আসামির স্বজনদের সঙ্গে ঘুষ নিয়ে ফোনালাপ ফাঁস, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি প্রত্যাহার

ঘুষ নিয়ে হত্যা মামলার ২ আসামির নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে আসামির স্বজনদের কাছ থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তৌহিদুজ্জামানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত

ঘুষ নিয়ে হত্যা মামলার ২ আসামির নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে আসামির স্বজনদের কাছ থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তৌহিদুজ্জামানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কিছু ফোনালাপ ফাঁসের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে আজ বুধবার দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, 'ওসি তৌহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে এ রকম একটা অভিযোগ আমরা পত্র-পত্রিকায় দেখেছি। পরে গত রাতে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।'

'বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে,' বলেন তিনি।

তবে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা তৌহিদুজ্জামানের দাবি, 'ফোনালাপগুলো সত্য নয়। টেম্পারিং করা।'

আসামির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অভিযুক্ত ওসির ফোনালাপের কিছু অংশ দ্য ডেইলি স্টারের হাতে এসেছে।

ফাঁস হওয়া কথোপকথনে এক আসামির ছেলের কথা অনুযায়ী, অভিযুক্ত ওসি তৌহিদুজ্জামান আসামিপক্ষের কাছ থেকে ৭ লাখের বেশি টাকা নিয়েছিলেন চার্জশিট থেকে ২ আসামির নাম বাদ দিতে।

কিন্তু পরে তাদের অভিযুক্ত করে চার্জশিট জমা দেন তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা তৌহিদুজ্জামান। পরে আসামি পক্ষের লোকজন সেই টাকা ফেরত চান।

গত বছর ১০ এপ্রিল গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানার বাড়ি থেকে জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলীর (৪৫) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় মাসুদ রানাকে।

এ ঘটনার পর ব্যবসায়ী হাসান আলীর স্ত্রী বীথি বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার আসামি করা হয়েছিল মাসুদ রানা, মো. রোমিন হক (৩৮) ও খলিলুর রহমান বাবুকে (৪৮)।

আসামি রোমিন হক ও খলিলুর রহমান বাবুর পরিবারের লোকজনের কাছে থেকে ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে ২ দিন আগে কিছু ফোনালাপ ফাঁস হয়। এতে শোনা যায়, ওসি তৌহিদুজ্জামানের সঙ্গে আসামির স্বজনরা টাকা ফেরতের  বিষয়ে কথা বলছেন।

ওসি তৌহিদুজ্জামান ওই সময় গাইবান্ধা ডিবি পুলিশের দায়িত্বে ছিলেন এবং পরে তিনি এই মামলার তদন্তভার পান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ওসি তৌহিদুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি কোনো আসামির কাছ থেকে টাকা-পয়সা নিইনি। ফোন রেকর্ডগুলো বানানো এবং টেম্পারিং করা। আমার নাম করে একটি পত্রিকার সাংবাদিক আসামি পক্ষের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা নিয়েছেন এবং আমাকে চাপ দিয়েছেন চার্জশিট থেকে ২ আসামির নাম বাদ দেওয়ার জন্য। কিন্তু আমি জড়িতদের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছি।'

ফোনে কথোপকথনে ওসির সঙ্গে আলাপরত আসামির ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ফোনে সব ঘটনা বলতে পারবেন না।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus holds brief meeting with Malaysian PM at Dhaka airport

Following the meeting, they boarded the same car to travel to the bilateral venue

2h ago