জনপ্রিয়তার কারণে মুহিব উল্লাহকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা: পুলিশ

জনপ্রিয়তার কারণে রোহিঙ্গা নেতা মুহিব উল্লাহকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় গঠিত পুলিশের তদন্তকারী দল বলছেন, হামলাকারীরা মুহিব উল্লাহর পরিচিত। খুব সহজেই তারা তার অফিসে প্রবেশ করে তাকে গুলি করে।
কক্সবাজার এপিবিএন-১৪ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) নাইমুল হক আজ বৃহস্পতিবার দ্য ডেইলি স্টারকে এ সব তথ্য জানান।
গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে অজ্ঞাত হামলাকারীরা কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) কার্যালয়ে প্রবেশ করে মুহিব উল্লাহকে গুলি করে। এতে আরএসপিএইচ চেয়ারম্যান ৪০ বছর বয়সী মুহিব উল্লাহ নিহত হন।
এ ঘটনায় পুলিশ ও ক্যাম্পের নিরাপত্তায় দায়িত্বে থাকা এপিবিএন নিয়ে তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে।

তদন্তকারীরা জানান, বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে জোরালো অবস্থানের কারণে রোহিঙ্গাদের কাছে মুহিব উল্লাহ ছিলেন খুবই জনপ্রিয়। তার নেতৃত্বের জন্য রোহিঙ্গাদের অপর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতন ও নিপীড়নের বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছিল।
এপিবিএন কর্মকর্তা নাইমুল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা অন্তর্দলীয় বিরোধসহ বেশ কয়েকটি সূত্র নিয়ে কাজ করছি।'
তিনি বলেন, 'আমরা সন্দেহ করছি যে যারা রোহিঙ্গা নেতৃত্ব দখলের চেষ্টা করছিল, তারাই মুহিব উল্লাহকে হত্যার চক্রান্ত করেছিল। তার সঙ্গে যাদের মতাদর্শের বিরোধ আছে, তারা তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করতে পারে।'
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, হত্যাকারীরা মুখোশ দিয়ে মুখ ঢেকে মুহিব উল্লাহর কার্যালয়ে প্রবেশ করে এবং তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
সিও নাইমুল বলেন, 'আমরা সন্দেহ করছি যে মুহিব উল্লাহর পরিচিত কেউই হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছে। কারণ সেখানে কোনো হাতাহাতি হয়নি। মুহিব উল্লাহ অফিসের সামনে গার্ডও ছিল। মুহিব উল্লাহ তখন নামাজের পর তার কার্যালয়ে নিজেদের লোকদের সঙ্গে বসেছিলেন।'
'যদি বাইরের কেউ আসতো, মুহিব উল্লাহর লোকেরা অবশ্যই তাদের বাঁধা দিত। এটি একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কারণ, তারা মুহিব উল্লাহকে নিবিড়ভাবে খেয়াল রাখছিল,' নাইমুল বলেন।
তিনি বলেন, 'আমরা বেশ কয়েকটি গুলি উদ্ধার করেছি এবং ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য তা জব্দ করেছি।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কক্সবাজারের জেলা পুলিশের একজন পরিদর্শক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অপরাধীরা হত্যাকাণ্ডে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবহার করেছে।'
এদিকে কুতুপালং ক্যাম্পে উত্তেজনা বিরাজ করায় আরও সহিংসতা এড়াতে কক্সবাজারের সবগুলো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সতর্কতা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ। কুতুপালং এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
Comments