গাইবান্ধায় দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়ল স্কুল

গাইবান্ধায় প্রত্যন্ত চর এলাকায় একটি স্কুল জ্বালিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল মধ্যরাতের পর সদর উপজেলার কেন্দারপারা এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। স্কুলটির ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী এখন তাদের শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে।
আগুনে স্কুলের সাতটি ক্লাসরুম, অফিসের আসবাব, সরঞ্জাম ও কাগজপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা।
২০০৩ সালে ৫১ শতাংশ জমিতে গণ উন্নয়ন একাডেমি হাই স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। গণ উন্নয়ন কেন্দ্র নামের স্থানীয় একটি এনজিও স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করে। এর প্রধান কর্মকর্তা এম আব্দুস সালাম বলেন, প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য এনজিও থেকে নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। স্কুলের পাশেই দূরের চরের গরিব শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসনেরও ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
আগুন নেভাতে ছুটে গিয়েছিল স্থানীয়রা। তারা জানান, আগুনের শিখা প্রায় ২০ ফুট পর্যন্ত উঠে যায়। তবে অনেক চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি তারা।
কামারজানি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বলেন, এলাকার মধ্যে একমাত্র স্কুল ছিলো এটি। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাজীবন এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।

গণ উন্নয়ন কেন্দ্রের প্রোগ্রাম ম্যানেজার আফতাব হোসেন বলেন, “কিছু প্রভাবশালী লোক এলাকায় যাত্রা ও জুয়ার আসর বসানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু স্থানীয়রা এর বিরোধিতা করে। বৃহস্পতিবার বিকালে স্কুল মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। স্কুলে আগুন দেওয়ার এটা একটা কারণ হতে পারে।”
এই স্কুলের শিক্ষার্থী বিলকিস বেগম এবার এসএসসি পরীক্ষা দিবে। দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলার সময় কান্নায় ভেঙে পড়ে সে। ভবিষ্যৎ শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে সে।
“দুঃস্বপ্নেও আমরা ভাবিনি স্কুলটাই ধ্বংস করে দেওয়া হবে। পড়ালেখার জন্য এখন আমরা কোথায় যাবো?” স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র লিটন সরকার এই কথাগুলো বলছিলো।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আসাদুর হক বলেন, “সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। একটা কাগজও রক্ষা করতে পারিনি আমরা। গত ১২ বছরের ২০ হাজার সনদ পুড়ে গেছে। কিভাবে এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠবো আমরা?”
গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহদী হাসান জানান ঘটনা তদন্ত করছেন তারা। এর পেছনে কেউ জড়িত থাকলে গ্রেফতার করা হবে।
Comments