শক্তি ফাউন্ডেশন পেল মাইক্রোসফট ইয়ুথ স্পার্ক গ্র্যান্ট

Microsfot_Shakti
সুবিধাবঞ্চিত নারীদের উন্নয়নে এক হয়ে কাজ করার লক্ষ্যে মাইক্রোসফট বাংলাদেশ ও শক্তি ফাউন্ডেশনের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরের সময় উপস্থিত ছিলেন শক্তি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক ডা. হুমায়রা ইসলাম, শক্তি ফাউন্ডেশনের প্রকল্প উপদেষ্টা ইমরান আহমেদ, সাউথ ইস্ট এশিয়া নিউমার্কেটস-এর প্রেসিডেন্ট মিশেল সিমনস এবং মাইক্রোসফট বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশির কবির।

সুবিধাবঞ্চিত নারীদের ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখায় ফিন্যান্সিয়াল অ্যাওয়ার্ড বিভাগে দেশীয় অলাভজনক প্রতিষ্ঠান শক্তি ফাউন্ডেশনকে মাইক্রোসফট ইয়ুথ স্পার্ক গ্র্যান্ট দিলো মাইক্রোসফট ফিলানথ্রপিস।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাইক্রোফিন্যান্স, স্বাস্থ্য ও কৃষিকাজে সহায়তার মাধ্যমে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত নারীদের সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়নে কাজ করে শক্তি ফাউন্ডেশন। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অ্যাকসেসটুইনফরমেশন (এটুআই) ও মাইক্রোসফট বাংলাদেশ মিলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ৫,২০০টি ডিজিটাল সেন্টারে কাজ করে এমন নারীদের প্রযুক্তি বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেয়ার কাজে নিয়োজিত রয়েছে ফাউন্ডেশনটি।

বিজ্ঞপিত্তটিতে আরও বলা হয়, এসব নারীরা যেনো পরবর্তীতে প্রযুক্তিবিষয়ক উদ্যোক্তা হয়ে আত্মনির্ভরশীল হতে পারেন সে লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দেয়ার মাধ্যমে এটুআই ও মাইক্রোসফট বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে শক্তি ফাউন্ডেশন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আরও বেশি সংখ্যক নারীর সামাজিক ও আর্থিক উন্নয়ন সাধনের লক্ষ্যে শক্তি ফাউন্ডেশনকে সহায়তা করবে মাইক্রোসফটের ইয়ুথ স্পার্ক গ্র্যান্টটি। এতে করে নারীরা কম্পিউটার মেরামত ওপ্রযুক্তিগত সেবামূলক ব্যবসা পরিচালনা করতে সক্ষম হবেন।

প্রযুক্তি বিষয়ক উদ্যোক্তা তৈরির এ প্রোগ্রামে নারীদের কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের ব্যবহার, মেরামত ও সমস্যা সমাধানে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে তাঁদের শক্তি ফাউন্ডেশনের মাইক্রোফিন্যান্স প্রোগ্রামের অন্তর্ভূক্ত করা হয় এবং তাঁদের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ নিশ্চিত করে যাতে তাঁরা ছোট আইটি রিপেয়ার সেন্টার প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আওতাধীন দেশের ৫,২০০টি ডিজিটাল সেন্টারগুলোকে আইটিরিপেয়ার সেন্টারে পরিণত করতেই শক্তি ফাউন্ডেশন এর এমন পদক্ষেপ।

শক্তি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক ডা. হুমায়রা ইসলাম বলেন, “প্রযুক্তি বিষয়ক উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে সুবিধাবঞ্চিত নারীদের প্রযুক্তিতে দক্ষ করে তোলার মাধ্যমে মূলত তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীনতা এনে দেয়ার বিষয়টি একটি সার্বিক পদক্ষেপ। এখন পর্যন্ত ৩,৩০০জন নারীকে প্রযুক্তি বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিয়েছে মাইক্রোসফট বাংলাদেশ এবং এ সকল নারীর মধ্য থেকে প্রথম ৫০জন নারীকে শক্তি ফাউন্ডেশন এমনভাবে প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ করে তুলেছে যে তারা চলতি বছরের মার্চের মধ্যে ডিজিটাল সেন্টারগুলোতে নিজেদের আইটি রিপেয়ার ব্যবসা চালু করতে পারবেন।”

‘উইমেন এন্টারপ্রিনিউরস ইন টেকনোলজি ফর ডিজিটাল সেন্টারস (উইন্ডোজউইমেন)’ শীর্ষক পদক্ষেপের আওতায় একসঙ্গে কাজ করার লক্ষ্যে গত বছরের জানুয়ারি মাসে চুক্তি স্বাক্ষর করে মাইক্রোসফট বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এটুআই। উক্ত প্রোগ্রামটি নারীদের কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার বিষয়ক ডিজিটাল শিক্ষায় শিক্ষিত করানো এবং সরকারিভাবে পরিচালিত ডিজিটাল সেন্টারগুলোর সঙ্গে কার্যকর যোগসূত্র তৈরিতে কাজ করছে। এতে করে এসকল প্রশিক্ষিত নারীরা নিজ নিজ অঞ্চলে আইটি সেবা দিতে পারবেন। দেশের সব ইউনিয়ন, জেলা এবং শহরের ওয়ার্ডগুলোতে অবস্থিত সেন্টারগুলো থেকে সরকারি ও বেসরকারি চাকরিপ্রাপ্তি ও উদ্যোক্তা তৈরিতে নারীদের সহায়তা প্রদান করা হয়।

মাইক্রোসফট বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশির কবির বলেন, “পরিবারের উন্নতি ও দেশীয় অর্থনীতিতে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেশের সুবিধাবঞ্চিত নারীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরাধীনতার জাল থেকে বের করে আনতে শক্তি ফাউন্ডেশনের মতো অলাভজনক প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা করতেই ইয়ুথ স্পার্ক গ্র্যান্ট দিয়েছে মাইক্রোসফট।”

“প্রযুক্তি বিষয়ক উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে নারীদের প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ করে তোলা ও ক্ষমতায়ণের ক্ষেত্রে আমি দৃঢ়-প্রতিজ্ঞ। এছাড়া দেশের এমএফআই নারীদের মাঝে নতুন প্রযুক্তি পরিচয় করানোর ব্যাপারে আমরা উচ্ছসিত। আগামী ২০১৮ সালের জুন মাসের মধ্যে দেশের ৫,২০০টি ডিজিটাল সেন্টারে ৫,২০০জন নারী তাদের নিজস্ব আইটি ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন, এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি।”

গত বছর বিশ্বের ৫৫টি অঞ্চলের ১০০টি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান (এনপিও)-কে গ্র্যান্ট দিয়েছে মাইক্রোসফট ফিলানথ্রপিস। উল্লেখ্য, ১০০টি এনপিও-এর মধ্যে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, চীন, হংকং, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, শ্রীলংকা, তাইওয়ান ও ভিয়েতনামসহ মোট ২৯টি দেশের এনপিও অর্ন্তভূক্ত। গ্র্যান্টের অন্তর্ভূক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো যেনো বিশ্বব্যাপী কম্পিউটারবিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার ঘটাতে পারে সে লক্ষ্যে মাইক্রোসফট তিন বছরে ৭৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা প্রদান করে থাকে। অর্থ সহায়তা, কন্টেন্ট ও অন্যান্য প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে মাইক্রোসফট এ সকল অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মিলে কাজ করে। বর্তমান যুগের প্রযুক্তি নির্ভর অর্থনীতিতে সফলতা আনতে তরুণ, নারী ও সুবিধাবঞ্চিতদের মধ্যে কম্পিউটার বিষয়ক জটিল চিন্তা ও সমস্যা সমাধানের মতো দক্ষতা তৈরির লক্ষ্যেই মাইক্রোসফটের এমন পদক্ষেপ।

মাইক্রোসফট এশিয়ার ফিলানথ্রপিস ডায়ানা বিটলার বলেন, “অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করাই মাইক্রোসফটের উদ্দেশ্য। আমরা আশা করি, মাইক্রোসফট ইয়ুথ স্পার্ক গ্র্যান্ট সত্যিকার অর্থে এ সকল জনগোষ্ঠীর সার্বিক উন্নয়নে মহত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে।”

Comments

The Daily Star  | English
rooppur-nuclear-power-plant

Power division gets 30% lower budget allocation

The allocation for the power division in the national budget for fiscal year 2025-26 is around 30 percent less than that of the previous fiscal year, while it has been nearly doubled for the energy and mineral resources division. .The government has decided to cut electricity production c

3h ago