দেশে ফিরলো ভারতে বন্দি ৬ কিশোর
পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়াই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভারতে বেড়াতে এসে ধরা পড়ে আটক হয়েছিল তারা। কেউ ভাইয়ের সঙ্গে। কেউ বাবা-মায়ের সঙ্গে গিয়েছিল প্রতিবেশী রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গে। কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করতেই ধরা পড়ে যায় ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে। ফলাফল – বয়স্কদের অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেফতার; আর নাবালক অনুপ্রবেশকারীদের ’সেফ হাউজে’ বন্দি জীবন।
আজ রবিবার সকালে ভারত-বাংলাদেশের হিলি সীমান্ত দিয়ে এই রকম তিন পরিবারের ছয় কিশোরকে পাঠানো হয় তাদের বাংলাদেশি স্বজনদের কাছে।
যদিও প্রত্যেক পরিবারের বড় সদস্যরা আজও অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন কারাগারে। ফরেনার্স অ্যাক্টের ধারায় এখন তাঁদের বিচার চলছে।
ভারতের চাইল্ড লাইনের সম্পাদক সুরুজ দাস দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, “রবিবার সকালে দুই দেশের সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে ছয় কিশোরকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।”
তিনি আরও জানান, “কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ির বাসিন্দা হোসেন আলীর দুই ছেলে দুলাল আলী এবং মোহম্মদ রাজু। হিলি সীমান্ত দিয়ে দুই ছেলে নিয়ে অনুপ্রবেশ করার সময় গ্রেফতার হোন হোসেন আলী এবং তাঁর স্ত্রী। বর্তমানে মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর কারাগারে আটক রয়েছে স্বামী-স্ত্রী।”
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ির আরেক বাসিন্দা জামাল রহমানের ছেলে জাহিদ হাসান। তাকেও দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
একই জেলার হাসানবাদ এলাকার হোসেন আলীর ছেলে মোহম্মদ আলী। ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে বেড়াতে এসেছিলেন তাঁর বড় ভাই। এখন দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলে বন্দি রয়েছেন তিনি।
২০১৫ সালে কাজের সন্ধানে দালাল ধরে অনুপ্রবেশ করার সময় ছেলে নুরুল ইসলামসহ ধরা পড়েন আব্দুল শুকুর। বান্দরবান জেলার বাসিন্দা তিনি। শুকুর এখনও জেলে বন্দি রয়েছেন কিন্তু ছেলে নুরুল ইসলামকে আজ ফেরত পাঠানো হয়।
একইভাবে দেড় বছর আগে আটক কিশোর মোহম্মদ তসলিম আলীকেও আজ বাংলাদেশে ফেরত পাঠায় ভারতের প্রশাসন।
এদিকে, আমাদের বেনাপোল সংবাদদাতা জানান, অনুপ্রবেশের দায়ে ভারতে তিন বছর জেল খাটানোর পর ১৫জন বাংলাদেশি নারীকে শনিবার রাতে বেনাপোল ইমিগ্রেশন থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তাঁরা হলেন: যশোর জেলার পারভীন আক্তার (১৯); নড়াইলের বিউটি খাতুন (২০), জেসমিন সরদার (২১) এবং রানি খাতুন (২৩); ফরিদপুরের সালমা আক্তার (১৮), সুখি খাতুন (২০), নাজমা খাতুন (১৯), শাহনাজ বেগম (১৯) এবং নাসিমা খাতুন (২০) এবং চট্টগ্রামের হাফিজা খাতুন (২০), মালেকা খাতুন (২০), শিরিনা খাতুন (১৮), শ্যামলী খাতুন (১৯), নাজনীন খাতুন (২০) এবং শান্তা খাতুন (১৯)।
বেনাপোল চেক পোস্ট ইমিগ্রেশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওমর শরীফ জানান, “এই ১৫জন নারী তিন বছর আগে ভালো কাজের আশায় যশোর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন।”
পরে, পুলিশ তাঁদেরকে মুম্বাই শহরে আটক করে।
অনুপ্রবেশের কারণে দায়ের করা মামলায় শাস্তি হিসেবে তাঁদেরকে তিন বছর মুম্বাই কেন্দ্রীয় কারাগারে কারা ভোগ করতে হয় বলেও তিনি জানান।
Comments