গির্জায় ইফতার
গির্জায় ইফতার। শুনে চমকে উঠলেন? অথচ, গত ১২ বছর ধরে একটি গির্জায় প্রতি রমজানেই এই ইফতার ডিনারের আয়োজন করা হয়।
নামে ইফতার ডিনার হলেও এতে অংশ নেন অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরাও। যুক্তরাষ্ট্রের শহর কেন্টাকির লুভলে হয় এই আয়োজন।
গতকাল মঙ্গলবার সুযোগ হয়েছিল এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার। গির্জায় ইফতার ডিনার শুনে তো আমার ভিমড়ী খাওয়ার জোগাড়। গির্জার সামনে গাড়ি থেকে নামতেই অভ্যর্থনা জানালেন কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক। তারপর হলরুমে ঢুকে আমার চোখ ছানাবড়া। প্রায় ৫০০ মানুষের জন্য এই আয়োজন। বিভিন্ন ধর্মের, বর্ণের মানুষের এক বিশাল মিলনমেলা।
প্রতিটি টেবিলেই রাখা আছে খেজুর। ছোট একটি মঞ্চের মতো তৈরি করা রয়েছে, সেখানে বেশ কয়েকজন বসলেন। শুরু হলো বক্তৃতা পর্ব। গির্জার একজন কর্মকর্তা সবাইকে বসার আমন্ত্রণ জানালেন। তারপর একে একে মুসলিম আমেরিকান ফর কমপেশনের এক কর্মকর্তা, ইন্টারফেইথ পাথস টু পিসের এক কর্মকর্তা, মলডোভা ওয়ার্ল্ড চিলড্রেন্স ফান্ডের প্রতিষ্ঠাতা, লুভলের মেয়র ও কেন্টাকির একজন এমপি কথা বললেন।
তাদের সবার কথাতে একটি বক্তব্যই স্পষ্ট—অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে এবং সহানুভূতিশীল হতে হবে একে অপরের প্রতি।
তারপর পরই মঞ্চে উঠে ইউনিভার্সিটি অব লুভলের একজন আজান দিলেন। সবাই টেবিলে রাখা খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করলেন।
ডিনারের জন্য ৩টি পৃথক লাইনের ব্যবস্থা করা হয়। সবাই লাইন ধরে শুরু করলেন ডিনার। সে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এমন নজির বহুদিন চোখে পড়েনি, বিশেষ করে গির্জায় বসে ইফতার খাওয়া। ইফতার ডিনারের এই আয়োজনে একই সঙ্গে তারা উদযাপন করেছে পাসওভার ও ইস্টার সানডেও।
দিন শেষে সবাই মানুষ এবং মানুষের চেয়ে ধর্ম বড় নয়—এই বার্তাই যেন দিলো এই আয়োজন। জয়তু মানবতা, জয়তু সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি।
Comments