দেশে ধনী গরিবের আয়ের ব্যবধান বেড়েছে
দেশে ধনী ও গরিবের আয়ের ব্যবধান আরও বেড়েছে। গত ছয় বছরে ধনীদের আয় যে হারে বেড়েছে গরিব মানুষের আয় সে অনুযায়ী বৃদ্ধি পায়নি। গতকাল প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খানার আয় ও ব্যয় নির্ধারণ জরিপ ২০১৬-তে দেশের ধনী-গরিব অসাম্যের এই চিত্র উঠে এসেছে।
জরিপের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে সবচেয়ে গরিব ৫ শতাংশ মানুষ যা আয় করে তা দেশের মোট আয়ের মাত্র ০.২৩ শতাংশ। ২০১০ সালে এই অংশের মানুষের আয় দেশের মোট আয়ের ০.৭৮ শতাংশ ছিল। অন্যদিকে সবচেয়ে ধনী ৫ শতাংশ মানুষের আয় ২০১০ সালের মোট আয়ের ২৪.৬১ শতাংশ ছিল। এখন তাদের আয়ের অংশ বেড়ে ২৭.৮৯ শতাংশে এসে পৌঁছেছে।
বিবিএস পরিচালিত জরিপটিতে ধনী গরিবের আয়ের ফারাক বৃদ্ধি পাওয়ার এমন চিত্র উঠে এসেছে। সাধারণত প্রতি পাঁচ বছর অন্তর এই জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিবিএস। ২০১৬ সালে দেশব্যাপী সংগ্রহ করা তথ্য থেকে এবারের জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।
জরিপে আরও দেখা যায়, দেশের মোট জনসংখ্যার নিম্ন অর্ধাংশের (সম্পদ বিবেচনায়) আয় ৬ বছর আগে মোট আয়ের ২০.৩৩ শতাংশ ছিল। এখন তাদের আয় মোট আয়ের ১৯.২৪ শতাংশ। আর ধনী ১০ শতাংশ মানুষের আয় মোট আয়ের ৩৮.১৬ শতাংশ। ২০১০ সালে তাদের আয় ছিল ৩৫.৮৪ শতাংশ।
এর তুলনায় দেশের মোট আয়ের মাত্র ১.০১ শতাংশ করে জনসংখ্যার সবচেয়ে গরিব ১০ শতাংশ মানুষ। ২০১০ সালেও মোট আয়ের ২ শতাংশ এই অংশের মানুষের দখলে ছিল।
খানার আয় ও ব্যয় নির্ধারণ জরিপ ২০১৬ অনুযায়ী দেশের সার্বিক দারিদ্রের হার গত ছয় বছরে ৩১.৫ শতাংশ থেকে কমে ২৪.৩ শতাংশ হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে হত দরিদ্র মানুষের হারও কমে ১৭.৬ শতাংশ থেকে ১২.৯ শতাংশ হয়েছে। এতে দেখা যায় প্রতি বছর অতি দারিদ্র হ্রাসের হার ১.২ শতাংশ। অবশ্য দারিদ্র হ্রাসের এই হার ২০১০ সালের আগের ৫ বছরের তুলনায় মন্থর। ওই ৫ বছরে গড়ে প্রতি বছর ১.৭ শতাংশ হারে অতি দারিদ্র হ্রাস পেয়েছিল।
এতে বোঝা যায় ধনী গরিব নির্বিশেষে সবারই আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আয় বৃদ্ধির এই দৌড়ে গরিবরা পিছিয়ে পড়ছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে বিশেষজ্ঞরা কৃষিক্ষেত্রে আয় বৃদ্ধিতে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। তারা বলছেন, সব স্তরের মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল পৌঁছাতে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির দিকে জোর দিতে হবে সরকারকে।
Comments