প্রাণ বাঁচাতে নিজের প্রাণ দিলেন রেলকর্মী

বাদল মিয়া

রেল দুর্ঘটনা থেকে একটি মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেই প্রাণ হারিয়েছেন রেলওয়ের এক কর্মী। গতকাল রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোডের পাশে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।

নিহত বাদল মিয়া (৫৫) বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের কারিগরি সহকারী ছিলেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও সহকর্মী সোহেল রানা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় একদল রেলকর্মী রেল লাইন মেরামত করার সময় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

একজন নারী ও পাঁচ বছরের আশপাশের একটি মেয়ে শিশু রেল লাইন পার হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেসময় দ্রুতগামী একটি ট্রেন তাদের দিকে আসছিলো।

কিন্তু রেল লাইন পার হতে অস্বাভাবিকরকম বেশি সময় নিচ্ছিলো তারা। বিপদ বুঝতে পেরে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক লোক পেছন থেকে তাদেরকে ধাক্কা দেন। এতে দুই লাইনের মাঝখানেই পড়ে যান তারা।

সোহেল বলেন, মেয়েটি উঠে দাঁড়ালেও ঘটনার আকস্মিকতায় দিশেহারা হয়ে সে আবার লাইনের মাঝখানে চলে আসে।

“সবাই চিৎকার করে তাকে সরে যেতে বললেও দুই লাইনের মাঝখানেই দাঁড়িয়ে থাকে সে।”

এসময় বাদল লাফিয়ে গিয়ে মেয়েটিকে রেল লাইনের বাইরে ঠেলে দেয়। কিন্তু ততোক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। মেয়েটি বেঁচে গেলেও ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।

স্থানীয়রা জানান, ওই এলাকায় রেল লাইন পারাপারের কোন ব্যবস্থা নেই। কিন্তু ঝুঁকি উপেক্ষা করে অনেকেই পারাপার হন।

নিহত বাদলের বাড়ি ময়মনসিংহ। তার ভাই সিদ্দিকুর জানান, ১৮ বছরের বেশি সময় রেলওয়েতে চাকরির পর সম্প্রতি তিনি ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের পাশে একটি কোয়ার্টার বরাদ্দ পেয়েছিলেন। আগামী ফেব্রুয়ারিতে পরিবার নিয়ে ওই বাসায় ওঠার কথা ছিলো তার।

সিদ্দিকুর জানান, তার ভাইয়ের পরিবারে পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। একমাত্র তার রোজগারের ওপর পুরো পরিবারটি নির্ভরশীল ছিলো।

ঢাকা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়াসিন ফারুক বলেন, দুর্ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Click here to read the English version of this news

Comments

The Daily Star  | English
us tariff rates by country

Higher US tariffs take effect on dozens of economies

US duties rose from 10 percent to levels between 15 percent and 41 percent for a list of trading partners

1h ago