অস্ট্রেলিয়ার ভিসা পাওয়ার সহজ উপায়

ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

দেশের ও প্রবাসের গণমাধ্যমে মাঝে মধ্যেই অস্ট্রেলিয়ার ভিসা কেলেঙ্কারি এবং প্রতারণার সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। দীর্ঘ দিন ধরে একটি অসাধু চক্র অস্ট্রেলিয়ার ভিসা জাল করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।

এমন একটি চক্রের ২ সদস্য সম্প্রতি বাংলাদেশের সিআইডির হাতে আটক হলে বেড়িয়ে এসেছে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য।

গত ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকার মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেছিলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে জাল ভিসা তৈরি করে বাংলাদেশের নিরীহ মানুষদের অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর কথা বলে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী উম্মে ফাতেমা রোজী।'

সিআইডি জানায়, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান ওই নারীকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া তারা খুব দ্রুতই শুরু করবেন।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এমএবিএম খায়রুল ইসলাম সপরিবারে অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার জন্যে উম্মে ফাতেমা রোজীর কাছে ৭৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকা দিয়ে প্রতারণার শিকার হন। এরপর তিনি অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী ওই নারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সবারই জানা জরুরি যে টাকা দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা পাওয়ার সামান্যতম সুযোগও নেই। কোনো প্রভাব খাটিয়ে বা কৌশল করে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা দেওয়ার ক্ষমতা কারো নেই। অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক হলেও কেউ কারো ভিসা দেওয়ার নিশ্চয়তা দিতে পারেন না। এমনকি, নিজের মা-বাবা, ভাই-বোন কিংবা ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজনের ভিসার ব্যাপারেও কারো হস্তক্ষেপ করার আইনগত সুযোগ নেই।

কেবলমাত্র অস্ট্রেলিয়া সরকারের নিবন্ধিত আইনজীবীরাই এ ব্যাপারে পরামর্শ দিতে পারেন। তবে কখনোই তারা পরামর্শের বাইরে গিয়ে ভিসার নিশ্চয়তা দিয়ে কারো কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিতে পারবেন না।

অস্ট্রেলিয়ার ভিসাসংক্রান্ত কোনো বিষয়ে অভিবাসন আইনজীবীসহ নির্দিষ্ট কয়েকজন ছাড়া কোনো পরামর্শ, সহযোগিতা ও প্রতিনিধিত্ব করা অবৈধ।

ভিসা সংক্রান্ত মিথ্যা প্রলোভন দেখানো বড় অপরাধ। এই অপরাধে গত কয়েক বছরে কয়েকটি অভিবাসন এজেন্টের লাইসেন্স বাতিলসহ বিভিন্ন মেয়াদের সাজা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন বাংলাদেশি আইনজীবীও আছেন।

অভিবাসনবিষয়ক এই আইনজীবীদের অসততার বিবরণ অস্ট্রেলিয়া ইমিগ্রেশনের সরকারি ওয়েবসাইটে দেওয়া রয়েছে।

অভিবাসীবান্ধব দেশগুলোর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া অন্যতম। এ জন্যই এ দেশের ভিসা পদ্ধতি খুব সহজ ও স্বচ্ছ করা হয়েছে। কারো পরামর্শ-সহযোগিতা ছাড়াই সাধারণ মানুষরাও যেন ভিসার আবেদন নিজেই করতে পারেন সে জন্যে সশরীরে উপস্থিতির কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। কেবলমাত্র ইমিগ্রেশনের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজের নামে একটি 'ইমিঅ্যাকাউন্ট' খুলতে হবে। আবেদনের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করলেই ভিসার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়।

নিজের একাউন্ট থেকেই নিয়মিত ভিসার অগ্রগতির ব্যাপারে পর্যবেক্ষণ করা যাবে। এর জন্য কোনো মধ্যস্থতাকারীর প্রয়োজন নেই।

অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্যে অস্ট্রেলিয়ার দরজা খোলা। ভ্রমণ, শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা, মানবিক ও শরণার্থীসহ প্রায় ৭০ রকমের ভিসার ব্যবস্থা আছে অস্ট্রেলিয়ায়।

২০১৯-২০ অর্থবছরে ১ লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি অভিবাসীর ভিসা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন বিভাগ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে স্টুডেন্ট ভিসার জন্যে আবেদন জমা পড়েছিল ৪ লাখ ৭৩ হাজারেরও বেশি। একই সময়ে কেবল মানবিক কারণে প্রায় ১৯ হাজার মানুষকে স্থায়ী অভিবাসনের ভিসা দেয় সে দেশের সরকার।

অস্ট্রেলিয়ার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশই নতুন অভিবাসী।

অস্ট্রেলিয়া ইমিগ্রেশনের ওয়েবসাইট দেখে নিতে পারেন (https://immi.homeaffairs.gov.au/)

আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

1h ago