বাংলাদেশে ৫০ মিলিয়ন ভ্যাকসিন পাঠানোর আবেদন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসীদের

অস্ট্রেলিয়া তাদের নিজস্ব ল্যাব থেকে উৎপাদন করছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে ৫০ মিলিয়ন অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন উপহার হিসাবে পাঠানোর জন্য অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টে আবেদন করেছেন সেখানে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা। তাদের আবেদন অনুমোদন করে নিয়মানুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রবাসীদের পরামর্শ দিয়েছে পার্লামেন্ট কর্তৃপক্ষ।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে এখন ই-পিটিশনে চলছে স্বাক্ষর সংগ্রহ। অস্ট্রেলিয়ান যেকোনো নাগরিক এই পিটিশনে স্বাক্ষর করতে পারবেন। আগামী ১২ আগস্টের আগে কমপক্ষে ১০ হাজার স্বাক্ষর সংগৃহীত হলে পার্লামেন্ট সেটা স্পিকারের মাধ্যমে সংসদে উত্থাপন করবে।

পার্লামেন্টে জমা দেওয়া আবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে গত কয়েক সপ্তাহে কোভিড-১৯ ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের কোনো স্থানীয় ভ্যাকসিন উৎপাদন সুবিধা নেই। সরকার অন্যান্য দেশ থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের প্রাথমিক সরবরাহ ক্রয় করেছে, যা এখন বন্ধ হয়ে গেছে এবং অন্যান্য উৎস থেকে ভ্যাকসিনের নতুন সরবরাহ নিরাপদ করা কঠিন হয়ে উঠছে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকরা অস্ট্রেলিয়ান সমাজের আর্থ-সামাজিক কাঠামোয় প্রচুর অবদান রাখছেন।

ওই আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আমরা মনে রাখতে পারি যে, ১৯৭১ সালে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশকে একটি স্বতন্ত্র দেশ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম দেশগুলোর মধ্যে একটি ছিল। উদ্বৃত্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে দিলে আরও একটি মাইলফলক হবে বলে আমরা আশা করছি।

অস্ট্রেলিয়া তাদের নিজস্ব ল্যাব থেকে উৎপাদন করছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন। ২৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার দেশ অস্ট্রেলিয়া ইতোমধ্যেই যে পরিমাণ অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন উৎপাদন করেছে, তার মধ্যে ৫০ মিলিয়ন উদ্বৃত্ত রয়ে গেছে। কারণ এরইমধ্যে অস্ট্রেলিয়াতে এসে গেছে ফাইজার ভ্যাকসিন। প্রায় সব নাগরিক ফাইজার ভ্যাকসিন নিতেই আগ্রহী এবং কয়েক মাসের মধ্যে মডার্নার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন চলে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। যার ওপর বেশি আস্থাশীল এখানকার নাগরিকরা।

অস্ট্রেলিয়ায় যে পরিমাণ অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন উদ্বৃত্ত আছে, তার মধ্য থেকে ইতোমধ্যেই তারা ইন্দোনেশিয়াসহ আশপাশের দ্বীপপুঞ্জ দেশগুলোর মধ্যে বিতরণ করেছে। অস্ট্রেলিয়া তাদের নিজস্ব ল্যাবে প্রতি সপ্তাহে এক মিলিয়ন ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে সক্ষম।

সিডনি প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া কাউন্সিলের সভাপতি মোহাম্মেদ আব্দুল মতিন এই প্রতিবেদককে বলেন, 'আমরা চেষ্টা করছি, ৫০ মিলিয়ন ভ্যাকসিন উপহার হিসেবে নিতে। যেহেতু অস্ট্রেলিয়ার নিজস্ব ল্যাব আছে, তাই বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় চাহিদা মতো ভ্যাকসিন নেওয়ার সুযোগ আছে।'

ইতোমধ্যেই করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মরিস পেইন গত ২ জুন এক ফেসবুক বার্তায় বলেন, 'অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের কোভিড-১৯ মোকাবিলায় অংশীদারিত্বের সঙ্গে কাজ করছে। আমাদের বন্ধুদের সঙ্গে অংশীদারিত্বে আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে কোভিড-১৯ এর প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে সহায়তা অব্যাহত রাখব।'

এর আগে, গত ২২ মে শনিবার ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের এক মিডিয়া রিলিজে জানানো হয়েছিল, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় অতিরিক্ত পাঁচ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মরিস পেইন।

লেখক: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

NBR officials end strike after govt warning

Following a stern government warning and mounting pressure from the country’s top business leaders, officials of the National Board of Revenue have withdrawn their shutdown.

4h ago