মনভোলা আইনস্টাইন

বিজ্ঞানীরা সাধারণত গুরুগম্ভীর মানসিকতার হয়ে থাকেন। তবে এর ব্যতিক্রম থাকাটাও অসম্ভব নয়! এই ব্যতিক্রমদের দলে ছিলেন পদার্থবিজ্ঞানের আপেক্ষিকতা তত্ত্বের জনক বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন। তাঁর ভেতরে গুরুগম্ভীর মানসিকতার চেয়ে ছিল আত্মভোলা মন। খুব দ্রুতই ও সহজেই তিনি ভুলে যেতেন নিজের প্রয়োজনীয় কোন কিছুকে। গবেষণার বিষয়ে অত্যাধিক নিমগ্নতার কারণেই এমনটা হত তাঁর। ভাবুক মনের হলেও তিনি ছিলেন চমৎকার রসিক ও মজার মানুষ। তাঁর জীবনে নানা সময়ে ঘটে যাওয়া মজার ঘটনাগুলোর কারণে অনেকেই বলেন ‘আত্মভোলা আলবার্ট আইনস্টাইন’!

মেয়ের বিয়ে

আইনস্টাইনের মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে সবাই চার্চে যাচ্ছিলেন। যেতে যেতে হঠাৎ তিনি তাঁর মেয়েকে বললেন, 'তুমি চার্চের দিকে যাও; আমি ল্যাবে গিয়ে আমার এই কলমটি রেখে আসছি'। মেয়ে মানা করা সত্ত্বেও তিনি ৩০ মিনিটের কথা বলে ল্যাবে গেলেন কলম রাখতে। অনেক সময় অতিক্রম হবার পরেও যখন আইনস্টাইন ফিরলেন না তখন আত্মীয়-স্বজন তাঁকে ছাড়াই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে ফেলেন। সাতদিন পর তাঁর মেয়ে বাসায় এসে দেখে বাবা তখনো ফেরেননি! তারপর মার কথা শুনে বাবার খোঁজে মেয়ে গেলেন ল্যাবে। গিয়ে দেখলেন বাবা আইনস্টাইন একটি কলম হাতে নিয়ে বোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে কী যেন ভাবছেন! মেয়ে জিজ্ঞাসা করেন, এখানে কী করো তুমি? পরক্ষণে আইনস্টাইন উত্তর দেন, ‘মা তুমি চার্চে যাও, আমি এই কাজটি ১০ মিনিটের মধ্যে শেষ করে আসছি তোমার বিয়েতে’!

খেয়ালি মন

নিজের কাজ সেরে একবার আইনস্টাইন বাসায় ফিরে বাইরে থেকে দরজায় কড়া নাড়লেন। তাঁর স্ত্রী ভাবলেন কেউ হয়তো কোন প্রয়োজনে আইনস্টাইনকে খুঁজতে এসেছেন। তিনি বেশ বিরক্ত স্বরে উত্তর দিলেন, আইনস্টাইন বাসায় নেই! মনভোলা আইনস্টাইন পাল্টা উত্তর না দিয়ে ফিরে যান উল্টো পথে!

ট্রেনের টিকেট

ট্রেনে চড়ে আইনস্টাইন যাচ্ছিলেন বেড়াতে। টিকেট চেকার এসে আইনস্টাইনের টিকেট দেখতে চাইলেন। কিন্তু, তিনি তাঁর টিকেট খুঁজে পাচ্ছিলেন না। ধীরে ধীরে বিড়বিড় করেছিলেন, কোথায় যে রাখলাম টিকেটটা! চেকার বলে উঠলেন, 'স্যার, আমি আপনাকে চিনতে পেরেছি। আপনি নিশ্চয় টিকেট কেটেই উঠেছেন। আপনাকে টিকেট না দেখালেও চলবে'।

আইনস্টাইন কিছুটা চিন্তিত মুখে বললেন, ‘না, না, ওটা আমাকে খুঁজে বের করতেই হবে! না পেলে আমি জানব কী করে যে আমি কোথায় যাচ্ছিলাম!’

টেলিফোন নাম্বার

এক সহকর্মী এসে আইনস্টাইনের কাছে তাঁর টেলিফোন নাম্বারটা চাইলেন। তিনি একটি টেলিফোন গাইড থেকে নিজের নাম্বারটা বের করার চেষ্টা করলেন। এদিকে সময় নষ্ট হচ্ছে দেখে সহকর্মী বিরক্ত হয়ে বললেন, ‘কী ব্যাপার, নিজের টেলিফোন নাম্বারটা মনে নেই আপনার!’ এক কথায় আইনস্টাইন পাল্টা যুক্তিতে বলেছিলেন, ‘না তো, তার দরকারই বা কি? যেটা টেলিফোন গাইডে লেখা আছে, সেটা আমি অযথাই মুখস্থ করে মস্তিষ্ক খরচ করবো কেন?’

Comments

The Daily Star  | English

World press freedom day: 266 journalists face criminal cases so far

The repression of journalists has taken a new form since August 5, 2024.

8h ago