টঙ্গীতে প্রিজন ভ্যানে বোমা হামলার ঘটনায় মামলা

গতকাল টঙ্গীতে হুজি নেতা মুফতি হান্নানকে বহনকারী প্রিজন ভ্যানে হামলার সময় এক জনকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। ছবি: স্টার

নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নান ও তার সহযোগীদের বহনকারী প্রিজন ভ্যানের বহরে গতকাল টঙ্গীতে বোমা হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে।

টঙ্গী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ তালুকদার জানিয়েছেন, হামলার সময় আটক মোস্তফা কামালসহ ৪-৫ জনকে আসামি করে সোমবার রাতে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা করা হয়েছে।

গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মুফতি হান্নানকে বহনকারী প্রিজন ভ্যানের বহরে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা হামলা চালায়। পুলিশের ধারণা এই শীর্ষ জঙ্গিকে ছিনিয়ে নিতে হামলা হয়।

ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী কলেজ গেট এলাকায় প্রিজন ভ্যানগুলো লক্ষ্য করে কয়েকজন যুবক বেশ কয়েকটি বোমা ছুঁড়ে মারে বলে গাজীপুরের ট্রাফিক পরিদর্শক হাফিজুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান। তবে হামলার সময় সবগুলো বোমাই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

চারটি প্রিজন ভ্যানে মুফতি হান্নানসহ বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে ঢাকা আদালত থেকে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি জেলে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো। প্রিজন ভ্যানগুলো পরবর্তীতে নিরাপদেই কারাগারে পৌঁছেছে বলে আমাদের গাজীপুর প্রতিনিধি জানান।

হামলাকারীদের এক জনকে হাতেনাতে আটক করার কথা দাবি করেছে পুলিশ। তার নাম মোস্তফা কামাল (২৫), বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায়। তার কাছ থেকে একটি হ্যান্ড গ্রেনেডসহ পাঁচটি বোমা, দুটি পেট্রোল বোমা, দুটি চাপাতি ও সাড়ে সাত হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে। তাকে আটক করে টঙ্গী থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তবে অন্যান্য হামলাকারীরা পালিয়ে গেছে।

পুলিশ জানায়, ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে ভ্যানের ওপর বোমা হামলা করার কথা ‘স্বীকার’ করেছে কামাল।

গত রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “প্রিজন ভ্যানের পাশে দুটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। এক জন হামলাকারীকে আটক করেছি আমরা। হামলার উদ্দেশ্য ও এর পেছনে কারা রয়েছে আমরা তা বের করার চেষ্টা করছি।”

তিন বছর আগে ত্রিশাল হামলার আদলে হুজি জঙ্গিরা মুফতি হান্নান ও তার সহযোগীদের বহনকারী প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে, গোয়েন্দারা এমন তথ্য দেওয়ার পর পরই এই হামলা হলো।

এ প্রসঙ্গে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের ডেপুটি (সিটিটিসি) কমিশনার মহিবুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, “হান্নানকে ছিনিয়ে নিতে জেলের ভিতর যোগাযোগ ও রেকি করার গোয়েন্দা তথ্য ছিলো আমাদের কাছে।”

কাশিমপুর কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মিজানুর রহমান বলেন, মামলার শুনানির জন্য চারটি প্রিজন ভ্যানে মুফতি হান্নানসহ বন্দীদের ঢাকার আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

একজন ঊর্ধ্বতন সিটিটিসি কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, হান্নানকে বহনকারী ভ্যানটি হামলার মূল লক্ষ্য ছিলো।

দুই সপ্তাহ আগে সিটিটিসি ইউনিট রাজধানীর শাহজাহানপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তিন জন সন্দেহভাজন জঙ্গি আবু বকর সিদ্দিক মাহমুদ (২২), জাভেদ হোসেন (১৯) ও সালেহ আহমেদকে (৪৯) গ্রেফতার করে। এরাও ত্রিশাল হামলার আদলে মুফতি হান্নানকে ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছিলো।

২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি অস্ত্রধারী একদল ব্যক্তি ময়মনসিংহের ত্রিশালে একটি প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে সাজাপ্রাপ্ত তিন জেএমবি জঙ্গিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এই জঙ্গিদের দুই জন ছিলো মৃত্যুদণ্ড পাওয়া। এই ঘটনায় এক জন পুলিশ নিহত হন। ঘটনার কিছুদিনের মধ্যেই ছিনিয়ে নেওয়া এক জন টাঙ্গাইলে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে ও ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়।

Click here to read the English version of this news

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh steps up efforts to recover laundered money: BB governor 

“We are taking action against those who fled abroad with funds from Bangladesh, and coordinated efforts are underway at both national and international levels,” he said

1h ago