আফগান নারী ফুটবলারদের আশ্রয় দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চাশ আফগান নারী ফুটবলার, তাদের পরিবার ও ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার একটি বিশেষ জরুরি উড়োজাহাজ গতকাল মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছেছে।

গ্লোবাল ফুটবলার অ্যাসোসিয়েশন 'ফিফপ্রো' আফগানিস্তানের নারী ফুটবলারসহ ফুটবলে জড়িত ব্যক্তি ও সম্ভব হলে তাদের পরিবারকেও দেশটি থেকে সরিয়ে নিতে অস্ট্রেলিয়া সরকারকে অনুরোধ করেছিল।

তালেবান আবার ক্ষমতা দখলের পর কেউই দেশটির বিশৃঙ্খল রাজনৈতিক পরিবেশে নিরাপদ বোধ করছেন না। সেখান থেকে দেশগুলো দ্রুত নিজেদের নাগরিক সরিয়ে নিচ্ছে। দেশ পালানো আফগানদেরও আশ্রয় দিচ্ছে অনেক দেশ।

গত ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুল তালেবানের নিয়ন্ত্রণে আসার পর অস্ট্রেলিয়া তাদের দূতাবাস থেকে নিজেদের নাগরিক ও তাদের প্রাক্তন কর্মীদের সরিয়ে নিয়েছে। ইতোমধ্যেই দেশ পালানো তিন হাজার আফগানকে আশ্রয় দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার।

তালেবানদের কাবুল নিয়ন্ত্রণের পর অনেক আফগান ক্রীড়াবিদ আত্মগোপনে চলে যান। কয়েক দিন আগে তালেবান নারী ফুটবলারদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে নিজেদের দেওয়া পোস্টসহ ছবিগুলো সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু, সাহসী নারীরা তা না করে ফুটবল সংস্থাগুলোর কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন।

বিশ্ব সংস্থা ফিফা ও ফিফপ্রো'র আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অস্ট্রেলিয়া সরকার আফগানিস্তান থেকে ৫০ জনেরও বেশি নারী ফুটবলার, ক্রীড়াবিদ ও তাদের নির্ভরশীলদের সরিয়ে নিয়েছে।

ফুটবলারদের আন্তর্জাতিক ফেডারেশন ফিফপ্রো এক বিবৃতিতে অস্ট্রেলিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'আফগানিস্তান থেকে বিপুল সংখ্যক নারী ফুটবলার ও ক্রীড়াবিদদের সরিয়ে নেওয়ায় আমরা অস্ট্রেলিয়া সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ।'

এতে আরও বলা হয়েছে, 'আফগানিস্তানে এখনও অনেক ক্রীড়াবিদ ঝুঁকিতে আছেন এবং তাদের সহায়তা দেওয়ার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা উচিত।'

ডেনমার্কে বসবাসরত আফগান নারী ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক খালিদা পোপাল অস্ট্রেলিয়ার এই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। তিনি জাতীয় নারী ফুটবল দল ও তাদের যুব দলের সদস্যদেরকে সরিয়ে নেওয়াকে 'একটি ঐতিহাসিক বিজয়' হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

১৯৯০ দশকের শেষের দিকে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে সেখানে মেয়েদের ১০ বছর বয়সের পর স্কুলে যাওয়া থেকে বিরত রাখে এবং তাদের বাল্যবিবাহে বাধ্য করা হয়। তাদের শাসনাধীনে কোনো নারী একা বাড়ি থেকে বের হতে পারতেন না এবং সব নারীকে বোরকা পরতে বাধ্য করা হয়।

২০০৭ সালে আফগানিস্তানে নারী ফুটবলের যাত্রা শুরু হয়। এর আগে ২০০১ সালে মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্বে সামরিক অভিযানের পর আফগান নারীরা কিছুটা স্বাধীন জীবন যাপনের সুযোগ পায়।

আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী লেখক, সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

Govt to unveil 'July Declaration' on August 5

It will be presented in presence of all stakeholders involved in the mass uprising at 5:00pm

2h ago