আবারও হুমকিতে আফগান ঐতিহ্য

ষষ্ঠ শতাব্দীর নিদর্শন বামিয়ান বুদ্ধ ধ্বংসের আগে ও পরে। ছবি: সংগৃহীত

আফগানিস্তানের হাজার বছরের সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন। আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের উত্তরসূরিদের বিভিন্ন নিদর্শন ও প্রাচীন বৌদ্ধ বিহারসহ নানা ঐতিহ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে দেশটিতে। ২ হাজার ৬০০ এর বেশি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান, অসংখ্য আঞ্চলিক জাদুঘর, গ্যালারি ও কাবুলে অবস্থিত জাতীয় জাদুঘরে এসব ঐতিহাসিক নিদর্শন সংরক্ষিত আছে।

গৃহযুদ্ধসহ নানা কারণে আগেই আফগানিস্তানের অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন ধ্বংস বা বেহাত হয়ে যায়। তার ওপর শেষবার ক্ষমতায় থাকাকালে পরিকল্পিতভাবে দেশটির নানা ঐতিহাসিক নিদর্শন ধ্বংস করে দেয় তালেবান। কোনোমতে টিকে থাকা নিদর্শনগুলো এ দফায় তাদের হাত থেকে রক্ষা পায় কিনা, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালে তালেবান প্রায় সব ধরনের শিল্পকর্ম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। পরিকল্পিতভাবে লাইব্রেরি ও জাদুঘর লুটপাট ও ধ্বংস করে। এসব বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের ওপর নিপীড়নও চালায় তারা।

তবে তালেবানরা আফগান ঐতিহ্যের ওপর সবচেয়ে বড় আঘাতটি হানে ক্ষমতায় থাকার শেষ বছরে। ওই সময় ষষ্ঠ শতাব্দীর বামিয়ান বুদ্ধ ধ্বংস করে দেয় তারা। জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত ঐতিহাসিক নিদর্শনও ধ্বংস করে দেওয়া হয়। যদিও তালেবান সংস্কৃতিমন্ত্রী এগুলো সুরক্ষিত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

চলতি বছর ক্ষমতা দখলের পর এবারও আফগানিস্তানের ঐতিহ্য রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তালেবান। তালেবান যোদ্ধাদের ঐতিহাসিক স্থান রক্ষা ও সংরক্ষণ, প্রত্নতাত্ত্বিক লুণ্ঠন বন্ধ এবং কালোবাজারে পুরাকীর্তি বিক্রি নিষিদ্ধ করার নির্দেশনা দিয়ে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। লুটপাট ঠেকাতে জাতীয় জাদুঘরে প্রহরী মোতায়েন করা হয়েছে।

তবে এসব প্রাথমিক উদ্যোগ কোনো সুদূরপ্রসারী কৌশলের অংশ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা, যেই কৌশলে হয়তো আফগানিস্তানের ইতিহাস-ঐতিহ্য আবারও জিম্মি হয়ে পড়বে। তালেবানের ভয়ে এরিমধ্যে আফগানিস্তানের জাতীয় ঐতিহ্য রক্ষার দায়িত্বে থাকা প্রত্নতাত্ত্বিক ও কিউরেটরদের অনেকে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেছেন অথবা আত্মগোপনে আছেন। তারা না থাকলে ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো রক্ষা করার মতো কেউ থাকবে না।

কাবুল জাতীয় জাদুঘরের সুরক্ষা নিয়েও শঙ্কা আছে। ইরাক ও সিরিয়া যুদ্ধে কালোবাজারে শিল্পকর্ম বিক্রি করে তহবিল সংগ্রহ করেছে উগ্রবাদীরা। তালেবানও একই উদ্দেশ্যে জাদুঘরে লুটপাট চালাতে পারে বলে আশঙ্কা অনেকের।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh police lethal weapons stock

Bangladesh Police: Equipped to inflict heavy casualties

Police arms records show the brutal truth behind the July killings; the force bought 7 times more lethal weapons than non-lethal ones in 2021-23

12h ago