তেলেঙ্গানায় ‘অগ্নিপথ’ বিক্ষোভের ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ গ্রেপ্তার, দাবি পুলিশের

ভারতের সশস্ত্রবাহিনীর ‘অগ্নিপথ’ প্রতিরক্ষা নিয়োগ স্কিমের ভিত্তিতে জনবল সংগ্রহের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন অংশে বিক্ষোভ চলছে। আজ তেলেঙ্গানায় চলমান বিক্ষোভের ‘মূল পরিকল্পনাকারী’কে গ্রেপ্তারের দাবি করেছে পুলিশ।
পুলিশ গতকাল সাবেক সেনাসদস্য আভুলা সুব্বা রাওকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ গতকাল সাবেক সেনাসদস্য আভুলা সুব্বা রাওকে গ্রেপ্তার করে।ছবি: সংগৃহীত

ভারতের সশস্ত্রবাহিনীর 'অগ্নিপথ' প্রতিরক্ষা নিয়োগ স্কিমের ভিত্তিতে জনবল সংগ্রহের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন অংশে বিক্ষোভ চলছে। আজ তেলেঙ্গানায় চলমান বিক্ষোভের 'মূল পরিকল্পনাকারী' কে গ্রেপ্তারের দাবি করেছে পুলিশ।

আজ রোববার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, পুলিশ গতকাল সাবেক সেনাসদস্য আভুলা সুব্বা রাওকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, সুব্বা রাও তেলেঙ্গানা রাজ্যে সহিংসতার 'মূল পরিকল্পনাকারী'। তিনি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে বিক্ষোভকারীদের সংগঠিত করেন। গত শুক্রবার রাজ্যের সেকুন্দেরাবাদের অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় তার ভূমিকা আছে।

এ ছাড়াও, বিক্ষোভকারীরা সেখানে বেশ কয়েকটি ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত শুক্রবার বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ গুলি চালালে ওয়ারাঙ্গালের বাসিন্দা রাজেশ (১৯) নিহত ও আরও বেশ কয়েকজন আহত হন। বিক্ষোভকারীরা বেশ কয়েকটি যাত্রীবাহী ট্রেনে হামলা চালান, বেশ কয়েকটি কোচ জ্বালিয়ে দেন এবং সম্পত্তির ক্ষতি করেন।

এই সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ তেলেঙ্গানার আদোনি, কুর্নুল, গুন্তুর, নেল্লোর, আমাদালাভালাসা, বিশাখাপত্তম ও যালামানচিলি থেকে বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের প্রকাশম জেলার বাসিন্দা সুব্বা রাও গত কয়েক বছর ধরে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের জন্য প্রশিক্ষণ একাডেমি পরিচালনা করে আসছেন। হায়দ্রাবাদসহ কমপক্ষে ৭ শহরে এর শাখা আছে।

গত মঙ্গলবার ভারত সরকার সশস্ত্রবাহিনীতে নিয়োগের নতুন স্কিম 'অগ্নিপথ' ঘোষণার পর বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিক্ষোভ হয়। এতে ৪ বছরের চুক্তিতে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীতে নিয়োগের কথা বলা হয়েছে।

স্কিম অনুসারে, ১৭ বছর ৬ মাস বয়সী থেকে ২১ বছর বয়সী ব্যক্তিদের ৪ বছরের মেয়াদে সশস্ত্রবাহিনীতে নিয়োগ দেওয়া হবে। তাদেরকে ৩০ থেকে ৪০ হাজার রুপি মাসিক বেতনের পাশাপাশি ভাতা দেওয়া হবে। মেয়াদ শেষে ৭৫ শতাংশ সেনাকে বাধ্যতামূলক অবসরে যেতে হবে এবং তারা কোনো গ্র্যাচুইটি বা পেনশন পাবেন না।

তবে, ইতোমধ্যে আন্দোলনের কারণে সরকার কিছুটা ছাড় দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনে চাকরিতে যোগ দেওয়ার বয়সসীমা বাড়ানো হয়। করোনা মহামারির কারণে ২ বছর নষ্ট হওয়ার যুক্তিতে 'অগ্নিপথ'-এ যোগ দেওয়ার সর্বোচ্চ বয়সসীমা ২১ থেকে বাড়িয়ে ২৩ করা হয়।

এ ছাড়াও, ৪ বছরের মেয়াদ শেষে অন্যান্য সরকারি বাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য বর্ধিত সুযোগের কথাও জানানো হয়েছে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গণমাধ্যমকে জানান, কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী (সিএপিএফ) ও অসম রাইফেলসের নিয়োগে এ প্রকল্পে অবসর নিতে বাধ্য ব্যক্তিদের (অগ্নিবীর) জন্য ১০ শতাংশ নিযুক্তি সংরক্ষিত থাকবে।

এ ছাড়াও, কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং জানান, উপকূলরক্ষী বাহিনীতেও 'অগ্নিবীর'দের জন্য ১০ শতাংশ আসন রাখা হবে।

Comments