লাল মোরগের ঝুঁটি: একাত্তরের শ্বাসরুদ্ধকর ৪ মাস
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা 'লাল মোরগের ঝুঁটি' নিয়ে ১১ বছর পর ফিরলেন নির্মাতা নুরুল আলম আতিক। এর আগে ২০১০ সালে মুক্তি পেয়েছিল তার প্রথম সিনেমা 'ডুবসাঁতার'।
গতকাল শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে 'লাল মোরগের ঝুঁটি'। এই সিনেমার কাহিনী আবর্তিত হয়েছে ১৯৭১ সালে সৈয়দপুর এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে। আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৪ মাসের ঘটনা।
মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সৈয়দপুর বিমানবন্দরের কাছে পাকিস্থানি সেনাবাহিনী ঘাঁটি করে। বিমানবন্দর তৈরি করার উদ্দেশ্য নিয়ে পাকিস্থানি আর্মির ঘাঁটি বসে। সেই ঘাঁটির পাশের গ্রামগুলো নিয়েই এই সিনেমার কাহিনী।
এখানে বিহারিদের নিপীড়ণ ও পাক বাহিনীর নির্যাতনের চিত্র ফুটে উঠেছে। মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা হলেও গোলাগুলি খুব বেশি নেই। তবে সংলাপ, চরিত্র, অভিনয় এখানে গোলাগুলির কাজ করেছে।
সিনেমায় সাদাকালো কিছু দৃশ্যে কবিতার স্বাদ দিতে পারে দর্শকদের। নির্মাতা নুরুল আলম আতিক মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন সিনেমার গল্প বলা ও নির্মানে।
এই সিনেমার প্রতিটা চরিত্র মনপ্রাণ ঢেলে অভিনয় করেছেন। আহমেদ রুবেল চরিত্রের মধ্য ঢুকে নীরবে অনায়াসে চরিত্র হয়ে উঠেছেন। দর্শককে নিজের দিকে টেনে নিয়েছেন অভিনয় গুণেই। এই সিনেমায় বড় প্রাপ্তি তার অভিনয়। আহমেদ রুবেলের অভিনয় দেখার জন্য হলেও সিনেমাটা দেখা প্রয়োজন বলে মনে হয়েছে।
এ ছাড়া আশীষ খন্দকার, অশোক বাপারী, জয়রাজ, ইলোরা গওহর, শিল্পী সরকার অপু, শাহজাহান সম্রাট, দীপক সুমন কী দারুনভাবে চরিত্র হয়ে উঠেছেন সিনেমায়। লায়লা হাসান মমতাময়ী মায়ের মতো অভিনয় করে গেলেন। যন্ত্রনা, উৎকন্ঠা, মমতায় অনবদ্য তিনি। জয়রাজের সঙ্গে থাকা বিহারী চরিত্রের অভিনয়শিল্পী চোখে পড়েছেন অভিনয় গুণেই।
এর বাইরে জ্যোতিকা জ্যোতি, স্বাগতা ও দিলরুবা দোয়েল যতোটা সুযোগ পেয়েছেন অভিনয় করেছেন। চরিত্রগুলো আরেকটু দীর্ঘ হলে হয়তো আরও অভিনয় দেখাতে পারতেন।
আশনা হাবিব ভাবনা সিনেমার চরিত্র হয়ে উঠতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। অভিনয়ে তার প্রমাণ দিতে চেয়েছেন চরিত্রের মধ্যে। শেষ দৃশ্যে জ্বলে উঠেছেন স্বমহিমায়। তার চেষ্টা অব্যহত থাকুক।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ১ ঘণ্টা ৪৬ মিনিটের সিনেমা 'লাল মোরগের ঝুঁটি' হয়ে উঠুক মুক্তিযুদ্ধের বড় গল্প।
Comments