‘বৃক্ষ মানব’ রোগে ভুগছে নেত্রকোনার শাহানা
নেত্রকোনার ১০ বছরের একটি মেয়ে ‘ট্রি ম্যান সিনড্রোম’ নামে পরিচিত বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তার মুখের চামড়া গাছের বাকলের মত হয়ে যাচ্ছে। ধারনা করা হচ্ছে, শাহানা দেশের মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত প্রথম মেয়ে।
শাহানা খাতুনের কৃষক বাবা শাহজাহান মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, শুরুতে তিনি এটাকে ঘামাচি মনে করেছিলেন। কিন্তু এটা যখন ছড়িয়ে পড়ে বাড়তে শুরু করে তখন তিনি বুঝতে পারেন এটা আরও জটিল সমস্যা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ড সামন্ত লাল সেন বলেন, “এটা দেখে খুলনার আবুল বজন্দরের ‘বৃক্ষ মানব’ রোগ বলেই মনে হচ্ছে।”
তিনি বলেন, শাহানার সমস্যা বের করতে আগামীকাল ছয় সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হবে। তিনি আরও জানান, বিনা খরচে তার চিকিৎসা করা হবে।
স্থানীয় এক সাংবাদিকের পরামর্শে শাহজাহান মিয়া এই সপ্তাহের শুরুতে তার মেয়েকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। বালুছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী শাহানা। চার বছর আগে তার মা মারা গেছে।
তার বাবা জানান, এক বছর বয়স থেকেই শাহানার এই সমস্যা শুরু হয়। তখন এগুলোকে ঘামাচি মনে করা হয়েছিল। তিন বছর আগে এগুলো বাড়তে শুরু করে।
এই একই হাসপাতালে বৃক্ষ মানব হিসেবে পরিচিত ২৬ বছর বয়সী আবু বজন্দরে চিকিৎসা করা হয়েছে। এখানে অন্তত ১৮ বার অস্ত্রোপচার করা হয়েছে তার।
আবু বজন্দরের রোগটির নাম ‘এপিডারমোডিসপ্লেসিয়া ভেরাসিফওর্মিস’। অত্যন্ত বিরল এই রোগে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ গাছের বাকলের মত অংশ দিয়ে ঢেকে যায় যা অনেকটা গাছের মত দেখা যায়। মনে করা হয় পৃথিবীতে এই রোগাক্রান্ত চতুর্থ ব্যক্তি তিনি।
এখন পর্যন্ত এই রোগের কোন চিকিৎসা আবিষ্কৃত হয়নি। ২০০৭ সালের মার্চ মাসে রোমানিয়ায় এক লোকের ট্রি ম্যান সিনড্রোম সনাক্ত হয়। ওই একই বছর নভেম্বরে ইন্দোনেশিয়ায় ৩৫ বছর বয়সী এক জেলে ও তার দুই বছর পর আরেকজনের ট্রি ম্যান সিনড্রোম সনাক্ত হয়।
২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে ইন্দোনেশিয়ার ওই জেলে মারা যান। সার্জারি করে তার চিকিৎসা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে ওই সমস্যাটি ফিরে আসে।
Comments