টিপু হত্যার নিয়ন্ত্রণ দুবাই থেকে, ১৫ লাখ টাকায় চুক্তি: র্যাব
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঢাকার শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে খুন করা হয় বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাবের ভাষ্য, এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক (৫২)। হত্যাকাণ্ডটি দেশে সংঘঠিত হলেও তা নিয়ন্ত্রণ করা হয় দুবাই থেকে। এর জন্য যে ১৫ লাখ টাকার চুক্তি হয়, তার বেশিরভাগের যোগান দেন ওমর ফারুক।
ওমর ফারুকসহ আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও ৩ জনকে গ্রেপ্তারে পর আজ শনিবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে র্যাবের মুখপাত্র খন্দকার আল-মঈন বলেন, 'গ্রেপ্তার ৪ জন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় সম্পৃক্ততা সম্পর্কে তথ্য দিয়েছে। দীর্ঘদিন যাবৎ মতিঝিল এলাকার চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, স্কুল-কলেজের ভর্তি বাণিজ্য, বাজার নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে টিপু ও হত্যার পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে বিরোধ বিদ্যমান ছিল।'
ওমর ফারুক ছাড়া র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার অন্য ৩ জন হলেন- আবু সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ (৩৮), নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির (৩৮) এবং মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশ (৫১)।
র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে রাজধানীর মুগদা, শাহজাহানপুর ও মিরপুর এলাকা থেকে। তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডের সময় নজরদারির কাজে ব্যবহার করা মোটর সাইকেল ও হত্যার জন্য দেওয়া ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডটি দেশে সংঘঠিত হলেও দুবাই থেকে তা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে দাবি করে র্যাবের মুখমাত্র বলেন, 'দেশ থেকে কিলার নাছির, কাইল্লা পলাশসহ আরও কয়েকজন জাহিদুল ইসলাম টিপুর অবস্থান সম্পর্কে বেশ কয়েকদিন যাবত মুসার কাছে তথ্য পাঠাত। ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর কিলার নাছির আনুমানিক চারবার জাহিদুল ইসলাম টিপুর অবস্থান সম্পর্কে মুসাকে অবহিত করে।'
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে মঈন আরও বলেন, 'গ্রেপ্তারকৃত ওমর ফারুকের সঙ্গে বর্ণিত হত্যাকান্ডের জন্য ১৫ লাখ টাকার চুক্তি হয়। ওই ১৫ লাখ টাকার মধ্যে ওমর ফারুক ৯ লাখ এবং বাকি অর্থ মো. নাছির উদ্দিন, আবু সালেহ শিকদার, ও মুসা প্রদান করে।'
তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডের আগে মুসা দুবাই চলে যান। দেশ থেকে নাছির উদ্দিন, মোরশেদুল আলমসহ আরও কয়েকজন টিপুর অবস্থান সম্পর্কে মুসার কাছে তথ্য প্রেরণ করত।
গত ২৪ মার্চ রাতে শাহজাহানপুরের আমতলী এলাকায় হেলমেটধারী আততায়ীর গুলিতে নিহত হন টিপু। (৫৪)। ওই সময় গাড়ির কাছেই রিকশায় থাকা বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সামিয়া আফনান প্রীতিও গুলিতে নিহত হন। আহত হন টিপুর গাড়ি চালক মুন্না।
Comments