যেভাবে লেখা হলো ‘যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই’ গানটি

'যদি রাত পোহালে শোনা যেত, বঙ্গবন্ধু মরে নাই' গানের বরেণ্য গীতিকবি হাসান মতিউর রহমান।
গানটির কথা কীভাবে লেখা হয়েছিল তার পেছনের গল্প তিনি বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারকে।
হাসান মতিউর রহমান বলেন, 'গানটি ১৯৯০ সালে লেখা। ফ্রান্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি দলীয় সম্মেলন ছিল। সেখানে শিল্পী ছিলেন মলয় কুমার গাঙ্গুলী। তাকে বলা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একটি এবং শেখ হাসিনাকে নিয়ে আরেকটি গান করতে। তখন আমি গান লিখি ক্যাসেটের জন্য। শ্রোতারাও আমার গান গ্রহণ করেছিলেন। মলয় কুমার গাঙ্গুলী গানগুলো লেখার দায়িত্ব আমাকে দিয়েছিলেন।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রথমে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান লেখার জন্য রাজি হইনি। কারণ জাতির পিতাকে নিয়ে গান লেখা মুখের কথা নয়। তারপরও আমাকেই দায়িত্ব দেওয়া হলো, সময় দেওয়া হলো দুদিন। আমাকে বলার পর সেদিন রাতেই লিখতে বসি। শুরুতে কিছুই মাথায় আসছিল না। আর যে কথাগুলো আসছিল, মনে হচ্ছিল বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কথাগুলো যায় না। শেষ রাতের দিকে মনে হলো কথাগুলো কীভাবে যেন আমার ভেতর চলে আসছে। ফজরের আজানের সময় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। তখন লিখলাম "যদি রাত পোহালে শোনা যেতো, বঙ্গবন্ধু মরে নাই, যদি রাজপথে আবার মিছিল হতো, বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চাই।"'
'গানটি তখনকার বিখ্যাত ঝংকার স্টুডিওতে রেকর্ডিং হয়েছিল। আলমাস আলী বেহালা বাজাতেন, তার কম্পোজিশনে মলয় কুমার গানটি গাইলেন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনের সময় আরও কিছু গান একত্র করে আমরা একটি ক্যাসেট তৈরি করি। গানগুলো যখন বাজালাম তখন মানুষ সেগুলো লুফে নেয়। গানগুলো আওয়ামী লীগের জনসভায়, ধানমন্ডি-৩২ নম্বরের দিকে রিকশায় করে বাজানো হতো। এভাবে গানগুলো খুব দ্রুত ছড়িয়ে গেল,' যোগ করেন তিনি।
হাসান মতিউর রহমান বলেন, 'মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে বাসায় ডেকে বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধু মারা যাওয়ার পর তাকে নিয়ে এটিই সেরা গান বলে আমার কাছে মনে হয়।'
Comments