বাংলাদেশের জন্য কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সম্ভাবনা
কোভিড-১৯ এর ডেল্টা সংক্রমণ পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে এবং মৃত্যুহার অতীতের চেয়ে প্রকট আকার ধারণ করছে। অনেকে অবগত আছেন যে, আলফা ধরনটি ছিল উহানের প্রথম ধরনটির চাইতে শতকরা ৫০ ভাগ অধিক সংক্রামক, আর একইভাবে ডেল্টা ধরনটি আলফার চাইতেও শতকরা ৫০ ভাগ অধিক সংক্রামক। এই প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশের অন্তত ১০ থেকে ১২ কোটি জনগণের জন্য ২০ থেকে ৪০ কোটি টিকার সংস্থান অতীব জরুরি। এই আর্টিকেলের মূল লক্ষ্য অস্ট্রেলিয়ান সরকারের কিছু সিদ্ধান্তের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ, যেন বাংলাদেশ সরকার দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয় সরকার প্রয়োজনের অতিরিক্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা প্রতিবেশী দেশে (দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর এর আওতায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে) বিনা মূল্যে বণ্টনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, এই সিদ্ধান্ত শুধু অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। উপরন্তু, ৭ জুলাই অস্ট্রেলিয়া ২৫ লাখ টিকা ইন্দোনেশিয়ায় পাঠানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। (সিডনি মর্নিং হেরাল্ড, ২০২১)
যদিও দেশটি নিজ জনগণের টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে, তথাপি এরকম সিদ্ধান্তের পেছনে কিছু কারণ আছে। প্রাথমিকভাবে অস্ট্রেলিয়া সরকার দেশিয় প্রতিষ্ঠান সিএসএল লিমিটেডের সঙ্গে পাঁচ কোটি অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা সরবরাহের চুক্তি করে এবং পাশাপাশি ভিন্ন উৎসের (ফাইজার, মডার্না) অনুসন্ধান অব্যাহত রাখে। পরবর্তী ধাপে ফাইজার ও মডার্নার সঙ্গে চুক্তি সম্পাদিত হয়। গত ১১ মে টিজিএ (টিকা ও ঔষধ রেগুলেটর) ফাইজারের টিকা ১২ বছর ও তদূর্ধ্বদের ক্ষেত্রে ব্যাবহারের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় (হেলথ ডিপার্টমেন্ট অস্ট্রেলিয়া, ২০২১)। আর সম্প্রতি ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত ফাইজারের টিকা ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ থেকে নিশ্চিতভাবে অনুমান করা যায়, প্রায় তিন কোটির অধিক অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা অব্যবহৃত থেকে যাবে। দ্বিতীয়ত, বর্তমানে সিএসএল লিমিটেড সপ্তাহে ১০ লাখ অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা তৈরির সক্ষমতার ঘোষণা দিয়েছে (এবিসি নিউজ, ২০২১)।
আমরা অস্ট্রেলিয়া প্রবাসীরা মনে করি, অতিরিক্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা থেকে একটি অংশ পাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা বাংলাদেশের জন্য তৈরি হয়েছে, তবে তার জন্য প্রয়োজন দ্রুত সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া, বাংলাদেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতি অস্ট্রেলিয়া সরকারের কাছে তুলে ধরা এবং দীর্ঘ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের থেকে টিকা দাবি করা। একইসঙ্গে সেরাম ইনস্টিটিউটের পাশাপাশি সিএসএল লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধতা হতে পারে বাংলাদেশের জন্য অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা প্রাপ্তির অন্যতম উৎস।
Comments