মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বলবে সরকার

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলমান রোহিঙ্গাদের সমস্যার টেকসই সমাধানের জন্য বাংলাদেশে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের অবিলম্বে ফিরিয়ে নিতে দেশটির প্রতি দাবি জানাবে ঢাকা।
সীমান্ত পার হয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করা এই রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের কুটুপালাং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্থায়ী বাসস্থান বানাতে শুরু করেছে। বিজিবির টহল জোরদার করার পরও ঢুকে পড়ছে রোহিঙ্গারা। ছবি: মোহাম্মদ আলি জিন্নাত

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলমান রোহিঙ্গাদের সমস্যার টেকসই সমাধানের জন্য বাংলাদেশে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের অবিলম্বে ফিরিয়ে নিতে দেশটির প্রতি দাবি জানাবে ঢাকা।

কূটনৈতিক ও সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে অং সান সু চির বিশেষ দূত উ কিউ তিন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর কাছে ঢাকা তার গভীর উদ্বেগের বিষয়টি তুলে ধরবে। তিন দিনের সফরে এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন তারা। দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় বিশেষ করে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনার জন্য একটি কূটনৈতিক প্রতিনিধি দল নিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় তারা ঢাকায় পৌঁছান।

আজ বিকাল ৬টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কিউ তিনের সাক্ষাতের কথা রয়েছে।

প্রতিনিধি দলটি আজ দুপুর দেড়টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। পররাষ্ট্র সচিব মো শহিদুল হক ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন।

রোহিঙ্গারা যে মিয়ানমারের নাগরিক এবং রাখাইন রাজ্যের সমস্যা সমাধানের দায়িত্বও যে মিয়ানমারের, বৈঠকে সে ব্যাপারে ঢাকা তার অবস্থান স্পষ্ট করবে। সূত্রে জানা গেছে, নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত সব ধরনের রোহিঙ্গাদের অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের প্রতি দাবি জানাবে বাংলাদেশ।

সেই সঙ্গে মিয়ানমারের প্রতিনিধিদের পূর্বের দুই দেশের মধ্যকার দুইটি চুক্তির কথাও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে। দুই চুক্তির মধ্যে ১৯৯২ সালের চুক্তিতে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিজ দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলেছিল।

তবে বৈঠকে আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে এখনও নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি মিয়ানমার। গত সোমবার দেশটির প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র জাও হতে বলেন তাদের প্রতিনিধি দলটি ‘সীমান্তের পরিস্থিতি’ নিয়ে আলোচনা করবেন।

গত অক্টোবরে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ অভিযান শুরুর পর থেকে প্রায় ৬৫ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র গত সপ্তাহেই প্রায় ২২ হাজার বাংলাদেশে ঢুকেছে বলে জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থার বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।

তবে গত ৩০ ডিসেম্বর দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে রয়টার্সকে বলা হয়েছে বাংলাদেশে মাত্র ২৪১৫ জন মিয়ানমারের নাগরিক রয়েছেন এবং এদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে তারা আলোচনা করতে চান। তবে বাংলাদেশ বিভিন্ন সময় তিন থেকে পাঁচ লাখ অবৈধভাবে বসবাসকারী রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। এছাড়াও গত প্রায় দুই দশক থেকে ৩২ হাজার নিবন্ধিত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছেন।

Click here to read the English version of this news

Comments