মোনালিসার হাসির রহস্য উদঘাটন করলো বিজ্ঞান!

ছবি: এএফপি

মোনালিসা চিত্রকর্মটি যত পুরনো এটা নিয়ে বিতর্কও তত পুরনো। সাধারণ মানুষ তো বটেই বড় বড় শিল্প বোদ্ধারাও মাথার চুল ছিঁড়েছেন মোনালিসার মুখের অভিব্যক্তির রহস্য উদঘাটনে। কেউ বলেন মোনা লিসাকে হাসতে দেখা যাচ্ছে, তো কেউ এর বিরোধিতা করেন। মোনা লিসা কি তবে এতটাই রহস্যময়?

এর উত্তরে বিজ্ঞান বলছে, “হয়ত না”।

মোনালিসার রহস্য ভেদে বিশেষ এক ব্যবস্থা নেন স্নায়ু বিজ্ঞানীরা। আর এতে যা ফলাফল এসেছে তা দেখে তারা অবাক না হয়ে পারেননি। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের প্রায় শতভাগই বলেছেন মোনা লিসার মুখের অভিব্যক্তি হাসির।

ইতালীয় ভাষায় লা জোকোন্দা বা ইংরেজিতে মোনালিসা যে নামেই ডাকা হোক না কেন ছবিটি এক নজরে দেখে বেশিরভাগ মানুষই বলেন ছবির ওই নারীর অভিব্যক্তি হাসির। তবে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলে অনেকেই আবার পূর্বের অবস্থান থেকে সরে এসে বলেন তার চেহারায় অবজ্ঞা বা দুঃখ ভাব রয়েছে।

কয়েকশ বছর পুরনো এই ধাঁধাঁটাকে মাটিচাপা দিতে, চেহারার অভিব্যক্তি বুঝতে আমাদের মস্তিষ্ক যে বিষয়গুলো অবচেতনভাবেই কাজে লাগায় সেগুলোর সূত্র ধরে এগিয়েছেন গবেষকরা।

তারা প্রথমে যে কাজটি করেন তা হলো ষোড়শ শতাব্দীর ছবিটির সাদাকালো একটি কপি সূক্ষ্মভাবে সম্পাদনা (এডিট) করে মুখের ভাজগুলো একটু এদিক সেদিক করে এমন চারটি ছবি তৈরি করেন যাতে তাকে মূল ছবির চেয়ে বেশি হাসিখুশি লাগে। সেই সাথে আরও চারটি ছবি তৈরি করা হয় যেখানে তাকে তুলনামূলকভাবে দুঃখী বলে মনে হয়।

এখন মূল ছবির একটি কপি ও সম্পাদনা করা আটটি ছবি নিয়ে একটি ব্লক সাজানো হয়। গবেষণায় অংশ নেওয়া ১২ জনকে এই ছবির ব্লকটি ৩০ বার দেখানো হয়। তবে প্রত্যেক বার দেখানোর আগে ছবিগুলোর বিন্যাস বদলে দেওয়া হয়। প্রত্যেকবার ছবি দেখানোর সময় তাদের জিজ্ঞাসা করা হয় কোন ছবিটিতে মোনা লিসাকে হাসতে আর কোন ছবিতে মুখ ভার করে থাকতে দেখা যাচ্ছে।

“এই প্রশ্নের পর আমরা ভেবেছিলাম ৯টি ছবির মধ্যে আসল ছবিটি কপিটি দেখে তারা হয়ত বিভ্রান্তিতে পড়তে পারেন। তবে আমরা অবাক হয়ে দেখলাম দা ভিঞ্চির আঁকা ছবিটি দেখে প্রায় ৯৭ শতাংশ ক্ষেত্রে তারা বলেছেন ছবির ওই নারী হাসছেন।”

গবেষণার পরের দফায় আসল মোনা লিসার সঙ্গে আটটি ‘দুঃখী মোনালিসা’ দেখানো হয়। এবারের এডিট করা ছবিগুলোতে তাকে আগের বারের চেয়েও বেশি দুঃখী করে দেখানো হয়। কিন্তু এবারও আসল ছবির নারীকে হস্যোজ্জ্বল দেখাচ্ছে বলে জানিয়ে দেন স্বেচ্ছাসেবকরা।

বিজ্ঞানীরা এ থেকে সিদ্ধান্তে আসেন, “মানুষের মস্তিষ্কে সুখ বা দুঃখ মাপার জন্য কোন সুনির্দিষ্ট মাপকাঠি থাকে না। এক্ষেত্রে পরিস্থিতি (কনটেক্সট) বড় ভূমিকা পালন করে।”

গবেষক দলের প্রধান বলেন, “আমাদের মস্তিষ্ক খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। আমরা পুরো বিষয়টি এক নজর দেখি আর পূর্বের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেই।” মানসিক রোগ বুঝতে এই গবেষণা কাজে দিতে পারে বলেও মনে করছেন তিনি।

Click here to read the English version of this news

Comments

The Daily Star  | English

Pvt sector sidelined in tariff talks

Business leaders and trade experts have expressed frustration over the government’s handling of negotiations with the United States on punitive tariffs, warning that poor preparation, lack of transparency, and minimal private-sector involvement have left Bangladesh vulnerable in its most crucial export market.

8h ago