ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অনায়াসে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ
টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে হতাশ করা বাংলাদেশ ওয়ানডেতে দেখা দিল ভিন্ন রূপে! দলের পছন্দের সংস্করণ পেয়ে বল হাতে জ্বলে ওঠা শরিফুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজরা লক্ষ্য রাখলেন একেবারে নাগালে। বাকিটা সহজে সারতে বেগ পেতে হয়নি ব্যাটারদের। অধিনায়ক তামিম ইকবালের আগ্রাসী শুরুই বেঁধে দিল সুর। শেষ পর্যন্ত অনায়াসে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল টাইগাররা।
রোববার গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে প্রথম ওয়ানডেতে স্বাগতিকদের ৬ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। বৃষ্টিতে মাঠ ভেজা থাকায় দুই ঘণ্টারও বেশি সময় দেরিতে শুরু হওয়া ম্যাচ কমে আসে ৪১ ওভারে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ পুরো ওভার খেলে করতে পারে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। জবাবে সফরকারীরা ৫৫ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে ১৫১ রান তুলে জয়ের বন্দরে নোঙর করে।
বাংলাদেশের দাপুটে জয়ের পথ তৈরি করে দেন বোলাররা। মন্থর ও অসমান বাউন্সের উইকেটে তারা নিজেদের সামর্থ্যের ছাপ রাখেন। বাঁহাতি পেসার শরিফুল ক্যারিয়ারের সেরা বোলিংয়ে ৩৪ রানে ৪ উইকেট নেন। অফ স্পিনার মিরাজের শিকার ৩৬ রানে ৩ উইকেট। অভিষিক্ত বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ উইকেট না পেলেও নজরকাড়া পারফরম্যান্সে ৮ ওভারে দেন মোটে ১৬ রান।
লক্ষ্য তাড়ায় তৃতীয় ওভারেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। স্পিনার আকিল হোসেনের ডেলিভারি ডিফেন্ড করতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে বসেন লিটন দাস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটারদের জোরালো এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে রিভিউ নিলেও উল্টো নষ্ট হয় তা। ৯ বল খেলে ১ রান করে সাজঘরে ফেরেন লিটন।
তবে চাপ দলের ওপর জেঁকে বসতে দেননি মারমুখী ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া অধিনায়ক তামিম। এতে প্রতি ওভারেই আসতে থাকে বাউন্ডারি। তামিমের টি-টোয়েন্টি ঘরানার ইনিংসের ইতি ঘটে দুর্ভাগ্যজনকভাবে। গালিতে বল ঠেলে রানের জন্য দৌড় দেন প্রায় দেড় বছুর পর ওয়ানডে খেলতে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত। তার ডাকে সাড়া দিলেও সময়মতো ক্রিজে পৌঁছাতে পারেননি তামিম। আগেই অ্যান্ডারসন ফিলিপের থ্রো ভেঙে দেয় স্টাম্প। ফলে ৩০ বলে ৪০ রানের জুটির অবসান হয়। তামিম বিদায় নেন ২৫ বলে ৩৩ রানে। তার ব্যাট থেকে আসে ৪ চার ও ১ ছক্কা।
অষ্টম ওভারে ৪৯ রানে ২ উইকেটের পতনের পর রানের চাকা শ্লথ হয়ে যায় বাংলাদেশের। তবে লক্ষ্য ছোট হওয়ায় তৈরি হয়নি কোনো জটিল পরিস্থিতি। শান্ত সাবলীল ঢঙে খেললেও মাহমুদউল্লাহ ব্যাটে-বলে সংযোগ ঘটাতে ভুগতে থাকেন। তৃতীয় উইকেটে তারা যোগ করেন ৪৯ রান। গুড়াকেশ মোতি আলাদা করেন তাদের। তার ফ্লাইট দেওয়া ডেলিভারিতে মিড উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক নিকোলাস পুরানের তালুবন্দি হন শান্ত। ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংসে ৫ চারে ৪৬ বলে ৩৭ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
অষ্টম ওভারে দলীয় পঞ্চাশ পেরোনো বাংলাদেশের শতরান পূর্ণ হয় ২০তম ওভারে। কিছুক্ষণ পরই সাজঘরে ফিরতে পারতেন মাহমুদউল্লাহ। পুরানের বলে বোল্ড হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নো বল হওয়ায় বেঁচে যান। তখন ২০ রানে ব্যাট করছিলেন মাহমুদউল্লাহ।
থিতু হতে পারেননি আফিফ হোসেন। তার ১৭ বলে ৯ রানের ইনিংস থামে পুরানের বলে ফিলিপের দুর্দান্ত ক্যাচে। এরপর আর কোনো সাফল্যের দেখা পায়নি ক্যারিবিয়ানরা। পঞ্চম উইকেটে ৫৪ বলে ৪০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ম্যাচ নিজেদের করে নেয় বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ ৬৯ বলে ৪১ ও নুরুল হাসান সোহান ২৭ বলে ২০ রানে অপরাজিত থাকেন।
Comments