পিকে হালদার ভারতে গ্রেপ্তার

বহুল আলোচিত রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পিকে হালদারকে ভারত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বহুল আলোচিত রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পিকে হালদারকে ভারত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

কলকাতায় বাংলাদেশ উপদূতাবাস সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আজ শনিবার দুপুরে পশ্চিমবঙ্গের অশোকনগর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পিকে হালদারের সঙ্গে তার আইনজীবী সুকুমারকেও গ্রেপ্তার করেছে ভারতের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। 

ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছে, তারা ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে পিকে হালদারসহ ৩ জন বাংলাদেশি।

অবৈধ ক্যাসিনো মালিকদের সম্পদের তদন্ত শুরুর পরে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং বিদেশে পাচারের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে দুদক মামলা দায়ের করে।

পিকে হালদার ২০০৮ সালে আইআইডিএফসির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। ২০১৫ সালের জুলাই মাসে তিনি এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হন। তাকে গ্রেপ্তার করতে রেড অ্যালার্ট ঘোষণা করে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোল।

২০১৯ সালে দেশে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় পিকে হালদার স্পটলাইটে আসেন।

তিনি এবং তার সহযোগীরা ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান- পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেড, এফএএস ফাইন্যান্স এবং রিলায়েন্স ফাইন্যান্স থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।

এই ৪টি প্রতিষ্ঠান তখন থেকে ভয়াবহ সংকটে আছে এবং এদের মধ্যে পিএলএফএস এখন লিকুইডেশনের প্রক্রিয়ায় আছে।

এই ৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে জমা দেওয়া তহবিল পুনরুদ্ধার করতে বেশ কয়েকটি ব্যাংক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।

দুদকের একজন তদন্তকারী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে তারা হালদারকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানতে পেরেছেন। তারা শিগগির পিকে হালদারের বিরুদ্ধে ৩টি মামলার চার্জশিট দেবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, 'হালদারের স্যালারি অ্যাকাউন্টে প্রায় ২২৫ কোটি টাকা পাওয়া যায়। তিনি ঋণ জালিয়াতির সুবিধার্থে কমিশন হিসেবে এই অর্থ নিয়েছিলেন।'

পিকে হালদার চারটি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এমন কৌশলে পরিচালনা করেছেন যে, হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার আগে কেউ কিছু সন্দেহ করতে পারেননি।

হালদার তার লোকদের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষে বসান। যেন তিনি সহজেই তাদের কাছ থেকে ঋণ নিতে পারেন এবং তহবিলের অপব্যবহার করতে পারেন।

হালদারের প্রতারিত ৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের (পিএলএফএস) চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য জানা যায়।

পিকে হালদার এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৩৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এখন পর্যন্ত পিকে হালদারের সঙ্গে সম্পর্কিত ৮৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে এবং প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

এছাড়া, পিকে হালদারসহ ৬৪ জন অভিযুক্তকে বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং ১১ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Tanzim Hasan Sakib is the victim of a sexist culture

Tanzim – who said in a post that men marrying women who are used to “free-mixing at addas” would be depriving their children of a “modest” mother – is a victim of the toxic masculinity prevalent in his surroundings.

2h ago