যেভাবে আকাশকে শনাক্ত করেন পুলিশ অফিসার খোরশেদ

শুটার মাসুমকে শনাক্ত করতে একাই খাজা বোর্ডিংয়ে যান এসআই খোরশেদ আলম (ডানে)। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার শাহজাহানপুরে গুলিতে নিহত আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু এবং কলেজ শিক্ষার্থী সামিয়া আফরান প্রীতির হত্যাকারী শুটার মাসুম ওরফে আকাশকে বগুড়া থেকে গত ২৬ মার্চ সকালে গ্রেপ্তার করে বগুড়া সদর থানার একটি দল। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে আকাশকে প্রথমে শনাক্ত করেন বগুড়া সদর পুলিশ ফাঁড়ির একজন নিরস্ত্র কর্মকর্তা এসআই খোরশেদ আলম (রবি)।

কোনো বাহিনী এবং অস্ত্র ছাড়াই এই অভিযান শুরু করেন পুলিশের উপপরিদর্শক খোরশেদ আলম। তিনি কীভাবে আকাশকে শনাক্ত করেন সেই ঘটনার বর্ণনা করেছেন দ্য ডেইলি স্টারের বগুড়া প্রতিনিধির কাছে।

খোরশেদ আলম বলেন, 'ঘটনার পরেই আকাশ গত ২৫ মার্চ মামুন পরিচয়ে বগুড়ার চারমাথা এলাকার একটি অপ্রচলিত হোটেল খাজা বোর্ডিংয়ে ওঠেন। ২৬ তারিখ সকালে ঢাকার ডিবি পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আকাশের অবস্থান বগুড়ার সাতমাথা এলাকায় বলে জানান। কিন্তু, আমার সোর্স জানান এই ধরনের কেউ সাতমাথা এলাকায় নেই। পরে চারমাথা এলাকার সোর্সরা হোটেল খাজা বোর্ডিংয়ের কথা বলেন।'

কীভাবে খাজা বোর্ডিংয়ে তাকে ধরা হয় তা বর্ণনা করে তিনি বলেন, 'এরপর আমি প্রথমে একা বাইক নিয়ে সেই খাজা বোর্ডিংয়ে যাই। সেখানের ম্যানেজারের কাছে জানতে চাই, ঢাকা থেকে আসা আকাশ নামের কোনো গেস্ট আছে কিনা। ম্যানেজার বলেন, ঢাকা থেকে একজন গেস্ট গত ২৫ তারিখ রাত থেকে ৬ নং রুমে আছেন। তবে, তার নাম মামুন। এরপর আমার সন্দেহ মোটামুটি পরিষ্কার হয় এবং সদর থানা থেকে ৮ জনের একটি টিম ডেকে নেই। সেই অভিযানে অংশ নেন বগুড়া সদর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক তাজমিলুর রহমান এবং উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক জিল্লুর রহমান।'

এসআই খোরশেদ আলম বলেন, 'সকাল ৭টায় হোটেলের সব রুম বাইরে থেকে লক করা হয়। এরপর প্রতি রুমে তল্লাশি চালানো হয়। ৬ নং রুমের ঢাকার সেই গেস্টর ছবির সঙ্গে শুটার মাসুম ওরফে আকাশের ছবি মিলে গেলে মোবাইলে তার ছবি তুলে ডিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়। পরে সেই ডিবি কর্মকর্তা নিশ্চিত করেন, ছবিটি শুটার আকাশের। শুটার আকাশকে ধরার পর তার সঙ্গে কোনো অস্ত্র আছে কিনা জানতে রুমে চিরুনি তল্লাশি চালানো হয়। কিন্তু, কোথাও কোনো অস্ত্র পাওয়া যায়নি। পরে তাকে সদর পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়।'

'এরপর দুপুর ২টায় ঢাকা থেকে ডিবি পুলিশের একটি দল বগুড়া এসে শুটারকে নিয়ে যায়। এ সময় আকাশকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে অকপটে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। তিনি যে একাধিক মামলার আসামি সে কথাও স্বীকার করেন। সেই দিনের ব্যবহৃত অস্ত্র তিনি ঢাকায় লুকিয়ে রেখেছেন বলে আমাদের জানান,' যোগ করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

এই বিষয়ে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শুটার আকাশকে ধরার মূল অভিযান পরিচালনা করে ঢাকার ডিবি পুলিশ। তাদের দেওয়া তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করে তাকে বগুড়া থেকে ধরা হয়। তিনি ভারতে যাওয়ার জন্য প্রথমে জয়পুরহাট যান। ভারতে না যেতে পেরে বগুড়ার খাঁজা হোটেলে এসে ওঠেন। আকাশকে গ্রেপ্তারে সদর ফাঁড়ির উপপরিদর্শক খোরশেদ আলম, ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক তাজমিলুর রহমান এবং উপশহর ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক জিল্লুর রহমানকে পাঠানো হয়।'

Comments

The Daily Star  | English

Over 48,400 arrested in one month

Police have arrested over 48,400 people across the country over the last one month, according to data from the Police Headquarters.

11h ago