‘বছরে ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ তামাক’
ধূমপানসহ তামাক ব্যবহারের কারণে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৭০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু হচ্ছে। গতকাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এই তথ্য প্রকাশ করেছে। সেই সাথে তামাকের উৎপাদন, বিপণন ও তামাক থেকে উৎপন্ন বর্জ্যের পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাবের ব্যাপারেও সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আরো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে সারা পৃথিবীর দেশগুলোর প্রতি আহ্বানের পাশাপাশি তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে সিগারেটের দাম বাড়ানো ও এর বিপণনকে আইন করে নিষিদ্ধ করতে বলছে জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থাটি। সেই সাথে বদ্ধ পাবলিক প্লেস ও কর্মক্ষেত্রে ধূমপান নিষিদ্ধ করার পক্ষে তারা মত দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে হু’র প্রধান মার্গারেট চ্যান এক বিবৃতিতে বলেন, “ধূমপান আমাদের সবার জন্য হুমকি।” দারিদ্র দীর্ঘায়িত হওয়া, উৎপাদনশীলতা কমে যাওয়া, নিম্নমানের খাবার গ্রহণে ও ঘরের ভেতর বায়ুদূষণের জন্যও ধূমপানকে দায়ী করেছেন তিনি।
৩১ মে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের আগে প্রকাশিত এক রিপোর্টে হু বলছে, এক শতাব্দীর ব্যবধানে তামাক ৪০ লাখ থেকে বেড়ে ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণে পরিণত হয়েছে যা একই সাথে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ।
এখনেই থেমে নেই তামাকের অপকারী প্রভাব। তামাকের ব্যবহারজনিত মৃত্যুর সংখ্যা এখনো বেড়েই চলেছে। হু’র আশঙ্কা এভাবে চলতে থাকলে এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ ১০০ কোটি মানুষের অকাল মৃত্যুর কারণ হবে এটি।
উন্নত বিশ্বের তুলনায় উন্নয়নশীল দেশগুলো অধিক মাত্রায় তামাকজনিত স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। উন্নত দেশগুলোতে আইনের কঠোর প্রয়োগের কারণে হারানো বাজার ফিরে পেতে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বাজার সম্প্রসারণে মনোযোগ দিচ্ছে তামাক কোম্পানিগুলো। হু’র গবেষণা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী তামাকজনিত মৃত্যুর ৮০ শতাংশই ঘটবে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে।
তামাক শুধু জনস্বাস্থ্যে সমস্যা করছে তা নয়। এর অর্থনৈতিক ক্ষতির দিকটিও বিশাল। তামাক ব্যবহারের ফলে মানুষের উৎপাদনশীলতা কমে যাচ্ছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী দুই শতাংশ উৎপাদন কম হচ্ছে। সেই সাথে ধূমপানের জন্য অর্থ সংস্থান ও এর ফলে তৈরি রোগের চিকিৎসা করতে সরকারগুলোকে বাড়তি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। এই সবগুলো ক্ষতির আর্থিক দিক বিবেচনা করলে তা ১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ দাঁড়ায়।
Comments