যে প্রশ্নের উত্তর আজও মেলেনি

গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কে যেখানে হলি আর্টিজান বাকারি ছিল সেখানে শাওনের ছবি হাতে মা মাসুদা বেগমের আহাজারি। ছবি: রাশেদ সুমন

গুলশান হামলায় নিহতদের স্মরণে গতকাল যখন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছিল ঠিক তখনই সেখান থেকে কিছু দূরে মাসুদা বেগম নামের এক মা তাঁর সন্তানের জন্য অঝোর ধারায় কাঁদছিলেন। ছেলে শাওনের জন্য সেখানে গিয়েছিলেন তিনি।

গত বছর ১ জুলাই রাতে মো. জাকির হোসেন শাওনকে (১৯) আটক করে পুলিশ। সে হলি আর্টিজান বেকারির রান্নাঘরে কাজ করত। আটক হওয়ার এক সপ্তাহ পর শরীরে আঘাত নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সে মারা যায়।

শাওনের মায়ের অভিযোগ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। এখন সন্তানের জন্য ন্যায়বিচার চান তিনি।

গতকাল সকাল পৌনে ১১টার দিকে শাওনের বাবা-মা ও দুই ভাইবোন গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কে যেখানে হলি আর্টিজান বেকারি ছিল সেখানে উপস্থিত হন। এই প্রতিবেদকও তখন সেখানে ছিলেন। ওই ঘটনায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে লোকজন সেখানে যাবেন এমন খবর শুনে তারা সেখানে আসেন।

বাঁধাই করা ছবি হাতে শাওনের মায়ের তখন আহাজারি করে বার বার বলছিলেন, “পুলিশ আমার ছেলেকে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। প্রশাসন আমার ছেলেকে মেরেছে। আমি বিচার চাই।”

আরও পড়ুন: বোমা ও গুলিতে মারা যায় গুলশান হামলাকারীরা

তবে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে পরিবারটিকে ভেতরে যেতে দেয়নি পুলিশ।

দুপুর পৌনে ১২টার দিকে পরিবারটি দ্বিতীয় বারের মত ঢোকার চেষ্টা করলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান ডিভিশনের এক কর্মকর্তা তাঁদেরকে গেটের কাছেই আটকে দেন। পরিবারটিকে তিনি বলেন, শ্রদ্ধা জানানো সময় শেষ হয়ে গেছে। এর পর তিনি তাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যেতে নারী পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দেন। অথচ তখনও অনেককে ফুল নিয়ে সেখানে প্রবেশ করতে দেখা যায়।

এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পরিবারটিকে প্রবেশ করতে দেয় পুলিশ।

মাসুদা সাংবাদিকদের বলেন, এক বছর হয়ে গেলেও তারা জানেন না শাওনের কী দোষ ছিল। ছেলের ছবি দেখিয়ে তিনি বলেন, “রাজপুত্রের মত ছেলে ছিল আমার। ওকে কেন মারা হল?”

শাওনের বাবা আব্দুস সাত্তার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, রেস্টুরেন্ট থেকে আট মাসের বেতন ছাড়া তারা আর কিছুই পায়নি।

তিনি বলেন, “ঘটনার দুই দিন পর ছেলেকে হাসপাতালে অচেতন অবস্থায় পাই। সে তখন শুধু বলছিল, আমাকে আর মারবেন না।”

গত বছর ৮ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে শাওন মারা যায়।

তার মৃত্যুর পর ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, শাওন সন্দেহভাজন জঙ্গিদের মধ্যে ছিল।

তবে হলি আর্টিজানে হামলা নিয়ে যে মামলা হয় সেখানে শাওনের নাম ছিল না।

Click here to read the English version of this news

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

6h ago