চলে গেলেন বর্ষীয়ান সাংবাদিক অমিত বসু
সাংবাদিক অমিত বসু আজ (৩ জুলাই) ভোর সাড়ে তিনটায় কলকাতার রামকৃষ্ণ দাস লেনে নিজের জন্মভিটায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ৬১ বছর বয়সে মৃত্যু বরণ করেন। দুমাস আগে তাঁর ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়েছিল।
একমাত্র পুত্র, বৃদ্ধা মা ছাড়াও এক দিদি ও এক ভাইসহ অসংখ্য স্বজন-বন্ধু এবং সাংবাদিক সহকর্মী রেখে গিয়েছেন অমিত বসু। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন কলকাতা প্রেসক্লাবের সভাপতি স্নেহাশীষ সুর ও সম্পাদক কিংশুক প্রামাণিকসহ কলকাতার বাংলাদেশের গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ।
এছাড়াও, শোক প্রকাশ করেছেন কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত উপ-হাইকমিশনার মিয়া মহম্মদ মাইনুল কবির।
অমিত বসুর দিদি সুমিতা ঘোষ তাঁর মৃত্যু খবর নিশ্চিত করে জানান, “অনেক রাত পর্যন্ত লেখালেখি করতেন অমিত বসু। সোমবার ভোরের দিকে কিছু সময় ছাদে পায়চারি করে পরে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। সকালে তাঁর কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে গৃহপরিচারিকা ডাক্তারকে খবর দেন। এরপর, অমিত বসুর পারিবারিক চিকিৎসক এসে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা দেন।
সুমিতা ঘোষ আরও জানান, সোমবার বিকেলে কলকাতার নিমতলা মহাশ্মশানে প্রয়াতের শেষকৃত্যানুষ্ঠান সম্পন্ন করা হবে।
অমিত বসু দীর্ঘদিন বাংলাদেশের গণমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ঢাকার দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় কলকাতা প্রতিনিধি হিসেবে তিনি দীর্ঘ দিন কাজ করেছেন। একই সঙ্গে কলকাতার “তারা নিউজ” এর বাংলাদেশ বিষয়ক সম্পাদকদের দায়িত্বেও ছিলেন বহু দিন। পেশার কারণে ভারত, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বহু দেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন বর্ষীয়ান ওই সাংবাদিক।
গত কয়েক বছরে ধরে আনন্দ বাজার পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে নিয়মিত বাংলাদেশ বিষয়ক বিশ্লেষণধর্মী লেখা লিখতেন। ঢাকার আরও একটি দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকায় “এপার-ওপার” শিরোনামে তাঁর সাপ্তাহিক কলামটি দুই বাংলার বোদ্ধাপাঠক সমাজের কাছে সমাদৃত ছিলো। তিনি কলকাতার অনলাইন পত্রিকা এই মুহূর্তে.কম এর প্রধান সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন বেশ কিছুদিন।
কলাম লেখার পাশাপাশি কয়েক বছর ধরে নিয়মিত উপন্যাসও লিখে গেছেন অমিত বসু। “মরমিয়া”, “বিহান” এবং “উজান” তাঁর লেখা উপন্যাসের মধ্যে অন্যতম। ঢাকার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় ২০১৬ সালে ঈদ সংখ্যায় তাঁর “দোসর” উপন্যাস প্রকাশিত হয়। এটিই তাঁর লেখা শেষ উপন্যাস। কলকাতায় “দোসর” উপন্যাসের আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচনের প্রস্তুতি চলাকালে বর্ষীয়ান এই লেখকের প্রয়াণ ঘটল।
অমিত বসুর জন্ম হয়েছিল ১৯৫৭ সালে ৯ আগস্ট। তাঁর বাবার নাম কমলকৃষ্ণ বসু।
Comments