পশ্চিমবঙ্গে বেসরকারি স্কুলে ভর্তি

ডোনেশন নিলেই অনুমোদন বাতিল

ডোনেশনের বিপরীতে স্কুলে ভর্তি বন্ধ করল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। মেধার ভিত্তি উপেক্ষা করে বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনও রকম সুবিধার বিনিময়ে এখন থেকে ভর্তি করতে পারবে না।
School

ডোনেশনের বিপরীতে স্কুলে ভর্তি বন্ধ করল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। মেধার ভিত্তি উপেক্ষা করে বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনও রকম সুবিধার বিনিময়ে এখন থেকে ভর্তি করতে পারবে না।

যদি এমন অভিযোগের প্রমাণ পায় প্রশাসন তবে শিক্ষা দফতর সংশ্লিষ্ট স্কুলের অনুমোদন বাতিল করবে সরকার। এ ক্ষেত্রে সরকার তার বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করবে।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, কয়েকদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির এই কড়া নির্দেশনা নবান্ন থেকে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে প্রত্যেক জেলার শিক্ষা পরিদর্শকদের কাছে।

সম্প্রতি বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তি এবং চিকিৎসার নামে মোটা অঙ্কের টাকা আদায়ের বিরুদ্ধেও এইভাবেই কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে মমতার প্রশাসন। বিধানসভায় আইন পাশ করে বেসরকারি হাসপাতালের সর্বোচ্চ বিলের সীমা টেনে দিয়েছেন মমতা। বেসরকারি হাসপাতালগুলো মমতার নির্দেশ পাওয়ার পর এখন প্রায় তটস্থ।

হাসপাতালের পর এবার বেসরকারি স্কুলের ভর্তি বাণিজ্য বন্ধ করতেও মমতা ব্যানার্জি এভাবেই খড়গহস্ত হলেন।

শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গেছে, রাজ্যে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের প্রায় ৪৪০টি স্কুল আছে। এই স্কুলগুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তি প্রধান। সরকারি স্কুলগুলোতে পড়ুয়াদের কাছ থেকে মাসিক ২৪০ টাকার বেশি আদায় করা হয় না।

সম্প্রতি শিক্ষা দফতরের তদন্তে দেখা গেছে রাজ্যে প্রায় এক হাজারের বেশি বেসরকারি স্কুলের মধ্যে প্রথম সারির অর্ধশত স্কুলেই মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ভর্তি বাণিজ্য চালানো হচ্ছে। এমন কি স্কুলের মাসিক বেতন এবং পরীক্ষা ফি বাবদ আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ।

সরকারি স্কুলের আসন সংখ্যা কম থাকায় বেসরকারি স্কুলগুলোর উপর বেশি ভরসা থাকে অভিভাবকদের। উচ্চবিত্তদের কাছে এসব নামি বেসরকারি স্কুলের কর্তৃপক্ষ মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সন্তানদের ভর্তির সুযোগ করে দিচ্ছেন। কিন্তু মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নমধ্যবিত্তদের সন্তানরা মেধা থাকার স্বত্বেও ওই সব নামী বেসরকারি স্কুলে ভর্তি হতে পারছে না। এখানেই সংকট তৈরি হচ্ছে। রাজ্য সরকার এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য কড়া ভূমিকা নিচ্ছেন বলে স্বীকার করেছেন মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র। তিনি মনে করেন, বেসরকারি স্কুলগুলো যে পদ্ধতিতে অভিভাবকদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন সেটা এককথায় পকেট লুট করার সামিল।

পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহসম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “আমরা শিক্ষার বেসরকারিকরণ ও বাণিজ্যকরণের বিরুদ্ধে বরাবরই সোচ্চার। আর রাজ্য সরকার যেভাবে বেসরকারি স্কুলগুলোর ভর্তি বাণিজ্য রুখতে কড়া ভূমিকা নিয়েছে সেটা প্রশংসার দাবি রাখে।”

Comments

The Daily Star  | English
Trend of Interest Rate Spread

Interest rate spread rises to highest level since 2003

The spread between interest rates on deposits and loans rose to 6.03 percent, the highest in two decades, indicating that banks are making money at the expense of depositors and borrowers.

13h ago