩ দিন দেশি-বিদেশি পর্যটকদের সুন্দরবনে প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে।

আগামী ১৭ নভেম্বর ভোর থেকে বন বিভাগসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারায় পুণ্যার্থীরা নির্ধারিত রাজস্ব দিয়ে বৈধ পাশ পারমিট নিয়ে সেখানে যেতে পারবেন।

বঙ্গোপসাগর মোহনায় দুবলার চরের আলোরকোলে আগামী ১৮ নভেম্বর রাতে রাস পূজা ও ১৯ নভেম্বর ভোরে সমুদ্রের জোয়ারের পানিতে রাস পূর্ণিমা পুণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হবে।

বন বিভাগের অনুমোদিত পাঁচটি রুট হলো- বুড়িগোয়ালিনী, কোবাদক থেকে বাটুলানদী-বলনদী-পাটকোষ্টা খাল হয়ে হংসরাজ নদী হয়ে দুবলারচর। কয়রা, কাশিয়াবাদ, খাসিটানা, বজবজা হয়ে আড়ুয়া শিবসা অতঃপর শিবসা নদী-মরজাত হয়ে দুবলার চর। নলিয়ান স্টেশন হয়ে শিবসা-মরজাত নদী হয়ে দুবলার চর। ঢাংমারী অথবা চাঁদপাই স্টেশন-তিনকোনা দ্বীপ হয়ে দুবলার চর এবং বগী-বলেশ্বর-সুপতি স্টেশন-কচিখালী-শেলার চর হয়ে দুবলার চর।

খুলনা আঞ্চলিক বন সংরক্ষক মিহির কুমার দ্যা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাস পূর্ণিমা পুণ্যস্নানে যেতে সনাতন ধর্মীরা নির্ধারিত রুটের পছন্দ মতো একটিমাত্র পথ ব্যবহারের সুযোগ পাবেন এবং দিনে চলাচল করতে পারবেন। করোনা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। এ ছাড়া, সরকারের পক্ষ থেকেও পূজায় পুণ্যার্থীদের বাইরে কাউকে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।'

'যেখানে রাসমেলা হয়, সেটি একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল। মেলা উপলক্ষে হাজারো মানুষ সেখানে যাওয়ায় একদিকে যেমন বন্য প্রাণীর ক্ষতি হয়। এতে জীববৈচিত্র্যও হুমকির মুখে পড়ে। এ কারণে বন, বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার স্বার্থে দুবলার চরে রাস উৎসব বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে,' যোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, 'যেহেতু মানুষ সেখানে শুধু পূজা ও স্নান করতে যান। এ কারণে ওই সময় শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরাই সেখানে যাওয়ার অনুমতি পাবেন। অন্য সম্প্রদায়ের লোকদের সেখানে গিয়ে বনের পরিবেশ নষ্ট করতে দেওয়া হবে না।'

তিনি জানান, সুন্দরবন বিভাগের চেকিং পয়েন্ট ছাড়া অন্য কোথাও পুর্ণার্থীদের নৌকা, লঞ্চ বা ট্রলার নোঙ্গর করতে পারবে না। প্রতিটি নৌকা, লঞ্চ বা ট্রলারে রং দিয়ে বিএলসি অথবা সিরিয়াল নম্বর লিখতে হবে। সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতিপত্র (পাশ) ও জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পূর্ণিমা পুণ্যস্নানে কেবল ৩ দিনের জন্য সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনুমতি দেওয়া হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং মাস্কবিহীন কোনো তীর্থযাত্রীকে পুণ্যস্নানস্থলে যেতে দেওয়া হবে না। অনুষ্ঠান স্থলে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী হ্যান্ডস্যানিটাইজার ও হ্যান্ডওয়াশ রাখা হবে।

পরিবেশ দূষণ করে এমন সব বস্তু, শব্দ যন্ত্র বাজানো, পটকা ও বাজি ফোটানো, বিস্ফোরক দ্রব্য, দেশীয় যে কোনো অস্ত্র এবং আগ্নেয়াস্ত্র বহন করা যাবে না। প্রতিটি নৌকা, লঞ্চ বা ট্রলারকে দুবলার চরে আলোনকোলে এসে কন্ট্রোল রুমে বাধ্যতামূলক রিপোর্ট করতে হবে বলেও জানান এই বন কর্মকর্তা।

Comments

The Daily Star  | English
IMF suggestions for Bangladesh

IMF suggests raising power, gas and fertiliser prices

The International Monetary Fund yesterday recommended reducing government subsidies by hiking prices of power, gas and fertiliser, and spending the saved money on society safety net programmes.

15h ago