ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ড: বাংলাদেশি ৪ শিক্ষার্থীর ২৭ ঘণ্টার রোমহর্ষক যাত্রা

২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ শুরুর পর প্রথম দেড় দিন পাতালরেলের আন্ডারগ্রাউন্ড বেজমেন্টে আটকে ছিলেন খারকিভে বসবাসরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ফাবিহা বিনতে মাহবুব। সেখান থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় লিভিভের উদ্দেশে ট্রেনে চড়েন তিনিসহ আরও ৩ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। ৬ ঘণ্টায় কিয়েভে পৌঁছায় ট্রেন। ১৫ মিনিট বিরতির পর ১৩ ঘণ্টার ট্রেনযাত্রা।
২৬ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের সীমান্ত শহর লিভিভে পৌঁছান তারা। লিভিভ থেকে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা পায়ে হেঁটে পোল্যান্ড সীমান্তে পৌঁছান। স্থানীয় একটি আশ্রয়কেন্দ্রে ২ রাত কাটিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি সকালে সীমান্ত অতিক্রম করেন। পোল্যান্ড সীমান্তে বাংলাদেশ দূতাবাসের কোনো কর্মকর্তাকে খুঁজে পেলেন না। মিশরীয় দূতাবাসের সহযোগিতায় পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশয় পৌঁছান তারা।

প্রবল বোমাবর্ষণ ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মধ্যে খারকিভ থেকে পোল্যান্ডের সীমান্তবর্তী শহর লিভিভে পৌঁছানোর ২৭ ঘণ্টার রোমহর্ষক যাত্রার অভিজ্ঞতা দ্য ডেইলি স্টারের কাছে বর্ণনা করেছেন খারকিভ ন্যাশনাল মেডিকেল ইউনিভার্সিটির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ফাবিহা। তার মুখেই শোনা যাক সেই বিবরণ...
আতঙ্কের ভোর
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোর ৫টা থেকে রাশিয়া ইউক্রেনের খারকিভে আক্রমণ শুরু করে। ২০ থেকে ২৫ বার বোমাবর্ষণের শব্দ পাই। এর আগের দিনেও সবকিছু স্বাভাবিক ছিল। আমরা সেদিন সব ক্লাস করেছি। এমনকি, পরের দিনও আমাদের রুটিন অনুযায়ী ক্লাসে যাওয়ার কথা ছিল।
সেদিন ভোরবেলায় হঠাৎ আমার বিছানা কেঁপে ওঠে। আমি সঙ্গে সঙ্গে জেগে উঠি। বোমাবর্ষণের শব্দ শুনতে পাই। আমার বন্ধুদের ফোন করতে শুরু করি। সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। একে অপরকে ফোন করে সাহস দিই। কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলি। বোমাবর্ষণ থামছিলই না। একেকবার বেশ কয়েকটি করে বোমা বিস্ফোরিত হচ্ছিল। কিছুক্ষণ পর শব্দ থেমে যায়।
কে ফোন করে সাহস দেই। কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলি। বোমাবর্ষণ থামছিলই না। একেকবার বেশ কয়েকটি করে বোমা বিস্ফোরিত হচ্ছিল। কিছুক্ষণ পর শব্দ থেমে যায়।
বিকেল পর্যন্ত পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। এরপর আবারও হামলা শুরু হয়। এবার বোমার সঙ্গে ক্ষেপণাস্ত্র ও মর্টার শেল নিক্ষেপ শুরু হয়। খারকিভে পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে। শুরুর দিকে কেবল সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোয় হামলা হচ্ছিল। এরপর তারা সেনানিবাস এলাকায় তারপর বেসামরিক স্থাপনায় হামলা শুরু করে।
ওইদিন ভোর থেকে আমরা পাতালরেলের আন্ডারগ্রাউন্ড বেজমেন্টে আটকে ছিলাম। সে সময় যত বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি, আলোর ঝলকানি দেখেছি, তার ভয়াবহতা ভাষায় বর্ণনা করা সম্ভব না। এ ধরনের কোনো কিছুর জন্য আমরা একেবারেই প্রস্তুত ছিলাম না।
বেজমেন্টে আটকে থেকে আমরা এতটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি যে, দিন-তারিখের হিসাবও ভুলে যাই। এখন হয়তো কথাগুলো সহজে বলছি, কিন্তু সেই সময়ের আতঙ্কটা ছিল অকল্পনীয়।
বাঁচতে হলে খারকিভ ছাড়তে হবে
পরের দিন হামলার তীব্রতা খানিকটা কমলে আমি অল্প সময়ের জন্য আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে বাসায় আসি খাবার আর কাপড় নেওয়ার জন্য। বাসায় আসার ১০ মিনিটের মধ্যেই আবারও তীব্র বোমাবর্ষণ শুরু হলে আমি এক কাপড়ে দৌড়ে আবার আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যাই। সে সময় আমার সঙ্গে ৩ বাংলাদেশি বন্ধুও ছিল।
আমরা উপলব্ধি করলাম, পরিস্থিতির অবনতি হতেই থাকবে। এই অবস্থায় কোনোদিন নিজ দেশে, পরিবার-পরিজনের কাছে বেঁচে ফিরতে পারব কি না জানি না। সে এক ভয়ঙ্কর যন্ত্রণাদায়ক উপলদ্ধি। বাঁচতে হলে যে কোনো উপায়ে খারকিভ ছাড়তে হবে, এ ছাড়া আর কিছু মাথায় ছিল না।
আমরা খুব দ্রুত ইউক্রেনের পশ্চিমে পোল্যান্ড সীমান্তের কাছের কোনো শহরে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। সেসব অঞ্চলে তখনো সেভাবে আক্রমণ শুরু হয়নি। পোল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকেও বারবার আমাদের এই বার্তাই দেওয়া হচ্ছিল।
দূতাবাসের প্রতিনিধিরা আমাদের আশ্বস্ত করলেন, কোনোভাবে পোল্যান্ডে এসে পৌঁছতে পারলেই চলবে। এরপর বাকি ব্যবস্থা তারাই করবেন। আমাদের জন্য এই যাত্রা ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। আমরা সুনির্দিষ্ট পথের নির্দেশনা চাইছিলাম। কোন পথে কীভাবে যাব, জানাটা খুব জরুরি ছিল। খারকিভ এমন একটি শহর, যেটি এই যুদ্ধের অন্যতম প্রধান লক্ষ্যবস্তু।
সুতরাং, আমাদের জন্য খারকিভ থেকে পশ্চিম দিকে যাওয়ার অর্থ ছিল নিজেদের জীবন ঝুঁকির মুখে ফেলা। তারপরও আমরা সাহস করে বেজমেন্ট থেকে বের হয়ে এলাম। কোনোমতে জীবন হাতে নিয়ে এলাম রেলস্টেশনে। ঠিক করলাম, পোল্যান্ডের লিভিভ শহরে যাব।
আমরা যখন রেলস্টেশনে ঢোকার জন্য লাইনে দাঁড়াই, তখন কয়েক কিলোমিটার দূরেই বোমা পড়ছিল। আমরা আবারও আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যেতে শুরু করি। তখন আমার মনে হচ্ছিল যে, বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়ে আমরা পদদলিত হয়েও মারা যেতে পারি। বোমার কান ফাটানো শব্দ যে কতটা আতঙ্কজনক ছিল, তা বলার মতো নয়। আমাদের মতো আরও বহু মানুষ খারকিভ ছাড়তে চাইছে। স্টেশনে প্রচন্ড ভিড়। এক পর্যায়ে ট্রেনে উঠতে সক্ষম হই আমরা।
১৫ মিনিট যেন ১৫ ঘণ্টারও বেশি
আমরা যে ট্রেনে উঠি সেটা লিভিভ যাওয়ার পথে রাজধানী কিয়েভ হয়ে যায়। কিয়েভেও তখন বিমান হামলা চলছিল। ট্রেন যাত্রার পুরোটা সময় আমরা তীব্র আতঙ্কে কাটিয়েছি। ট্রেনের ভেতর সব আলো নেভানো ছিল। ট্রেন কর্তৃপক্ষ আমাদের ফোনের লোকেশন সার্ভিস আর ওয়াইফাই বন্ধ রাখতে বলছিল। কারণ চারপাশে তখনো বিমান হামলা হচ্ছিল। আমাদের লোকেশন ও ওয়াইফাই চালু থাকলে ওরা (রুশ বাহিনী) জানতে পারবে কোথায় মানুষ বেশি আছে। তখন সে অনুসারে তারা বিমান হামলা চালাবে। রুশ সেনাবাহিনী যাতে কোনোভাবে ট্রেনের অবস্থান বুঝতে না পারে, সেজন্য ট্রেনের সব আলো নিভিয়ে রাখা হয়। রেলকর্মীরা বারবার আমাদের ট্রেনের জানালা বন্ধ রাখতে অনুরোধ করছিল।
খারকিভ থেকে কিয়েভ পৌছাতে সময় লাগল ৬ ঘণ্টা। কিয়েভে যখন ট্রেন থামে, তখন আমরা সব যাত্রীরা প্রাণ ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। কারণ খারকিভের মতো কিয়েভেও তীব্র আক্রমণ চলছিল। ট্রেনটি যতক্ষণ কিয়েভে থেমে ছিল ততক্ষণ আমাদের অস্থিরতা কাটছিল না। এই মনে হয় বোমা পড়ল, আর কিছু ভাবতে পারছিলাম না। কিয়েভে যখন ট্রেনটি থামে, তখন ইউক্রেনের নাগরিকরা চিৎকার করতে শুরু করে। তারা সেখানে ট্রেম থামাতে নিষেধ করছিলেন।
সাধারণত কিয়েভে এই ট্রেনটি ১ ঘণ্টা যাত্রাবিরতি করে। তবে সেদিন ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যেই ট্রেনটি আবার ছেড়ে যায়। সে ১৫ মিনিট যেন ছিল ১৫ ঘণ্টারও বেশি।
একই ট্রেনে আরও ৩ বাংলাদেশি যাত্রী
খারকিভ স্টেশনে আমরা মোট ৬ জন বাংলাদেশি অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৪ জন ট্রেনে উঠতে পারি। আমার সঙ্গে ছিলেন খারকিভ জাতীয় মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাচেলর অব মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি বিভাগের প্রথম বর্ষের সামিহা, দ্বিতীয় বর্ষের শিফা ও ইয়াসের।
সেদিন বহু মানুষ ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করেছিল। কিন্ত রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের আনুপাতিক হারে ট্রেনে ওঠানোর চেষ্টা করে। আমাদের সঙ্গে পাকিস্তানের বেশ কিছু শিক্ষার্থী ট্রেনে ওঠেন। তবে অনেকেই ট্রেনে উঠতে পারেননি, স্টেশনে থেকে যান। জানি না তারা অন্যকোনো ট্রেনে উঠতে পেরেছিলেন কি না বা কী ঘটেছিল তাদের ভাগ্যে!
১৯ ঘণ্টার ট্রেন যাত্রা
কিয়েভ ছাড়ার পর আরও কিছু স্টেশনে ট্রেনটি থেমেছিল। তবে কিয়েভ পার হয়ওয়ার পরই আমরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলি। বাকি পথ ভালোভাবেই পার করি। লিভিভে তখন তেমন একটা আক্রমণ হচ্ছিল না।
কিয়েভ থেকে লিভিভে পৌঁছাতে সময় লাগে ১৩ ঘণ্টা। পোল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃপক্ষ একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ করে আমাদের যুক্ত করেছিল।
লিভিভে পৌঁছে দূতাবাসের এক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করি। আমরা তার কাছে জানতে চাই, কীভাবে এবং কোন পথে পোল্যান্ড সীমান্তে পৌঁছানো আমাদের জন্য সুবিধাজনক হবে। কারণ, লিভিভ থেকে ৩-৪টি পথে পোল্যান্ডে যাওয়া যায়। কিন্তু সব জায়গায় সব দেশের দূতাবাস বা দূতাবাসের প্রতিনিধি নেই। কোনটিতে পৌঁছালে সবচেয়ে ভালো হবে, সেটা আমরা তার কাছে জানতে চাইলাম। বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা থাকবেন কোন সীমান্তে? আমরা নিশ্চিত হতে চাইছিলাম, যে সীমান্তে যাচ্ছি, সেটিই সঠিক। কারণ একটি থেকে অন্যটি বেশ দূরে। যাতায়াতে জন্যে কোনো যানবাহন ছিল না। পায়ে হেঁটে যাওয়া ছিল একমাত্র উপায়। প্রবল শীতের মধ্যে প্রায় ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা হেঁটে একাধিক সীমান্তে যাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না।
সাহায্য চাইলে, বিলাল হোসেন নামের বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা আশ্চর্যজনকভাবে আমাদের সঙ্গে খুবই অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। তিনি বারবার বলতে থাকেন, পোল্যান্ড পৌঁছানোর আগে যেন তার সঙ্গে আমরা যোগাযোগ না করি। আমরা তাকে কোনো প্রশ্নও করতে পারিনি। আমাদের পরিস্থিতি বোঝার কোনো চেষ্টাই তিনি করেননি।
আমাদের যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে অ্যাড করা হয়েছিল, যেখানে পোল্যান্ড দূতাবাসের সব কর্মকর্তা ছিলেন। সেই গ্রুপে আমাদের সবকিছুর আপডেট দেওয়া হচ্ছিল। সেখানেই আমাদের বিলাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছিল। ভয়-আতঙ্ক, ১৯ ঘণ্টার ট্রেন যাত্রায় আমরা এমনিতে বিপর্যস্ত ছিলাম। তারপর দূতাবাস কর্মকর্তার এমন অসৌজন্যমূলক ব্যবহারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি।
ভিনদেশে আত্মীয়তার উত্তাপ
লিভিভ আমাদের জন্য খুবই অচেনা একটি জায়গা ছিল। তীব্র ঠান্ডার মধ্যে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা হেঁটে আমরা সীমান্তে পৌঁছাই। এ সময় কিছুদূর পরপরই ইউক্রেনের নাগরিকরা আমাদের খাবার আর পানি দিয়ে সহায়তা করে।
সীমান্তে পৌঁছে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের খোঁজ করতে থাকি। অন্যান্য অনেক দেশের দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকলেও বাংলাদেশের কাউকে খুঁজে পেলাম না। তখন বিলাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে আবারও ব্যর্থ হই। তিনি আর ফোন ধরেননি।
এ অবস্থায় আমাদের বাধ্য হয়ে লিভিভের একটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে হয়। সেখানকার একটি স্কুলকে আশ্রয়কেন্দ্রে রূপান্তরিত করা হয়েছিল। সেখানে রাতের খাবার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল সামান্য সবজি ও ভাত। শীত সামলাতে দেওয়া হয় কম্বল। তবে চা ও বিস্কুটের সরবরাহ ছিল পর্যাপ্ত। ওই আশ্রয়কেন্দ্রে আমরা ২ রাত কাটাই।
২৮ ফেব্রুয়ারি সকালে আমরা সীমান্ত পার হয়ে পোল্যান্ডে ঢুকি। আমাদের পাসপোর্ট যাচাই করা হয়। তখনো সেখানে বাংলাদেশের দূতাবাসের কাউকে পেলাম না। মিশরীয় দূতাবাসের কর্মকর্তারা তাদের নাগরিকদের পোল্যাণ্ডের রাজধানী ওয়ারশতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। মিশরীয় দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের বাসে করে ওয়ারশিদ পৌঁছাই। তারপর নিজদের উদ্যোগে একটা হোটেলে উঠেছি।
হোটেলে পৌঁছানোর পর দূতাবাস থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারা জানিয়েছেন, দূতাবাসের পক্ষ থেকে আমাদে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হবে। এখন দেশে ফেরার অপেক্ষায় ওয়ারশর হোটেলে দিন কাটছে। যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরে আসার তীব্র ইচ্ছে নিয়ে অপেক্ষা করছি।
দূতাবাসের বক্তব্য
ওয়ারশর বাংলাদেশ দূতাবাস কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে টেলিফোনে অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে 'খুবই ব্যস্ত আছি' বলে ফোন রেখে দেন। আরেকজন দূতাবাস কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যে কোনো কিছু জানার জন্যে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলেন।'
পোল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এ বি এম সুলতানা লায়লা হোসেন টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সীমান্তের ৮টি স্থানের সবকটিতে সব সময় আমাদের লোক থাকতে পারে না। আমাদের এত লোকবল নেই। আমাদের লোকজন পেট্রোলিং করে। বুধবার সকালের তথ্য অনুযায়ী ইউক্রেন থেকে ৫৩২ জন বাংলাদেশি পোল্যান্ডে পৌঁছান। এর মধ্যে ১০০ জনের মতো দূতাবাসের তত্ত্বাবধানে আছেন। অন্যরা নিজেদের ব্যবস্থাপনায় আছেন। আমাদের ব্যবস্থাপনায় যারা আছে তাদের থাকা খাওয়া নিশ্চিত করেছি। তাদের দেশে পাঠানোর বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় আছে।'
দূতাবাসের কর্মকর্তারা ইউক্রেন থেকে ফেরত আসা অনেকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করছেন। সহায়তা করছেন না। বিল্লাল হোসেন নামের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট করে অভিযোগ করছেন ইউক্রেন ফেরত অনেকে। বিষয়টি আপনার জানা আছে কি না?
এই প্রশ্নের উত্তরে রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসেন বলেন, 'না, আমার জানা নেই। এমন কথা এই প্রথম শুনলাম। অভিযোগ বিশ্বাসও হচ্ছে না। বিল্লাল আমাদের ক্লিনার। তার কাছে বিষয়টি জানতে চাইব। কারও সঙ্গে যেন এমন কিছু না ঘটে, তা নিশ্চিত করব।'
Comments