গুম-বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড তদন্তে নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের দাবি আসক’র

শুক্রবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে রাজধানীর আসাদ গেইট এলাকায় আসকের মানববন্ধন। ছবি: সংগৃহীত

এ পর্যন্ত দেশে সংঘটিত সব গুম, অপহরণ ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তদন্তে নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করে ন্যায়বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।

আজ শুক্রবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে রাজধানীর আসাদ গেইট এলাকায় মানববন্ধনের আয়োজন করে আসক। মানববন্ধনে সরকারের কাছে এ দাবিসহ আরও বেশ কয়েকটি দাবি তোলা হয়।

আসক জানায়, গত ১ বছরে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, অন্যান্য বছরের মতোই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতন, মত প্রকাশ ও মুক্ত চিন্তার ওপর আঘাত, নারী ও শিশু নির্যাতন, হত্যা ও ধর্ষণসহ নানা মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অব্যাহত আছে।

নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হওয়া, ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে নানা সীমাবদ্ধতা, বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা, দুর্নীতি মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিকার পাওয়ার ক্ষেত্র কমিয়ে দিচ্ছে অভিযোগ করে সংস্থাটি।

এ অবস্থায় আজ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে জনগণের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে কয়েকটি দাবি উপস্থাপন করে আসক।

সেগুলো হলো-রাষ্ট্রীয় বাহিনীর যে কোনো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা, যেমন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এখতিয়ার বহির্ভূত আচরণ ইত্যাদির অভিযোগ দ্রুততার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করা এবং সম্পৃক্তদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় শাস্তি দেওয়া।

এ পর্যন্ত হওয়া সব গুম, অপহরণ ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তদন্তে নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে আটক বা গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মেনে চলা ও ব্যত্যয় হলে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা।

নাগরিকদের মত প্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার ও মৌলিক মানবাধিকার যেন খর্ব না হয় তা নিশ্চিত করার দাবিও জানানো হয়েছে।

এছাড়া, গণমাধ্যম ও নাগরিকদের মত প্রকাশের অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা এবং সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত এ আইনে মামলা গ্রহণ না করার নির্দেশনা দেওয়া, নাগরিকের সমবেত হওয়ার অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা এবং কোনোভাবেই এ অধিকার লঙ্ঘন করে শান্তিপূর্ণভাবে সমবেত জনগোষ্ঠীর ওপর বল প্রয়োগ না করা, নারীর সমানাধিকার নিশ্চিতে বৈষম্যমূলক আইনগুলোতে পরিবর্তন আনা এবং নারীর অধিকার সম্পর্কে সর্বস্তরের জনগণকে সচেতন করে তোলার দাবি জানায় আসক।

নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে এবং প্রতিকার বিধানে 'ভুক্তভোগী ও সাক্ষী সুরক্ষা আইন' প্রণয়ন করা, সাক্ষ্য আইনের ১৫৫(৪) ও ১৪৬(৩) ধারা বাতিল করা। প্রস্তাবিত 'ক্রাইম ভিকটিম কম্পেনসেশন অ্যাক্ট'কে আইনে পরিণত করা, ধর্ষণের ঘটনায় উচ্চ আদালতের ১৮ দফা নির্দেশনা মেনে চলা এবং আইন ও বিচারিক কাঠামোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জেন্ডার সংবেদনশীল করে তোলা,
ধর্মীয় উত্তেজনা তৈরি করে কোনো সহিংসতার ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য পর্যাপ্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়াসহ জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯ সংশোধন, পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন, নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সংবিধান অনুযায়ী আইন প্রণয়নের দাবিও জানিয়েছে সংস্থাটি।

Comments

The Daily Star  | English

Cops get whole set of new uniforms

The rules were published through a gazette yesterday, repealing the previous dress code of 2004

2h ago