পূজায় বেড়েছে বিক্রি

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজা উপলক্ষে বেড়েছে শপিং সেন্টার, ফ্যাশন হাউজ ও খুচরা দোকানের বিক্রি।
দুর্গা পূজা উপলক্ষে বেড়েছে শপিং সেন্টার, ফ্যাশন হাউজ ও খুচরা দোকানের বিক্রি। ছবিটি গতকাল রোববার রাজধানীর তাতিবাজার এলাকা থেকে তোলা। ছবি: রাশেদ সুমন/স্টার

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজা উপলক্ষে বেড়েছে শপিং সেন্টার, ফ্যাশন হাউজ ও খুচরা দোকানের বিক্রি।

উৎসবটি ঘিরে বাড়তে থাকা বিক্রি যেন খুচরা ব্যবসায়ীদের জীবন রক্ষাকারী ওষুধ হিসেবে কাজ করছে। করোনা মহামারির কারণে গত ১৮ মাসে তাদের বিক্রি ছিল খুবই কম।

সম্প্রতি মহামারির প্রভাব কমে আসায় এবং পূজা উপলক্ষে আবারও জমে উঠেছে শপিং মল, মার্কেট ও রাস্তার পাশের দোকানগুলো। ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন কাপড়, জুতা, ইলেকট্রনিক পণ্যসহ নানান জিনিস কিনতে।

বেসরকারি চাকরিজীবী উৎপল কুমার দাস গত শুক্রবার বসুন্ধরা সিটি শপিং মল থেকে নিজের জন্য কিনেছেন প্যান্ট ও এক জোড়া জুতা। তিনি বলেন, 'আমার বাবা ও ভাই পরিবারের বাকি সদস্যদের জন্য কেনাকাটা করেছেন।'

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রদীপ সরকার তার মা, স্ত্রী ও দুই বোনের জন্য ৪টি শাড়ি কিনেছেন। একই সঙ্গে নিজের ও ভাতিজার জন্য কিনেছেন প্যান্ট, শার্ট ও জুতা।

সাধারণত দুর্গা পূজা শুরু হওয়ার ৭ দিন আগে থেকেই বিক্রি বাড়তে থাকে। পূজার ৩ দিন পর পর্যন্ত চলে এই বিক্রি।

কেনাকাটা করতে আসা মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে জানিয়ে কে ক্রাফটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা খালিদ মাহমুদ খান বলেন, 'মানুষ পোশাক ও বিভিন্ন আনুষঙ্গিক পণ্য কিনছে। এতে আমাদের ব্যবসায় ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।'

খুচরা পণ্য বিক্রেতারা জানান, দেশে করোনাভাইরাস আঘাত হানার পর থেকে তাদের খারাপ সময় যাচ্ছিল। তবে সম্প্রতি ব্যবসার চাকা আবার গতি পাচ্ছে।

ঢাকার টাঙ্গাইল শাড়ী কুটিরের সত্ত্বাধিকারী মনিরা এমদাদ বলেন, 'গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর শাড়ি বেশি বিক্রি হচ্ছে। সাধারণত অনেক মানুষ উৎসবকে সামনে রেখে শপিং করতে ভারতে যান। মহামারির কারণে এবার সেটা হয়নি।'

ফ্যাশন হাউজ রঙ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপক সৌমিক দাস জানান, গত দুই বছর ধরে স্থানীয় ফ্যাশন শিল্প খুব খারাপ অবস্থায় রয়েছে। তিনি বলেন, 'মানুষ দুর্গা পূজা উপলক্ষে কেনাকাটা করছে। এতে করে আমাদের বিক্রি বেড়েছে।'

সারা লাইফস্টাইলের পরিচালক শরীফুন্নেসা রেবা বলেন, 'আমাদের শাখাগুলোতে বিক্রি বেড়েছে।'

তিনি জানান, দেশে সর্বমোট খুচরা বিক্রির ৭০ শতাংশ হয় ঈদের সময় আর বাকিটা হয় পহেলা বৈশাখ ও দুর্গা পূজার সময়।

রাজধানীর শাহবাগে আজিজ কোঅপারেটিভ সুপার মার্কেটের ফ্যাশন হাউজগুলোর মূল ক্রেতা শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ায় দোকানে ক্রেতা বেড়েছে।

লন্ঠন ফ্যাশন হাউজের মালিক উজ্জ্বল দাস বলেন, 'মার্কেটের বেশিরভাগ ফ্যাশন হাউজে বিক্রি ভালো হচ্ছে।'

বাটার খুচরা বিক্রয় বিভাগের প্রধান আরফানুল হক জানান, অর্থনীতি আবারও সচল হওয়ায় বিক্রি বেড়েছে। কিন্তু তা মহামারির আগের পর্যায়ে এখনও পৌঁছতে পারেনি।

স্মার্টফোন ও হোম অ্যাপ্লায়েন্সের বিক্রিও বেড়েছে।

বাংলাদেশে স্যামসাংয়ের বিভিন্ন ধরণের ডিভাইসের অনুমোদিত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফেয়ার গ্রুপের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন জানান, তাদের বিক্রি ১০ শতাংশ বেড়েছে।

প্রিমিয়াম সুইটসের অপারেশন্স পরিচালক মাহবুবুর রহমান বকুল বলেন, 'পূজায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপকরণগুলোর মধ্যে মিষ্টি অন্যতম। যখনই কোনো উৎসব থাকে, বিক্রি বেড়ে যায় ১০ থেকে ২০ শতাংশ। দুর্গা পূজায়ও আমরা সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়েছি।'

ওয়েল ফুডের মূল প্রতিষ্ঠান ওয়েল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, ঈদ ও পহেলা বৈশাখের পর দুর্গা পূজা আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পায়। কারণ এ সময় ব্যবসা ভালো হয়।

অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English

Love road at Mirpur: A youthful street

Certain neighbourhoods in Dhaka have that one spot where people gather to just sit back and relax. For Mirpur, it’s the frequently discussed street referred to as “Love Road”.

7h ago