৬০ কেজি ওজনের পা নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে এক নারী

৬০ কেজি ওজনের পা নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিছানায় রেজিয়া বেগম। ছবি: স্টার

প্রতিবেশী আর সব কৃষক পরিবারের স্ত্রীদের মতই অত্যন্ত পরিশ্রমী ছিলেন সিলেটের রেজিয়া বেগম (৪০)। কৃষক পরিবারের হওয়ায় স্বামীর কাজে উদয়াস্ত তাকেই সাহায্য করতে হত। কিন্তু ১৮ বছর আগে দ্বিতীয় মেয়ের জন্মের পর তিনি প্রথম বুঝতে পারেন কোথাও একটা সমস্যা হচ্ছে।

এই ‘সমস্যা’ গত প্রায় দুই দশকে তার জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। হাঁসমুরগি বা গবাদি পশু লালনপালন থেকে ঘরদোরের কাজে সেই অক্লান্ত রেজিয়া বেগম এখন বলতে গেলে কোনও কাজই করতে পারেন না। নিজের ছোটখাটো প্রয়োজনেও অন্যের সাহায্যের ওপর নির্ভর করতে হয়। গরীব পরিবারটির জন্য এখন অনেকটাই বোঝা হয়ে গেছেন তিনি।

রেজিয়া তার সমস্যার কথা জানাতে গিয়ে বলেন, “দ্বিতীয় মেয়ের জন্মের সময় খেয়াল করি আমার পা ফুলে যাচ্ছে। অল্প চিকিৎসাতে সমস্যাটা সেরেও গিয়েছিল। কিন্তু বছর যেতে না যেতেই এটা আবার ফিরে আসে।”

তার ডান পা ফুলতে ফুলতে এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। তার আত্মীয়রা বলেন, রেজিয়ার পায়ের ওজন প্রায় দুই মণ। তাকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিতে অন্তত তিন জন লোকের সাহায্য প্রয়োজন হয়।

রেজিয়ার দেবর আনা মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “সে পরিবারের জন্য বোঝায় পরিণত হয়েছে। বাসার কোনও কাজ তাকে দিয়ে হয় না।”

রেজিয়া বেগমের পায়ের চিকিৎসা করতে কম চেষ্টা করেননি তার স্বামী আব্দুল মালেক। সিলেটের ওসমানি নগর থানার ইয়োলা তেল গ্রামের এই দরিদ্র কৃষক গত ১৮ বছর ধরে বহু ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেছেন। কিন্তু কেউ তাকে আশার আলো দেখাতে পারেনি।

সম্প্রতি তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মুক্তামণির চিকিৎসার কথা জানতে পারেন। খবর শোনার পর শেষ আশা হিসেবে গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্ত্রীকে নিয়ে আসেন। হাসপাতালের বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের ব্লু ইউনিটে তাকে ভর্তি করা হয়েছে।

বার্ন ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক ড সামন্ত লাল সেন প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন রেজিয়া বেগমের এলিফেন্টিসিস হয়েছে। সার্জারি ও পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে তার রোগের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী ড সামন্ত লাল।

Click here to read the English version of this news

Comments

The Daily Star  | English
Ishraque Hossain demands resignation of Asif Mahmud and Mahfuj Alam

Ishraque calls for immediate resignation of Asif Mahmud, Mahfuj Alam

He announced the sit-in protest would continue until demands were met

1h ago