ঢাকায় বৃষ্টি-বিলাস

রিমঝিম বর্ষা, গাছে গাছে কদমফুল - আর আপনি বসে আছেন অফিসে? ফেসবুক খুলে দেখেন সব বন্ধুরা চলে গেছে সিলেটে কিংবা কক্সবাজারে - পোস্ট হচ্ছে “বৃষ্টিময়” ছবি, স্ট্যাটাস। কিন্তু, আপনার তো ছুটি নেই। এদিকে ঈদের পরে, হাত খালি। কিছুতেই শহরের বাইরে যাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু, তাই বলে কি বৃষ্টি-বিলাস বন্ধ থাকবে? একদম না। ঢাকায় বসেই আপনি শহুরে বৃষ্টি-বিলাস করতে পারেন।
rains
ছবি: স্টার ফাইল ফটো

রিমঝিম বর্ষা, গাছে গাছে কদমফুল - আর আপনি বসে আছেন অফিসে? ফেসবুক খুলে দেখেন সব বন্ধুরা চলে গেছে কক্সবাজারে - পোস্ট হচ্ছে “বৃষ্টিময়” ছবি, স্ট্যাটাস। কিন্তু, আপনার তো ছুটি নেই। এদিকে ঈদের পরে, হাত খালি। কিছুতেই শহরের বাইরে যাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু, তাই বলে কি বৃষ্টি-বিলাস বন্ধ থাকবে? একদম না। ঢাকায় বসেই আপনি শহুরে বৃষ্টি-বিলাস করতে পারেন।

১. বুড়িগঙ্গা: বন্ধুদের সঙ্গে গিয়েছিলাম ফটোওয়াকে। সবাই মিলে একটি নৌকা ভাড়া করলাম ১০০ টাকায়। নৌকায় বসেই মেঘাছন্ন আকাশের ছবি তুললাম, এবং কিছুক্ষণ পরেই ঝুম বৃষ্টি নামলো। তুমুল বর্ষণ যাকে বলে। আমাদের সবার হাতে ক্যামেরা। বাতাসের বেগ বাড়ছে, সাথে দুলছে আমাদের নৌকাটি। আমরা তখন প্রায় মাঝ নদীতে, মাঝি নৌকা থেকে বৃষ্টির পানি ফেলতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। চারপাশ অন্ধকার করে নেমেছে তখন শ্রাবণ-ঢল। কী ভয়ঙ্কর, একই সঙ্গে কী সুন্দর। যারা বৃষ্টি ভালোবাসেন, কোনো এক বৃষ্টির সকালে চলে যাবেন বুড়িগঙ্গায়। সে এক দেখার মতো দৃশ্য। তবে, হাল্কা বৃষ্টিতে না যাওয়াই ভালো।

২. রমনা পার্ক: যারা সবুজ ভালোবাসেন, তাদের জন্য বৃষ্টির দিনে রমনা পার্কের বিকল্প নেই। আপনি চাইলে বলধা গার্ডেন অথবা বোটানিক্যাল গার্ডেনও যেতে পারেন। তবে আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে রমনা পার্ক। কোনো এক বৃষ্টিধোয়া দিনে, আপনি যদি রমনা পার্কে হাঁটতে যান, তাহলে দেখবেন প্রকৃতি কী দারুণ সুন্দর। তবে, মাথায় রাখতে হবে, ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মধ্যেই রমনা পার্ক হবে আপনার গন্তব্য। যদি কোনো মুখর বাদল দিনে সেখানে আপনি উপস্থিত হন, তাহলে বিড়ম্বনা হবে বেশি। হালকা বৃষ্টিতে ছাতা মাথায় ঘুরে আসুন রমনা পার্ক, দেখে আসুন সবুজের সমারোহ। মন ভালো হবেই।

rains
ছবি: স্টার ফাইল ফটো

৩. টিএসসির চায়ের দোকান: আপনি যদি খুব বেশি মাত্রায় বৃষ্টি ভালোবাসেন তাহলে টিএসসির চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখতে পারেন। সেদিন বন্ধুদের সঙ্গে টিএসিসিতে গিয়েছিলাম মালটা চা খেতে, আর অমনি শুরু হলো ঝুম বৃষ্টি। আমরা সবাই আশ্রয় নিলাম একটা ছোট্ট চায়ের দোকানে। একদিকে, আমাদের হাতে গরম চা, আরেকদিকে আমাদের গায়ে পড়ছে বৃষ্টির ছাঁট। নিমিষেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে যেন ধুয়ে মুছে দিয়ে গেলো সেই বিকালের অতিথি। একটু পরে বৃষ্টি একটু কমে আসতেই রিক্সা নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে পড়লাম। বৃষ্টিতে রিক্সায় ঘোরার মতো আর কিছুই হতে পারে না। এটাও গ্যারান্টি দিয়ে বলছি, যদি ট্রাই না করে থাকেন, তাহলে করুন, অবশ্যই ভালো লাগবে।

rains
ছবি: স্টার ফাইল ফটো

৪. অন্দরমহল: যারা ঘরে বসে আয়েস করে বৃষ্টি দেখতে চান তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো হয় কোনো বহুতল ভবনে কাঁচের জানালার পাশে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখা। ঢাকায় অনেকগুলো রেস্তোরাঁ আছে যেগুলো বহুতল ভবনের ওপরের দিকে অবস্থিত। চারপাশে কাঁচের জানালা থাকায়, শহুরে বৃষ্টি দেখা সেখানে খুবই আনন্দের। এমন একটি রেস্তোরাঁয়, কিংবা নিজের বারান্দায়, অফিসের জানালার পাশে অথবা ছাদে বসে বৃষ্টি-বিলাস করা যেতেই পারে। সাথে থাকতে পারে আপনার প্রিয় কোনো গান, বই অথবা বাঙালির প্রিয় “গরুর মাংস উইথ ভুনা খিচুরি”।

পাঠক, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে খুব দূরে যেতে হয় না। আপনার ইচ্ছাশক্তি ও সৌন্দর্য উপভোগ করার দৃষ্টিটাই যথেষ্ট। তাই এবার বর্ষায়, অফিস ছুটি না দিলেও, আপনার বৃষ্টি-বিলাস হোক আনন্দের।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago