প্রথম সেশনেই কেল্লাফতে, বিশাল হার বাংলাদেশের
শেষ দিনে সাত উইকেট নিয়ে তিন সেশন টিকে টেস্ট ড্র করা এমনিতেই কঠিন। কঠিন পথ পেরুতে যারা হতে পারতেন সবচেয়ে বড় কাণ্ডারি সেই মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ফিরলেন শুরুতেই। তাদের দেখানো পথেই যেন নেমেছিলেন বাকিরা। হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়ল বাংলাদেশের প্রতিরোধ। প্রথম সেশনেই বাকি সাত উইকেট হারিয়ে মাত্র ৯০ রানে গুটিয়ে গেল বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। ম্যাচ হারল ৩৩৩ রানের বিশাল ব্যবধানে।
দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে গিয়ে এর আগে কখনো ১০০ রানের নিচে অল আউট হয়নি বাংলাদেশ। এবার দলটির কাছে এমন বিপর্যয় আশঙ্কা করেননি কেউ। অথচ হয়েছে সেটাই। তিন উইকেটে ৪৯ রান নিয়ে দিন শুরু করে মাত্র ৪১ রান যোগ করে পড়ল বাকি সাত উইকেট।
চতুর্থ দিন ব্যাটিংয়ে নেমে মরনে মরকেলের বলে স্টাম্প উড়ে গিয়েছিলো মুশফিকুর রহিমের। ক্রিজ ছেড়ে হাঁটাও ধরেছিলেন প্যাভিলিয়নের পথে। কিন্তু নো বলের কারণে বেঁচে যান টাইগার অধিনায়ক। এদিন চোটে পড়ে মরকেল ছিলেন মাঠের বাইরে। বিপদ সামলে টিকে থাকার মঞ্চও ছিল প্রস্তুত। ম্যাচ বাঁচাতে শেষ দিন তার ব্যাটের দিকেই তাকিয়ে ছিল দল। তবে তা কাজে লাগাতে পারলেন কই। রাবাদার অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের লাফিয়ে উঠা বলে ব্যাট ছোঁয়ালেন ১৬ রান করা মুশফিক। স্লিপে অনেকটা লাফিয়ে তা ধরে ফেললেন হাশিম আমলা।
আগের ইনিংসে ফিফটি পাওয়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ মাঝ ব্যাটেই খেলছিলেন। কিন্তু রাবাদার বলে স্টাম্পে টেনে নিয়ে আসলেন বল। এবার আউট হলেন নয় রান করেই। ক্রিজে এসেই লিটন দাস মাহমুদউল্লাহকে বলছিলেন, 'রিয়াদ ভাই, রান নিয়ে বেশি হাঁপানোর দরকার নাই।' টিকে থাকার পণ ছিল এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানের। তবে ‘রান করতে মানা’ এমন অ্যাপ্রোচ নিতে গিয়ে রাবাদার স্টাম্পের বলই প্যাডআপ করতে গেলেন। ফলাফল এলবিডব্লিউ। ঠিক উল্টো অ্যাপ্রোচ নিতে গিয়ে কাটা পড়েন সাব্বির রহমান। কেশব মহারাজের স্টাম্পের বলেই গেলেন সুইপ করতে। লাইন মিস করে তা লাগল তার প্যাডে। ঘূর্ণির জাদুতে তাসকিন আহমেদকেও আউট করেন বাঁহাতি মহারাজ।
শেষ দুই উইকেট নিয়ে কি আর করতে পারতেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে এদিন তার ব্যাটেই দেখা গেল খানিকটা প্রতিরোধ। ১৫ রান করে তিনি অপরাজিত থাকলেন এক প্রান্তে। শফিউল হয়েছেন রান আউট। আর মোস্তাফিজকে নিজের চতুর্থ শিকার বানান কেশব মহারাজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস: ৪৯৬/৩ (ডিক্লে) (এলগার ১৯৯, আমলা ১৩৭; শফিউল ১/৭৪)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৩২০/১০ (মুমিনুল ৭৭, মাহমুদউল্লাহ ৬৬; মহারাজ ৩/৯২)
দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় ইনিংস: ২৪৭/৬ (ডিক্লে) (ডু প্লেসি ৮১, বাভুমা ৭১; মুমিনুল ৩/২৭)
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস: ৯০/১০ ( ইমরুল ৩২, মুশফিক ১৬; মহারাজ ৪/২৫)
Comments