দার্জিলিংয়ের আন্দোলন ক্রমেই সহিংস হচ্ছে

ক্রমশ সহিংস আন্দোলনের দিকেই যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের পার্বত্য অঞ্চল দার্জিলিং। পার্বত্য অঞ্চলগুলো নিয়ে ‘গোর্খল্যান্ড’ নামে একটি পৃথক রাজ্যের দাবিতে জনমুক্তি মোর্চার ডাকে সেখানে ৬৯ দিন ধরে হরতাল চলছে। স্কুল কলেজে, সরকারি প্রতিষ্ঠান কার্যত বন্ধ। ভরা মৌসুমেও আন্দোলনের কারণে এখন পর্যটন শূন্য শৈল শহর দার্জিলিং।
চলমান আন্দোলনের মধ্যে গত দুদিনে পরপর দুটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ এবং সরকারি বাংলোয় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় কর্তব্যরত একজন সিভিক পুলিশ সদস্য নিহত এবং পাঁচ পুলিশসহ ১০ জন গুরুত্বর আহত হয়েছেন।
শুক্রবার রাতে দার্জিলিংয়ের প্রাণ কেন্দ্র চক বাজারের আইইডি বিস্ফোরণের রেষ কাটতে না কাটতে শনিবার রাতে কালিম্পং থানায় দুষ্কৃতীরা গ্রেনেড হামলা চালায়। হামলাকারীরা মটরসাইকেলে চেপে ঘটনাস্থলে পৌঁছে এবং গ্রেনেড ছুড়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। সিসিটিভি ক্যামেরায় হামলার ঘটনাটি ধরা পড়েছে।
চক বাজারের হামলাস্থল থেকে গোয়েন্দারা জিলেটিন স্টিক, ডেটোনেটর, ব্যাটারিসহ বিস্ফোরণে ব্যবহৃত কিছু জিনিস উদ্ধার করেছে। পুলিশ এই ঘটনায় আন্দোলনরত মোর্চা সভাপতি বিমল গুরংসহ তাদের শীর্ষ তিন নেতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রহিতার মামলা করেছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপর অখিলেশ চতুর্বেদী।
অভিযুক্ত বিমল গুরুং অবশ্য জানিয়েছেন, ‘বিস্ফোরণের সঙ্গে আন্দোলনকারী সংগঠনের কোনও যোগ নেই। এটা কোনও ষড়যন্ত্রেরই অংশ।’
পরপর বিস্ফোরণের ঘটনায় ‘প্রশিক্ষিত বাহিনী’ বা ‘জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা’ আছে বলে মনে করছেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ প্রশাসনের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এর আগেও দার্জিলিংয়ের আন্দোলনের সঙ্গে দেশি বিদেশি কিছু শক্তি যুক্ত আছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন।
গোয়েন্দারাও বিষয়টি নিশ্চিত হতে চাইছেন, আন্দোলনের পেছনে বড়সড় নেটওয়ার্ক কাজ করছে কিনা।
হামলাকারীরা পুলিশ প্রশাসনের ওপর হামলার ছক কষে এগুচ্ছে বলেও মনে করা হচ্ছে এবং পুলিশও আগামীতে হামলা মোকাবিলার জন্য তাদের রণকৌশল বদলাচ্ছে বলেও জানা যাচ্ছে।
Comments