মায়ের প্রেরণাতেই বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী এডিসন

মায়ের অনুপ্রেরণা পথ দেখায় সন্তানকে। মা-বাবার সঠিক দিকনির্দেশনায় প্রতিষ্ঠা লাভ করে সন্তানের সফলতা। যারা শৈশবেই পিতৃহারা হন, মায়ের মমতা আরো বেশী স্পর্শ করে তাদের হৃদয়কে। ছোটবেলা থেকেই মায়ের প্রেরণা, ভালোবাসা, স্নেহ-মমতা এবং আদর্শিক দিকনির্দেশনা বদলে দিতে পারে সন্তানের পথচলাকে। আলোকিত করতে পারে আগামীকে। এমনিভাবেই মায়ের অনুপ্রেরণায় বৈদ্যুতিক বাতি আবিষ্কার করে গোটা পৃথিবী আলোকিত করেছিলেন টমাস আলভা এডিসন। এছাড়াও সফল বিজ্ঞানী হিসেবে গ্রামোফোন, ভিডিও ক্যামেরাসহ আরো অনেক যন্ত্র আবিষ্কার করেছিলেন তিনি। আধুনিক শিল্পায়নের যুগান্তকারী উন্নতি ঘটেছিল তাঁর হাত ধরেই।

ছেলেবেলা থেকেই কৌতূহলী মন নিয়ে বেড়ে উঠেছিলেন আলভা এডিসন। মাত্র পাঁচ-ছয় বছর বয়স থেকেই বিশ্বখ্যাত এই বিজ্ঞানী জন্ম দিয়েছেন মজার সব কাণ্ড-কারখানা। এমন কিছু ঘটনা অনেকেরই জানা। হাঁস যদি ডিম থেকে বাচ্চা ফোটাতে পারে; তবে মানুষ কেন পারে না? এমন কৌতূহল নিয়ে তিনি একবার হাঁসের খাঁচায় ঢুকে বসে ছিলেন চুপচাপ। হাঁস কীভাবে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটায় সেটাই দেখছিলেন নিবিড়ভাবে। সেই শৈশবেই তাঁর অকাট্য যুক্তি ছিল এমন- হাঁসের নিচে ডিম রাখলে তা থেকে বাচ্চা বের হলে আমার পেট থেকে কেন হবে না?

লেখাপড়ায় অনেকটাই দুর্বল ছিলেন এডিসন। স্কুলে পড়াকালীন পরীক্ষায় একবার ফলাফল খারাপ করায় চিঠি দিয়ে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। তিনি যে খারাপ কিছু করেছিলেন তা অনুমান করতে পেরে চিঠিটি দেখিয়েছিলেন তাঁর মার কাছে। চিঠি পেয়ে মা কী জানি ভাবছিলেন সজল দৃষ্টিতে! তারপর এডিসনের সামনেই উচ্চস্বরে পড়তে লাগলেন চিঠিটা। ‘আপনার পুত্র খুব মেধাবী, এই স্কুলটি তার জন্য অনেক ছোটো এবং এখানে তাকে শেখানোর মতো যথেষ্ট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক নেই। দয়া করে আপনি নিজেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করুন’। চিঠির কথা শুনে এডিসনের চোখ ভরে উঠেছিল অশ্রুতে।

তখন থেকে মায়ের কাছেই শিক্ষা নেওয়া শুরু করলেন তিনি। এরপর অতিবাহিত হয়েছে অনেক বছর। টমাস আলভা এডিসন হয়ে উঠেন বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী, শিল্পপতি এবং মার্কেটিং জগতে সফল উদ্যোক্তা। তখন আর জীবিত ছিলেন না মা। নিজের চোখে দেখে যেতে পারেননি সন্তানের বিশ্বজোড়া সাফল্যগাথা।

একদিন কি এক কাজে পুরনো কাগজ নাড়াচাড়া করছিলেন এডিসন। ভাঁজ করা এক কাগজের দিকে হঠাৎ চোখ পড়ল তাঁর। হাত বাড়িয়ে নিয়ে পড়তে শুরু করলেন সেটি। কাগজটি পড়তে পড়তে তিনি সেদিন ফিরে গিয়েছিলেন বহু বছর আগে স্কুল থেকে পাঠানো সেই চিঠিতে। সেটা পড়তে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছিল অদ্ভুত এক অনুভূতির! অজানা এক ব্যথায় তাঁর বুকে ভেসে গিয়েছিল চোখের জলে। সেই চিঠিতে লেখা ছিল- ‘আপনার সন্তান স্থূলবুদ্ধিসম্পন্ন, সে এই স্কুলের উপযুক্ত নয়, আমরা কোনোভাবেই তাকে আমাদের স্কুলে আর আসতে দিতে পারি না’।

তারপর এডিসন তাঁর ডায়রিতে লিখেন, ‘টমাস আলভা এডিসন একজন স্থূলবুদ্ধিসম্পন্ন শিশু ছিলেন। একজন আদর্শবান মায়ের অনুপ্রেরণায় তিনি শতাব্দীর সেরা মেধাবী হয়ে উঠেন’।

Comments

The Daily Star  | English

Central bank at odds with BPO over Nagad’s future

The discord became apparent after Faiz Ahmed Taiyeb, special assistant to the chief adviser with authority over the Ministry of Posts, Telecommunications and IT, sent a letter to the BB governor on May 12 and posted the letter to his Facebook account recently

2h ago