চোখ ভেজাবে 'মৃধা বনাম মৃধা’

দেশে পারিবারিক সিনেমার সংকট থাকায় যারা হলে আসতে চান না, এবার তাদের অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন পর চমৎকার কোনো পারিবারিক গল্প নিয়ে মুক্তি পেয়েছে নতুন চলচ্চিত্র 'মৃধা বনাম মৃধা'।
চলচ্চিত্রটি গতকাল শুক্রবার দেশের ৩০টি সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে।
অনেকেই হয়তো বলতে পারেন, প্রতিটা সিনেমাতেই তো কোনো না কোনো পরিবারের গল্প থাকে। এ আর নতুন কী? তবে সেসব সিনেমার চেয়ে কিন্তু মৃধা বনাম মৃধার গল্পটা আলাদা। পরিবারের কিছু দৃশ্য দেখানো হলেও বেশিরভাগ সিনেমায় নায়ক-নায়িকা মূল বিষয় থাকেন। আর 'মৃধা বনাম মৃধা' সিনেমাটির গল্পের পুরোটা জুড়েই পরিবার। বাবা-ছেলে ও পুত্রবধূর পারিবারিক মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বের গল্প এটি।
সিনেমাটি গতকালই মুক্তি পাওয়ায় গল্পটা পাঠকদের সঙ্গে ভাগাভাগি করা হলো না। তবে এটা বলাই যায় যে, এই সিনেমায় মূল সম্পদ গল্প আর অভিনয়। বাবা-ছেলের মধ্যকার দ্বন্দ্ব আপনার চোখ ভিজিয়ে দেবে নিশ্চিতভাবেই।
বলতে পারেন টাকা দিয়ে টিকিট কেটে চোখ ভেজাতে যাব কেন? এরচেয়ে স্পাইডারম্যান দেখে আনন্দিত হব। হতেই পারেন, সেটা আপনার একান্ত ব্যক্তিগত ইচ্ছা। তবে এই সিনেমার কোনোকিছু আরোপিত মনে হয়নি, দেখলে আপনার ভালো লাগবে।
বাবার চরিত্রে তারিক আনাম খান অনবদ্য। তাকে ছাড়া এই চরিত্র কল্পনা করা যায় না। অভিনয় গুণে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখলেন পুরোটা সময়। চোখের পলক ফেলা যায় না। আমাদের এমন একজন অভিনেতা আছেন— এটা অনেক গৌরবের।

ছেলের চরিত্রে সিয়ামকে নায়কের চেয়ে অভিনেতেই মনে হয়েছে বেশি। সন্তান হিসেবে বাবার প্রতি ভালোবাসা, রাগ, যন্ত্রণা, আর্তনাদ ঠিকঠাক ফুটিয়ে তুললেন কী দারুণভাবে!
নোভা তার অভিনীত প্রথম সিনেমায় এত সাবলীল অভিনয় করলেন! অতুলনীয়। তারিক আনাম খানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অভিনয় করেছেন তিনি। বিশেষ করে যখন তারিক আনাম খান বললেন, 'তুমি আমাদের মাঝে কথা বলার কে?', তখন নোভার যে অভিব্যক্তি—দর্শক তা দীর্ঘদিন মনে রাখবে।
ছোট একটা চরিত্রে অভিনয় করেছেন সানজিদা প্রীতি। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, অভিনয়ে মনোযোগী হলে ছোট-বড় কোনো চরিত্র বিষয় না। মাসুদুল আমিন রিন্টু ও মিলন ভট্টাচার্যের অভিনয়ের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
রায়হান খানের সংলাপ ও চিত্রনাট্যে সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন রনি ভৌমিক। এটি তার পরিচালিত প্রথম সিনেমা। যদিও কোনোভাবেই এটিকে কোনো নবীন পরিচালকের সিনেমা মনে হয়নি।
Comments