গরু বিক্রি নিয়ে কেন্দ্রের বিধি নিষেধ মানবেন না মমতা
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার গবাদি পশু হত্যা ও বিক্রি নিষিদ্ধ করে সম্প্রতি যে নির্দেশিকা জারি করেছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার সেই নির্দেশিকা মানবে না বলে জানিয়েছেন রাজ্যটির প্রশাসনিক প্রধান মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় রাজ্য সরকারের সচিবালয় নবান্নে সাংবাদিকদের সাথে নিয়মিত বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ওই সিদ্ধান্তের কথা খোলাখুলিভাবেই জানিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন। মমতা অভিযোগ করে বলেন, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করে কেন্দ্রীয় সরকার একতরফা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
মমতার ভাষায়, “আমরা এই বিজ্ঞপ্তি মানছি না, আমরা এটা মানতে বাধ্যও নই। গবাদি পশু হত্যার উপর কোনও রকম নিষেধাজ্ঞা জারি করার বিরুদ্ধে আমি। এটা অসাংবিধানিক।”
মমতা বিষয়টি নিয়ে আইনি লড়াই করারও হুমকি দেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রের এই নির্দেশকে আদালতেই চ্যালেঞ্জ জানানো হবে।
গরু বিক্রির নিষেধাজ্ঞার এই সিদ্ধান্তটি রমজান মাসের মতো একটি সময়ে নেওয়ার নিন্দা করেন মমতা। তিনি বলেন, এই সময়টাকে বেছে নেওয়া টা খুবই অন্যায়। কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছুটা উপহাস করে তিনি বলেন, “গরুকে কান ফুটো করে আধার কার্ড ঝোলাবে। কোথায় তখন গরুর কষ্ট হয় না বুঝি? মেয়েরা কান ফুটো করলে তো কষ্ট পান।”
কেন্দ্র সরকারকে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, প্রাণী হত্যা করা যখন অন্যায় তখন আলু-পটল-মাছ কিংবা ধানের বীজ খেলেও তোও সেটা হত্যা করাই হবে।
তিনি বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে আঘাতের অভিযোগও করেন। মমতা পরিষ্কার করে বলেন যে, গবাদিপশু সংক্রান্ত বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের নিজস্ব আইন রয়েছে, তাই কেন্দ্র জোর করে রাজ্যের উপর কিছু চাপিয়ে দিতে পারে না।
সম্প্রতি ভারত সরকার গবাদি পশু বিশেষ করে গরু বিক্রির ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী কৃষক হিসেবে প্রমাণ দিতে পারলেই কেবল গরু কেনা এবং বেচা যাবে। এই সিদ্ধান্ত পশ্চিমবঙ্গসহ সব রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলোকে কদিন আগেই পাঠানো হয় বলে দেশটির গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।
এদিকে মমতা এদিন তার মন্ত্রিসভার বৈঠক নিয়েও বেশ কিছু সিদ্ধান্তের কথা জানান। এর মধ্যে ভারত-বাংলাদেশের চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত উন্নয়নের জন্য পৃথক একটি উন্নয়ন পরিষদ গঠন করার কথা জানান। তিনি বলেন, চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্তের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ছাড়াও সেখানে লোকবল বাড়ানো হচ্ছে। ওই সীমান্ত দিয়ে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসাবাণিজ্য চলে। তাই দুই দেশের সম্পর্ক বাড়ানোর ক্ষেত্রে ওই সীমান্তের উন্নয়ন জরুরি।
এছাড়া এদিন পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাদের নিজস্ব ব্র্যান্ডের লোগো কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় পাশ করেছে। সোমবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সাংবাদিকদের সামনে সেই লোগো উন্মোচন করেন।
Comments