কী হবে মোরসালিনের ২ সন্তানের?
ছোট দুটি সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে গোছানো সংসার ছিল মোরসালিনের (২৭)। টানাপোড়েন থাকলেও সংসারে সুখের কমতি ছিল না। বাবাকে হারিয়ে এখন বাচ্চা দুটোর কী হবে?
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন নিউমার্কেটে ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত দোকান কর্মচারী মোরসালিনের বড় ভাই নূর মোহাম্মদ।
আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা ৩৬ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোরসালিন মারা যান।
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার কানাইনগর গ্রামের মৃত মানিক মিয়ার ছেলে মোরসালিন স্ত্রী ও ২ সন্তান নিয়ে কামরাঙ্গীরচর পশ্চিম রসুলপুরে ভাড়া থাকতেন।
মোরসালিনের মেয়ে হুমায়রা ইসলাম লামহার বয়স ৭ বছর আর ছেলে আমির হামজার বয়স ৪ বছর। পরিবারে ২ ভাই এক বোনের মধ্যে মোরসালিন ছিলেন দ্বিতীয়।
মোরসালিন নিউ সুপার মার্কেটে একটি শার্টের দোকানে কাজ করতেন।
আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে মোরসালিনের বড়ভাই নূর মোহাম্মদের সঙ্গে দ্য ডেইলি স্টারের কথা হয়। ছোট ভাইয়ের মরদেহের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি।
নূর মোহাম্মদ কাঁদতে কাঁদতে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বড় ভাইয়ের কাঁধে ছোট ভাইয়ের লাশ! এর চেয়ে কষ্টের আর কী হতে পারে। কী দোষ ছিল আমার ভাইয়ের। ওরা তাকে মেরেই ফেললো।'
মোরসালিনের ২ সন্তানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'কী হবে এই মাসুম ২ বাচ্চার। আমি কী জবাব দেব তাদের। বাচ্চা ২টি তাদের বাবাকে ছাড়া এখন কেমন করে বড় হবে? কে নেবে তাদের দায়িত্ব? চিরদিনের জন্য আর বাবা ডাকতে পারবে না তারা।'
নূর মোহাম্মদ বলেন, 'আমার ভাই রোজা ছিল। যোহরের নামাজের জন্য মসজিদে যাচ্ছিল বলে জানতে পেরেছি। এমন সময় তার মাথায় ইট লাগে।'
গত মঙ্গলবার সংঘর্ষের সময় নুরজাহান মার্কেটের সামনে থেকে এক দোকান কর্মচারী শাকিল আহত অবস্থায় মোরসালিনকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যান। শাকিল গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন সংঘর্ষের সময় নুরজাহান মার্কেটের সামনের রাস্তায় মোরসালিনের মাথায় ইটের আঘাত লেগেছিল।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত ডেলিভারিম্যান নাহিদ হোসেন (১৮) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
Comments