‘আমরা আমাদের প্রতিভার সদ্ব্যবহার করতে পারিনি’

ফাইল ফটো

রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে নেলসন বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। তখনই কথা প্রসঙ্গে জানান, কর্তৃপক্ষের আপত্তি না থাকলে কিছু বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলবেন তিনি। তিনি জানান, নেপিয়ারে পৌঁছানোর পর দলের সঙ্গে মিটিং শেষে প্রেস সেশনের সময় দেবেন। তাসমান সাগরমুখী ‘সিনিক তে পানিয়া’তে দলের মিটিং করার মতো ব্যবস্থা না থাকায় পাশের সাদা রঙের একটি বাড়িতে গিয়ে মিটিংয়ের কাজটি সারতে হয়। দলের সঙ্গে দীর্ঘ মিটিং করার পর প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনের সঙ্গে বসেন কোচ। পরে রিপোর্টারদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন হাথুরুসিংহে। ওই কথোপকথনের কিছু অংশ এখানে তুলে দেওয়া হলো:

প্রশ্ন: ওয়ানডে সিরিজ ৩-০তে হেরেছে আপনার দল। কিন্তু আপনার জন্য সবচেয়ে হতাশার জায়গা কোনটা ছিলো?

হাথুরুসিংহে: অবশ্যই একটা হতাশাজনক। খেলার একটা অংশে আপনি প্রভাব বিস্তার করলেন কিন্তু এর সুবিধাটা কাজে লাগাতে পারলেন না। এ থেকে একটা বিষয়ই সামনে আসে। সেটা হলো, আরেকটু অভিজ্ঞতা বা ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারলে খেলায় ভালো করা যেত।

প্রশ্ন: মুশফিকুর রহিমের অনুপস্থিতি কতটা অনুভূত হয়েছে? এর পর তিন জনের ওডিআই অভিষেক হলো; আপনি কি মনে করেন এতে কোন কাজ হয়েছে?

হাথুরুসিংহে: মুশফিকের অনুপস্থিতি সংকটে ফেলেছে। গত কয়েক মাস থেকে সে ভালো খেলছিলো। প্রথম ম্যাচেও মাঝামাঝি পর্যায়ে খেলতে নেমে ৪০ রানে অপরাজিত ছিলো সে। মোসাদ্দেক সাথে থাকায় টার্গেটের পেছনে তাড়া করার ক্ষীণ হলেও সম্ভাবনা ছিলো। এর পরই চোট পেলো সে, যেটা ছিলো দলের জন্য একটা বড় ধাক্কা। মুশফিকের জায়গায় অন্য একজনকে নামাতে হলো। এটা সহজ ছিলো না।

আপনার প্রশ্নের দ্বিতীয় অংশের জবাবে বলতে হয়, নুরুল হাসান দলে এসে সত্যিই খুব ভালো খেলেছে। খেলায় আর যে পরিবর্তন আনা হয়েছে সেটা হলো মুস্তাফিজকে বিশ্রামে পাঠানো। কারণ ইনজুরি থেকে ওঠার পর তাকে দিয়ে ছয় দিনে তিন ম্যাচ খেলানো সম্ভব ছিলো না। আর পিচের কথা বিবেচনা করে শুভাশিস রায়কে আনা হয়েছে।

লেগ স্পিনার কি করতে পারে সেটাও দেখতে চেয়েছিলাম আমরা। তানবির হায়দার সিডনিতে ও এখানে নেটে ভালো বল করেছিলো। সুদূরপ্রসারী চিন্তা করেই তাকে খেলানো হয়েছে। আমরা চেয়েছি একজন লেগ স্পিনার চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ও ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ খেলতে যাক। তাকে খেলানোর এটাই কারণ।

প্রশ্ন: কিন্তু এতে কি হিতে বিপরীত হয়নি, বিশেষ করে তানবিরের ক্ষেত্রে?

হাথুরুসিংহে: ঠিক সেরকম না। আপনি যদি আশা করেন কেউ এসে দুই ম্যাচেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলবেন তাহলে হবে না। বিশ্বসেরা শেন ওয়ার্নের কথাই ধরুন। প্রথম দুই ম্যাচে শেন ওয়ার্ন কিন্তু খুব ভালো কিছু করতে পারেনি। আর তানবিরের কথা বললে বলতে হয়, প্রথম ম্যাচে সে ভালো বল করেছে। আর দ্বিতীয় খেলায় সে বা দলের অন্য স্পিনারদের কেউ ভালো করতে পারেনি। এটাতেই আমরা হতাশ হয়েছি। এক বা দুই ম্যাচ দিয়ে আমরা কাউকে বিচার করি না। ভালো কিছু দেখেই তাকে দলে নেওয়া হয়েছে। অনুশীলনের সময়ও সে ভালো করেছে।

প্রশ্ন: ঘরোয়া ক্রিকেট নাকি প্র্যাকটিসে তার পারফরম্যান্স দেখে নেওয়া হয়েছে?

হাথুরুসিংহে: না, নির্বাচকরা তাকে একজন লেগ-স্পিনার অলরাউন্ডার হিসেবে তাকে নেওয়া হয়েছে। কারণ আপনারা জানেন গত আড়াই বছর থেকে একজন লেগ স্পিনার খুঁজছিলাম আমি। দুর্ভাগ্যবশত আমাদের যে ছিলো [জুবায়ের হোসেন] তার সম্ভাবনা থাকলেও কোন কারণে ভালো করতে পারেননি। লেগ-স্পিনার হিসেবে এর পরই তানবিরের কথা ভাবি আমরা।

প্রশ্ন: সর্বশেষ দুই ম্যাচে বাংলাদেশের একটি হাফ সেঞ্চুরি পার্টনারশিপ ও সেঞ্চুরি স্ট্যান্ড ছিলো। কিন্তু এর পর যে ব্যাটিং বিপর্যয় হয় তা গত দেড় বছরে দেখা যায়নি।

হাথুরুসিংহে: এটা হতাশাজনক ছিলো। এটাও বুঝতে হবে যে দীর্ঘদিন পর আমরা বিদেশের মাটিতে খেলছি। তবে এটা কোন অজুহাত হতে পারে না। যারা ব্যর্থ হয়েছে হতাশাটা তাদের থেকে নয় বরং যারা ভালো শুরুর পরও ভালো রান তুলতে পারেননি তারা আমাকে হতাশ করেছে। ওরা প্রায় তিনটা শতক করেছে কিন্তু আমাদের মাত্র তিনটা অর্ধশতক ছিলো। এটাই দুই দলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। ভালো শুরুর পরও বড় স্কোর করতে না পারাটা খুব হতাশাজনক। এটা নিয়ে আগেও অনেক কথা বলেছি আমরা। আমার মনে হয়েছে এর পুরোটাই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারা বা না পারা ও যাদের বিপক্ষে খেলছেন তাদের দক্ষতার ওপর নির্ভরশীল। আমাদের ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে ওরা যেসব পরিকল্পনা করেছে সেটা তারা করতে পেরেছে। ফিল্ডিং দিয়েও ওরা আমাদের চাপে ফেলেছে।

Comments

The Daily Star  | English

SC orders EC to restore Jamaat's registration

The apex court also directed the EC to dispose of the pending issues of Jamaat, including its registration

9m ago