‘মেয়েরা যখন বলে আমি তাদের অনুপ্রেরণা, তখন ভীষণ ভালো লাগে’
আজমেরী হক বাঁধন ভ্যালেন্সিয়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ৩৭তম আসরে যোগ দিতে অবস্থান করছেন স্পেনের ভ্যালেন্সিয়া শহরে।
এই আসরে তিনি সেরা অভিনেত্রী নির্বাচিত হয়েছেন 'রেহানা মরিয়ম নূর' চলচ্চিত্রের জন্য। পাশাপাশি সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কারও জিতেছে সিনেমাটি।
স্পেন থেকে বাঁধন আজ রোববার কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে।
ভ্যালেন্সিয়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেত্রী ও সেরা সিনেমার পুরস্কার জিতেছে রেহানা মরিয়ম নূর। কেমন লাগছে অভিনয় শিল্পী হিসেবে?
আমি খুশি, আনন্দিত। এই অর্জন আমার একার নয়, পুরো টিমের। সেইসঙ্গে এই অর্জন বাংলাদেশের। আমি দারুণ উচ্ছ্বসিত।
এখানে আমিই একমাত্র বাংলাদেশি, আর কোনো বাঙালিও নেই। বিভিন্ন দেশের জুরি আছেন। অন্য ভাষার একটি সিনেমার প্রতি তাদের ভালোবাসা দেখে আমি মুগ্ধ। ভিনদেশে আমার সিনেমার সংলাপ ধরে ধরে তারা কথা বলছেন আমার সঙ্গে।
ওখানকার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা হয়েছে?
বেশ কিছু ম্যাগাজিন ও পত্রিকার সাংবাদিক আমার সঙ্গে কথা বলেছেন, সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। স্পেনের এই শহরের সাংবাদিকরা আমার অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন, সিনেমার প্রশংসা করেছেন। তারা বার বার বলেছেন, বাংলাদেশে এতো সুন্দর সিনেমা নির্মাণ হয়? তারা বাংলাদেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছেন।
দর্শকদের রিঅ্যাকশন কেমন ছিল?
দর্শকরা সিনেমা দেখার পর সরাসরি আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা আমাকে 'রেহানা' বলে ডেকেছেন। রেহানা এবং বাংলাদেশ কথাটি অনেক দর্শক উচ্চারণ করেছেন। আমার মন ভরে গেছে। তারা আমাকে চেনেন না, কখনো দেখেনি। কিন্তু একটি সিনেমা দেখার পর যেভাবে ভালোবাসায় জড়িয়েছেন, অভিনেত্রী হিসেবে চিরদিন মনে রাখব। দূর দেশে এসে 'রেহানা' ডাক শুনে মন ভরে গেছে।
ঘুরে বেড়ানোর সময় পাচ্ছেন?
আজ ঘুরতে বের হচ্ছি। অনেক ঘুরব। ছোট্ট শহর এটা। এখানে একটি নদী আছে। এক দেড় কিলোমিটার হেঁটেছি ভালো লাগা থেকে। আজ শহরটা দেখব। এই শহরে কোনো বাংলাদেশি নেই। বাংলাদেশি আমি একাই।
এখানকার খাবার খুবই মজা। আমিও মজার মজার খাবার খাচ্ছি। ওরা খেতে পছন্দ করে।
শিল্পী জীবন আর ব্যক্তি জীবন আলাদা করে দেখেন?
শিল্পী জীবন আর ব্যক্তি জীবন আলাদা করে দেখি না। দুটোই তো আমি। কী হতে চাই, সেই ভাবনা ছিল না। ভালো মানুষ হতে চেয়েছি সব সময়। ভালো মা, ভালো বোন, ভালো মানুষ হতে চেয়েছি।
রেহানা মরিয়ম নূর আমাকে অনেক দিয়েছে। দেশে ও বিদেশে অনেক সম্মান পেয়েছি। এটা আমার জন্য অনুপ্রেরণা।
একজন নারী হিসেবে কোন বিষয়টি বেশি ভালো লাগে?
অনেক মেয়ে আমার কাছে আসেন। অনেকে ফেসবুকেও যোগাযোগ করেন। অনেকে বলেন, 'আপনি কিভাবে এত কিছুর পরও সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন? আপনি আমাদের অনুপ্রেরণা।' তারা বলে, 'আপনাকে দেখে সাহস পাই সামনে এগিয়ে যাওয়ার।' তখন খুবই ভালো লাগে।
সিনেমা নিয়ে স্বপ্ন কী?
স্বপ্ন দেখলেই তো হবে না, বাস্তবতার সঙ্গেও তাল মেলাতে হবে। আমার বয়স হিসেবে চরিত্র দরকার। মেয়েদের জন্য চ্যালেঞ্জিং চরিত্র তৈরি করতে হবে। ১৬ বছর ধরে অভিনয় করছি। অভিনয়টাই করে যেতে চাই।
Comments